সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গুরুতর অসুস্থ রাশিয়ার বিরোধী নেতা আলেক্সেই নাভালনি। অত্যন্ত আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে সাইবেরিয়ার একটি হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের অন্যতম সমালোচক নাভালনির চায়ে বিষ মিশিয়ে তাঁকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁর মুখপাত্র কিরা ইয়ারমিশ।
ক্রেমলিনের প্রবল সমালোচক তথা পুতিন বিরোধী নাভালনির উপর এর আগেও বিষপ্রয়োগের চেষ্টা হয়েছে বলে অভিযোগ। ২০১১ সালে ‘Anti-Corruption Foundation’ নামের একটি দুর্নীতি বিরোধী সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন নাভালনি। রুশ প্রশাসনে ভয়ানক দুর্নীতি তথা প্রেসিডেন্ট পুতিনের স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে তদন্ত চালাচ্ছে তাঁর সংস্থাটি। ফলে বিরোধীদের অভিযোগ, স্বাভাবিকভাবেই শাসনতন্ত্রের নিশানায় রয়েছেন নাভালনি। বৃহস্পতিবার, বিরোধী নেতার মুখপাত্র কিরা ইয়ারমিশ টুইটারে লিখেছেন, সাইবেরিয়ার টমস্ক থেকে বিমানে মস্কো ফিরছিলেন নাভালনি। মাঝ আকাশেই আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। উপায় না দেখে ওমস্ক শহরে জরুরি অবতরণ করে বিমানটি। কিরার কথায়, ‘আমাদের ধারণা চায়ের সঙ্গে কিছু মেশানো হয়েছে। কারণ সকালে চা ছাড়া কিছুই খাননি নাভালনি। এখনও অজ্ঞান তিনি।” চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, দ্রুত শরীরে মিশে কাজ শুরু করার জন্য বিষ গরম পানীয়তে মেশানো হয়েছে। এতে ফল মারাত্মক হতে পারে। আপাতত গভীর কোমায় আছন্ন রয়েছেন তিনি। এর আগেও নাভালনি অভিযোগ করেছিলেন, তাঁকে বিষ খাওয়ানো হয়েছে। গত বছর জুলাইয়ে পুলিশি হেপাজতে থাকার সময় ভয়ঙ্কর অ্যালার্জি হয়েছিল তাঁর। নাভালনির সন্দেহ ছিল, বিষক্রিয়াতেই এসব হয়েছিল।
এদিকে, নাভালনির অসুস্থতা নিয়ে এক বিবৃতিতে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকোভ নাভালনির দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন। তিনি জানান, আবেদন করলে বিদেশে নাভালনির চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। বিরোধী নেতার এক সহযাত্রী পাভেল লেভেদেভ বলেন, “তিনি টয়লেটে গিয়ে প্রচণ্ড অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে সিটে ফিরিয়ে আনতে রীতিমতো বেগ পেতে হয়েছে। তীব্র যন্ত্রণায় ছটফট করছিলেন তিনি।”
উল্লেখ্য, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপূরণে গুপ্তহত্যা রাশিয়ায় নতুন কিছু নয়। সোভিয়েত ইউনিয়নের আমলে গুপ্তচর সংস্থা ‘KGB’ থেকে শুরু করে বর্তমান রাশিয়ার ‘FSB’র বিরুদ্ধে অভিযোগ কিছু কম নয়। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য, অ্যালেক্সান্ডার লিতভিনেঙ্কো হত্যা। ২০০৬ সালে লন্ডনে চায়ের সঙ্গে রেডিও অ্যাকটিভ পোলোনিয়াম মিশিয়ে প্রাক্তন KGB তথা FSB অফিসার লিতভিনেঙ্কোকে হত্যা করা হয়। রুশ প্রশাসনে চরম দুর্নীতির বিরুদ্ধে মুখ হুলে প্রাণ বাঁচাতে ব্রিটেন পালিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেখানেও শেষরক্ষা হয়নি। এবার, একইভাবে নাভালনির চেয়েও তেজস্ক্রিয় পদার্থ মেশানো হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.