সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইউক্রেন যুদ্ধে ক্রমেই বেকায়দায় পড়ছে রাশিয়া। অতিকষ্টে দখল করা এলাকার অনেকটাই হাতছাড়া হয়েছে রুশ ফৌজের। এহেন পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মঞ্চের পাশাপাশি ঘরেও চাপের মুখে পড়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বিশেষ করে, তাঁর সেনা সমাবেশের নির্দেশের পর এবার ‘পুতিন হঠাও’ স্লোগান দিচ্ছেন বিরোধীরা। ফলে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ।
গতকাল, বুধবার জাতির উদ্দেশে ভাষণে সেন সমাবেশের কথা ঘোষণা করেন পুতিন। ইউক্রেনে (Ukraine) আরও বড়সড় হামলার ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি জানান, দেশের রিজার্ভ বাহিনীর সদস্য ও সেনাবাহিনী থেকে অবসরপ্রাপ্ত কিন্তু শারীরিকভাবে সক্ষম ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের ফের ফৌজে নিয়োগের জন্য ডিক্রি জারি করা হয়েছে। আমেরিকা-সহ পশ্চিমের দেশগুলি দীর্ঘ দিন ধরে রাশিয়াকে ভাঙতে চক্রান্ত চালাচ্ছে অভিযোগ তুলে পুতিন বলেন, “আঞ্চলিক অখণ্ডতার উপর কোনও আঘাত এলে রাশিয়া চুপ করে থাকবে না। প্রয়োজনে সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিরোধ হবে।” সেই সঙ্গে জানান, রুশ সেনার ২০ লক্ষের সংরক্ষিত বাহিনীর একাংশ বা প্রায় ৩ লক্ষ সেনাকে আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষার জন্য নতুন ভাবে সন্নিবেশিত করা হবে।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসি জার্মানির বিরুদ্ধে সেনা সমাবেশের ডাক দিয়েছিলেন সোভিয়েত প্রধান জোসেফ স্তালিন। তারপর রাশিয়ার ইতিহাসে এই প্রথম এহেন ডিক্রি জারি করা হয়েছে। আর এনিয়ে সরব হয়েছেন পুতিনের কট্টর সমালোচক অ্যালেক্সেই নাভালনি (Alexei Navalny)। ইউক্রেন যুদ্ধকে ব্যর্থ ও অপরাধ বলে তোপ দেগেছেন তিনি। জেলবন্দি নাভালনির মন্তব্য, “ইউক্রেন অভিযান ব্যর্থ হয়েছে। এখন সবাইকে এই যুদ্ধে জড়াতে চাইছেন পুতিন। হাজার হাজার মানুষের শরীরে রক্তের ছাপ বসাতে চাইছেন তিনি।” উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে রুশ প্রেসিডেন্টকে দ্রুত যুদ্ধ বন্ধ করার আবেদন জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু সেই অবস্থান থেকে ঘুরে গিয়ে বুধবার ইউক্রেন সীমান্তে অশান্তির কারণে সেনা সমাবেশের ঘোষণা করেন পুতিন। তারপরই দেশজুড়ে সুররু হয়েছে বিক্ষোভ। এখনও পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১ হাজার ৩০০ জন যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভকারীকে।
প্রসঙ্গত, ছ’মাসেরও বেশিদিন ধরে প্রবল যুদ্ধ চলছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে। শুরুর দিকে লড়াইয়ের ময়দানে রুশ ফৌজ সাফল্য পেলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা ভারী হয়েছে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর। ইতিমধ্যে হানাদারদের হঠিয়ে খারকভ অঞ্চলের প্রায় গোটাটাই ফের দখল করে নিয়েছে তারা। আশঙ্কা, পরিস্থিতি সামাল দিতে ইউক্রেনে পারমাণবিক এবং রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে রাশিয়া। আর এমনটা করলে ‘ভয়ঙ্কর প্রত্যাঘাত’ করা হবে বলে সম্প্রতি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.