সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইউক্রেনের প্রবল শীতই এখন হাতিয়ার রাশিয়ার! বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে এমন জায়গাতেই বেছে বেছে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রুশ ফৌজ। এই হামলার জেরে এখন অন্ধকারে ডুবে ইউক্রেনের বিস্তীর্ণ এলাকা। বন্ধ পানীয় জলের লাইনও। কনকনে ঠান্ডায় সমস্যায় পড়েছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। রাশিয়ার এই আক্রমণের কড়া নিন্দা জানিয়েছে কিয়েভ। পাশাপাশি বেশ কিছু পরমাণু কেন্দ্র বন্ধ করে দিয়েছে ইউক্রেনীয় প্রশাসন।
১০০০ দিন পেরিয়ে গিয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের। কিন্তু এতটুকুও বদলায়নি রণক্ষেত্রের ছবি। হামলা পালটা হামলা, রক্তপাত, হানাহানি সব কিছু নিয়েই বজায় রয়েছে যুদ্ধের ঝাঁজ। এই মুহূর্তে শীতে কাঁপছে ইউক্রেন। আর এই সময়টাকেই হাতিয়ার করেম হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে। রয়টার্স সূত্রে খবর, বুধবার রাতে পশ্চিম ইউক্রেনের লভিভ, জাইটোমির-সহ বিভিন্ন শহরে আছড়ে পরে প্রায় দুশোর কাছাকাছি মিসাইল। যা আঘাত হানে বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে। মুহূর্তের মধ্যে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন লক্ষ লক্ষ মানুষ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কিয়েভের বিদ্যুৎকেন্দ্রও। জল সরবরাহ হচ্ছে না বেশ কিছু এলাকায়।
এই হামলার প্রভাব পড়েছে ইউক্রেনের দক্ষিণ শহর খেরসনেও। সেখানকার একাধিক অঞ্চলও এই মুহূর্তে অন্ধকারের গ্রাসে। বিদ্যুৎ না থাকায় সরবরাহ হচ্ছে না জল। বৃহস্পতিবার সকালে মিসাইল ও সাইরেনের বিকট শব্দে ঘুম ভেঙেছে কাতেরিনা মালোফিয়েভা নামে এক সাংবাদিকের। নিজের অভিজ্ঞতার কথা সংবাদমাধ্যমে তুলে ধরেছেন তিনি। যদিও ইউক্রেনীয় সেনার দাবি আছড়ে পড়ার আগে বেশিরভাগ ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করে দেওয়া হয়। রাশিয়ার এই ‘বেনজির’ হামলা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। টেলিগ্রামে তিনি জানিয়েছেন, “আমাদের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে টার্গেট করেছে ওরা। বেছে বেছে এইসব জায়গাগুলোতেই হামলা চালানো হয়েছে।” এদিকে এই হামলার কথা স্বীকার করে নিয়েছে মস্কো। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়েছেন, কয়েকদিন আগে ইউক্রেন যে হামলা চালিয়েছিল এটা তার জবাব। এই পরিস্থিতিতে নিরাপত্তার জন্য বেশ কিছু পারমাণবিক কেন্দ্র বন্ধ করে দিয়েছে ইউক্রেন।
বিশ্লেষকদের মতে, এই যুদ্ধে রাশিয়ার অন্যতম অস্ত্র হচ্ছে শীত। এখন কিয়েভে তাপমাত্রা শূন্যের নিচে। ফলে ঘর গরম রাখতে ও জলের পাইপগুলিকে সচল রাখতে বিদ্যুতের প্রয়োজন। সেই দুর্বল জায়গাতেই আঘাত করছে রাশিয়া। ফলে ইউক্রেনের লক্ষ লক্ষ নাগরিক বিদ্যুৎ সঙ্কটের মুখে পড়ছেন। এভাবে জনতার মনোবল ভাঙতে চাইছে পুতিন বাহিনী। শুধু তাই নয়, ঠান্ডায় ইউক্রেনীয় বাহিনীকে ঘিরে ফেলার একটি পরিকল্পনাও করছে রুশ সেনা। এনিয়ে জেলেনস্কিকে সতর্ক করে অনেকেই বলছে, ঠান্ডার জেরেই নেপোলিয়নকে রাশিয়ার সঙ্গে লড়াই হারতে হয়েছিল। একইভাবে ‘জেনারেল উইন্টার’-এর দাপটে বিপর্যস্ত হয়েছিল নাৎসি বাহিনী। তাই শীতের মরশুমে অনেক বেশি সতর্ক থাকতে হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.