সংবাদ প্রতিদিব ডিজিটাল ডেস্ক: অতি আগ্রাসী হতে গিয়ে ক্রমে নিজের বিপদ ডেকে আনছে চিন (China)। শুনতে হাস্যকর লাগলেও, এবার রাশিয়ার ভ্লাদিভোস্টক শহর নিজেদের বলে দাবি করেছে বেজিং। স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টি যে মস্কো মোটেও ভাল চোখে দেখছে না, তা বলাই বাহুল্য।
শুক্রবার, অর্থাৎ ৩ জুলাই, ভ্লাদিভোস্টক শহরের ১৬০তম বর্ষপূর্তিতে চিনা মাইক্রোব্লগিং ওয়েবসাইট Weibo-তে অনুষ্ঠানের ভিডিও পোস্ট করে বেজিংয়ের রুশ দূতাবাস। আর তা নিয়ে আপত্তি তোলেন চিনা কূটনীতিকদের একাংশ। তাঁদের সমর্থন করেন চিনা সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবীরাও। চিনা কুটনীতিকদের বক্তব্য, ভ্লাদিভোস্টক শহরের আদি নাম ছিল ‘হাইশেনওয়াই’ (Haishenwai)। কুইং সাম্রাজ্যের আমলে এই শহরটি চিনের অংশ ছিল। তারপর, ইউরোপে শিল্প বিপ্লব ঘটায় শুরু হয় উপনিবেশ স্থাপনের লড়াই। ফলে বিশ্ব মানচিত্রে ঘটে যায় বড়সড় রদবদল। চিন দখল করতে লড়াই শুরু করে ব্রিটেন ও ফ্রান্স। দ্বিতীয় আফিম যুদ্ধে (Second Opium War) চিনের পরাজয়ের পর ১৮৬০ সালে ভ্লাদিভোস্টক শহর দখল করে রাশিয়া (Russia)।
এদিকে, রুশ দূতাবাসের ভিডিওটি নিয়ে চিনা সরকার নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যমের এক কর্মী শেন শিওয়েই বলেন, “১৮৬০ সালে ভ্লাদিভোস্টক শহরে সামরিক বন্দর তৈরি করে রাশিয়া। কিন্তু ওই শহরটি আসলে হাইশেনওয়াই। অসমান বেজিং চুক্তির ফলে চিনের ওই শহরটি হাতিয়ে নেয় রাশিয়া। তাই Weibo-তে অনুষ্ঠানের ভিডিও কাম্য নয়।”
উল্লেখ্য, এটা সর্বজনবিদিত যে বেজিংয়ের অনুমতি ছাড়া কোনও চিনা কূটনীতিক নিজের নাম পর্যন্ত বলেন না। সে ক্ষেত্রে ভ্লাদিভোস্টক নিয়ে বিতর্ক উসকে কী আদায় করত চাইছে চিন? বিশ্লেষকদের মতে, সম্প্রতি লাদাখ নিয়ে ভারতের সঙ্গে সংঘর্ষের আবহে নয়াদিল্লীকে অস্ত্র জোগান দিচ্ছে মস্কো। ফলে চিন্তা বেড়েছে লালফৌজের। তাই ‘হাইশেনওয়াই’ শহরের কথা তুলে মস্কোর উপর চাপ সৃষ্টি করতে চাইছে শি জিনপিঙ্গ প্রশাসন। তবে চিনের এই উদ্দেশ্য পূরণ হওয়ার নয়। কারণ, মস্কোর মসনদে রযেছে ন ভ্লাদিমির পুতিন। তাঁর সঙ্গে সংঘাতে যাওয়ার মতো সামর্থ্য বা সাহস কোনওটাই জিনপিং প্রশাসনের নেই। পাশাপাশি, চিনা উসকানি তে কান দিয়ে। কোনঅভাবেই ভারতের মতো বিশাল অস্ত্রের বাজার হাত ছাড়া করবে না রাশিয়া।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.