সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জোসেফ ব্রজ টিটোর সেই স্বপ্নের যুগোস্লাভিয়া আর নেই। নয়ের দশকে ভেঙে খান খান হয়ে যায় স্লাভ দেশটি। তবে রাষ্ট্রভঙ্গের সেই রক্তাক্ত সংঘাতের রেশ এখনও রয়ে গিয়েছে। মাঝেমধ্যেই তা দাবানলের আকার নেয়। এবার কসোভোয় বসবাসকারী সংখ্যালঘু সার্বদের উপর নির্যাতনের অভিযোগ এনে যুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু করেছে সার্বিয়া।
রয়টার্স সূত্রে খবর, সেনাবাহিনীকে হাই-অ্যালার্টে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আলেকজান্দার ভুসিচ। শুধু তাই নয়, কসোভো সীমান্তে বিরাট সংখ্যক সেনা পাঠিয়েছেন তিনি। মুহুর্তের নোটিসে হামলা চালাতে সক্ষম সেই বাহিনী বলে খবর। শুক্রবার সার্বিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী মাইলোস ভুসেভিচ বলেন, “আমাদের সেনাবাহিনী যুদ্ধ প্রস্তুতির সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। কসোভো সীমান্তে সেনাদল পাঠানো হয়েছে। এটা স্পষ্ট যে কসোভোয় প্রবল সন্ত্রাসের মুখে পড়েছেন সার্ব বাসিন্দারা।”
সার্ব বিক্ষোভ এবং বেলগ্রেডের সেনা তৎপরতায় কসোভোয় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। অভ্যন্তরীণ শান্তি বিঘ্নিত হওয়া এবং পড়শি দেশের সম্ভাব্য হামলা- এই জোড়া আশঙ্কার মুখে পড়েছেন কসোভোর প্রেসিডেন্ট ভিয়োসা ওসমানি। তবে সমস্ত পরিস্থিতির জন্যই তারা তৈরি বলে জানিয়েছে প্রিস্টিনা।
ইউরোপের ক্ষুদ্র দেশ কসোভোর জনসংখ্যা মাত্র ১৮ লক্ষ্য। নাগরিকদের প্রায় নব্বই শতাংশই আলবানিয়ান মুসলিম। পাঁচ শতাংশ খ্রিস্টান সার্ব। তাদের অভিযোগ, সংখ্যাগুরুদের দখলে রয়েছে প্রশাসন। তাই সংখ্যালঘুদের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি, কসোভোর সার্ব অধ্যুষিত জেকান শহরের মেয়র নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বারুদে আগুন লেগেছে। নির্বাচনে জয়ী আলবানিয়ান প্রার্থীকে অফিসে ঢুকতে দিতে নারাজ সার্ব বাসিন্দারা। তা নিয়েই পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে প্রতিবাদীদের।
বলে রাখা ভাল, ২০০৮ সালে সার্বিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে স্বাধীনতা ঘোষণা করে কসোভো (Kosovo)। আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলি কসোভোকে স্বীকৃতি দিলেও তা মেনে নেয়নি সার্বিয়া। ফলে বলকান অঞ্চলে সংঘাতের বারুদ মজুত ছিলই। বিগত দেড় দশক থেকে কসোভোয় আমেরিকা ও ইউরোপের মিলিত শান্তিরক্ষা বাহিনী মজুত রয়েছে।
এদিকে, এই গোটা ঘটনার উপর কড়া নজর রাখছে ভারত। কসোভোকে এখনও স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেয়নি দিল্লি। কূটনীতির সূত্র মেনে, রাশিয়ার বন্ধু সার্বিয়াকে চটাতে চায় না ভারত। একইসঙ্গে, কসোভোর বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মদত দিয়ে কাশ্মীর ইস্যুতে ইন্ধন জোগাতে নারাজ নয়াদিল্লি। তবে, ইউক্রেনের পর কসোভোয় যুদ্ধ শুরু পলে আমেরিকা ও পশ্চিমের চাপের মুখে পড়তে হতে পারে মোদি সরকারকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.