সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সাংবাদিক জামাল খাশোগ্গি হত্যার মামলায় রায় দিল সৌদি আদালত। এবার ৮ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে শোনানো হল জেলের সাজা। কিন্তু সৌদি আরবের ‘ছায়াশাসক’ সর্বশক্তিমান যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমনের নির্দেশে বিচারের নামে প্রহসন চলেছে বলেই উঠছে অভিযোগ।
২০১৮ সালের ২ অক্টোবর ইস্তানবুলের সৌদি দূতাবাসে খুন হন সাংবাদিক জামাল খাশোগ্গি। দ্বিতীয়বার বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় নথি সংগ্রহ করতে সেখানে গিয়েছিলেন তিনি। সৌদি রাজ পরিবারের পাশাপাশি সে দেশের যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমনের (MBS) কড়া সমালোচক হিসেবে পরিচিত খাশোগ্গির খুনের পরেই সরব হয় তুরস্ক-সহ একাধিক দেশ। দীর্ঘদিন ধরে চলা মামলার শেষে সোমবার আটজন দোষীকে কারাদণ্ড দেয় রিযাধের একটি আদালত। দোষীদের মধ্যে পাঁচজনকে ২০ বছরের জেলের সাজা দেওয়া হয়। বাকিদের মধ্যে দু’জনকে ৭ ও একজনকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে বলে খবর। উল্লেখ্য, গত বছর এই খুনের ঘটনায় দোষী ৫ জনকে মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। একই সঙ্গে আরও ৩ অভিযুক্তের ২৪ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারক।
সৌদি যুবরাজ MBS-এর প্রবল সমালোচক বলে পরিচিত ছিলেন ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’-এর কলামিস্ট জামাল খাশোগ্গি। সৌদি রাজ পরিবার ও শাসনতন্ত্রের বিরুদ্ধে রীতিমতো আগুন ঝড়ত তাঁর কলম থেকে। অভিযোগ, সৌদি অন্দর মহলের গোপন খবর ফাঁস হওয়ার ভয়েই খাশোগ্গিকে হত্যা করা হয়েছে। এবং কুখ্যাত ঘাতক বাহিনী পাঠিয়েছিলেন স্বয়ং যুবরাজ সলমন। তাই বিচার শেষে সাজা ঘোষণা হলেও গোটাটাই প্রহসন বলে দাবি করেছেন নিহত সাংবাদিকের বান্ধবী হাতিস চেঙ্গিস। তাঁর বক্তব্য, “গোটা ঘটনা ধামাচাপা দিয়ে অপরাধীকে আড়াল করতেই বিচারের নামে প্রহসন করছে সৌদি প্রশাসন। কে জামালকে হত্যা করল? তাঁর দেহ কোথায়? এসব প্রশ্নের উত্তর এখনও পাওয়া যায়নি।”
তুরস্ক সরকারের তদন্তকারীদের দাবি, গুপ্ত ঘাতকের হাতে খুন হয়েছেন খাশোগ্গি। বড়সড় চেহারার ষাটোর্ধ্ব খাশোগ্গির দেহাংশ লোপাট করতে নাইট্রিক অ্যাসিড ও সালফিউরিক অ্যাসিডে চোবানো হয়েছিল। সেখানেই গলে মিশে যায় হাড়, মাংস সব কিছু। কিন্তু আল জাজিরা তাদের রিপোর্টে দাবি করেছে, খাশোগ্গির দেহাংশ দূতাবাসের হেঁশেলের গ্যাস ওভেনে (উনুনে) পুড়িয়ে ছাই করা হয়েছিল। তার সেই ছাই ম্যানহোলে ফেলে দেওয়া হয়। এভাবেই খাশোগ্গির অস্তিত্ব ও মৃতদেহ লোপাট করেছে সৌদি সরকার। সৌদি শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশেই খাশোগ্গিকে এরকম নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.