Advertisement
Advertisement

‘বাঁচতে চাই, ওরা আমায় মেরে ফেলবে’! বাড়ি থেকে পালিয়ে ব্যাংককে সৌদি তরুণী

আরব দেশের ধর্মীয় গোঁড়ামিতে তিতিবিরক্ত অষ্টাদশী।

Saudi woman flees to Thailand
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:January 8, 2019 4:43 pm
  • Updated:January 8, 2019 4:43 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘বাঁচতে চাই, ওরা আমায় মেরে ফেলবে। আমাকে বাঁচান।’ জীবনের প্রতি সৌদি তরুণীর এমন করুণ আরজি মন খারাপ করিয়ে দিয়েছে নেটিজেনদের। তরুণীর নাম রফ মহম্মদ আল কুনুন। মুক্ত হাওয়ায় বাঁচার জন্য পরিবার থেকে পালিয়ে পৌঁছন ব্যাংকক। অভিবাসন দপ্তরের আধিকারিকদের হাতে ধরা পড়ার পর তাঁকে জোর করে বাড়ি পাঠানোর তোড়জোড় হতেই সোশ্যাল মিডিয়ার সাহায্য নেন তিনি। টুইটারে একের পর এক ভিডিও পোস্ট করে সাহায্য আন্তর্জাতিক দেশগুলোর সাহায্য চেয়েছেন। জানিয়েছেন, বাড়ি ফিরলেই তাঁকে খুন করা হতে পারে। এই পরিণতি তাঁর কাম্য নয়।   

আরব দেশের ধর্মীয় গোঁড়ামিতে তিতিবিরক্ত হয়ে উঠেছে সদ্য আঠেরোয় পা দেওয়া মেয়েটি। বাড়ি থেকে বেরোতে হলে, কেন সঙ্গে পুরুষ অভিভাবক থাকবেন? এই প্রশ্ন তুলে পরিবারের বিরাগভাজন হয়েছে। এমনই সময়ে পরিবারের সঙ্গে কুয়েতে যাওয়ার সুযোগ কাজে লাগাল কুনুন। বাবা, মা’র চোখ এড়িয়ে উঠে পড়েন ব্যাংককের বিমানে। প্রথমে ভেবেছিলেন, অস্ট্রেলিয়া চলে যাবেন। কিন্তু সেই সময় ব্যাংককগামী বিমানের সময় থেকে দ্রুত পালানোর জন্য তাতেই চড়ে বসেন। সোমবার সূবর্ণভূমি বিমানবন্দরে নামার পরই বিপত্তি। কুনুন বুঝতে পারেন, তাঁকে নজরবন্দি করার চেষ্টা চলছে। ইতিমধ্যেই তাঁর খোঁজে ব্যাংকক পৌঁছে গিয়েছেন সৌদি অভিবাসন দপ্তরের এক আধিকারিক। বিমানবন্দর থেকে বেরোনোর সময় অভিবাসন কর্তাদের হাতে ধরা পড়েন কুনুন। তখনই তাঁকে দেশে ফেরত পাঠানোর তোড়জোড় শুরু হতে নিজের পরিস্থিতির কথা তাঁদের জানান, সাহায্যের আরজি করেন। বলেন, ‘বাড়ি ফিরলে আমাকে ওরা মেরে ফেলতে পারে। আমার জীবন বিপন্ন। দয়া করে আমাকে আশ্রয় দিন।’ টুইটারে সব ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন কুনুন। প্রথমে অভিবাসন কর্তাদের তরফে সাহায্য মেলেনি। কিন্তু সৌদি তরুণীর কাতর আরজিতে মন গলেছিল তাঁদেরও।

Advertisement

qunun2

                                          [আমেরিকাকে হুঁশিয়ারি দিয়ে চিন সফরে একনায়ক কিম]

বিমানবন্দর থেকে কুনুনকে নিয়ে যাওয়া হয় বিমানবন্দর লাগোয়া একটি হোটেলে। তাঁর মনে হয়, বন্দি করার চেষ্টা চলছে। কিন্তু তারপরই পরিস্থিতি কুনুনের অনুকূলে চলে যায়। রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার কমিশনের এক আধিকারিক তাঁর সঙ্গে দেখা করেন। সমস্যার কথা শোনেন। তাঁকে কুনুন জানিয়েছেন, ‘বাড়িতে আমার ওপর শারীরিক, মানসিক অত্যাচার চলে। পড়াশোনা করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। আমাকে একা কোথাও যেতে দেয় না। বাড়িটা একটা জেলখানার মতো হয়ে গিয়েছে। কিন্তু আমি জীবনকে ভালবাসি, ভালভাবে বাঁচতে চাই। ওরা আমাকে বাঁচতে দেবে না।’ এমন করুণ কাহিনী শোনার পর অভিবাসন কর্তাদের সঙ্গে কুনুনের হয়ে কথা বলেন রাষ্ট্রসংঘের ওই আধিকারিক। ঠিক হয়, ব্যাংকক থেকে তাঁকে জোর করে বাড়ি পাঠানো হবে না। আপাতত কুনুন ব্যাংককে রাষ্ট্রসংঘের আশ্রয় রয়েছেন। হয়তো এখান থেকেই নিজের মতো করে জীবনে বাঁচার দিশা খুঁজে পাবেন। হয়ত পর্দাপন্থী আরব সমাজের রক্তচক্ষুর সামনে দিয়েই হেঁটে যাবে মুক্ত দিগন্তের দিকে। বাঁধতে পারবে না কেউ। হয়তো সৌদি আরবের কিশোর প্রজন্মের কাছে এক অনুপ্রেরণার নাম হয়ে উঠবেন – আল কুনুন।    

 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement