সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বারোদিনের যুদ্ধে ইউক্রেন (Ukraine) কার্যত ধ্বংসস্তূপ। রাজধানী কিয়েভ ও খারকভ দেখলে মনে হয় জাদুবলে যেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে ফিরে গিয়েছে শহরগুলি। মূহুর্মূহু গোলবর্ষণ ও যুদ্ধবিমানের কানফাটানো আওয়াজের মধ্যে মরিয়া হয়ে লড়াই চালাচ্ছে ইউক্রেনের সেনা। সামরিক শক্তিতে কয়েক আলোকবর্ষ এগিয়ে থাকলেও কিয়েভ দখলে এখনও পর্যন্ত ব্যর্থ রুশ বাহিনী। তাই এবার নাকি সিরিয়ার সৈন্যদের আনতে চলেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
সম্প্রতি ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ইউক্রেনে লড়াই করার জন্য সিরীয় সৈন্যদের মোতায়েন করার পরিকল্পনা করেছে রাশিয়া। কেন এই পদক্ষেপ? উত্তর, ‘আরবান ওয়ারফেয়ার’ বা নগরযুদ্ধে রীতিমতো অভিজ্ঞ এবং দুর্ধর্ষ সিরিয়ান জওয়ানরা। দীর্ঘদিন ধরে আলেপ্পো, ইদলিব-সহ অন্যান্য শহরে ইসলামিক স্টেট ও বিদ্রোহীদের সঙ্গে লড়াই করে তাদের কৌশল অত্যন্ত মজবুত। সেই তুলনায় রাশিয়ার সৈন্যদের নগরযুদ্ধে প্রশিক্ষণ সেই অর্থে নেই বললেই চলে। তাই কিয়েভ, খারকভ ও মারিওপোলের মতো শহরগুলি দখলে সিরীয় সেনাদের ময়দানে নামতে চলেছে মস্কো বলেই ধারণা। বলে রাখা ভাল, সিরিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাশার-আল-আসাদের পরমমিত্র পুতিন। ২০১৫ সাল থেকেই মার্কিন মদতপুষ্ট বিদ্রোহী সেনাদল ‘সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সেস’-এর বিরুদ্ধে আসাদ বাহিনীর লড়াইয়ে মদত দিয়েছে মস্কো। এবার তারই প্রতিদান দিচ্ছে দামাসকাস।
এক মার্কিন অধিকারিককে উদ্ধৃত করে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল দাবি করেছে, ইউক্রেনে মোতায়েন হতে চলা সিরীয় সৈনিকদের সংখ্যা জানা যায়নি। তবে ইতিমধ্যে বহু সিরিয়ান জওয়ান যুদ্ধের ময়দানের যাওয়ার জন্য রাশিয়া পৌঁছে গিয়েছেন। বিশ্লেষকদের ধারণা, যুদ্ধে সিরীয় সৈনিকদের উপস্থিতি পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলবে। তবে ইউক্রেনের হয়েও বহু বিদেশি লড়াই করছে। সম্প্রতি যুদ্ধজর্জর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে যাদের পক্ষে লড়াই চালাচ্ছেন প্রায় ১৬ হাজার বিদেশি যোদ্ধা।
উল্লেখ্য, রবিবার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের সঙ্গে ফোনালাপ হয় রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের। রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটে তুরস্ক বারবারই মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় ছিল। এমনকী, পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদোমির জেলেনস্কিকে এক টেবিলে আনার চেষ্টাতেও ছিলেন এরদোগান। এদিন পুতিন ফোনে তাঁকে আরও বলেন যে, রাশিয়া নির্দিষ্ট সূচি মেনেই শৃঙ্খলাবদ্ধ হয়ে যুদ্ধ করছে। রাশিয়াকে থামাতে হলে ইউক্রেনকে শর্ত মানতেই হবে। আর মধ্যস্থতাকারীদের উচিত বিষয়টি ইউক্রেনের প্রশাসনকে বোঝানো।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.