সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আফগানভূমে তালিবানের উত্থানে চিন্তিত ভারত। গৃহযুদ্ধে ক্ষতবিক্ষত দেশটিতে পাকিস্তানি প্রভাব রুখতে ও লগ্নি রক্ষায় গোপনে তালিবানের পাক বিরোধী গোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে নয়াদিল্লি। সম্প্রতি আফগানিস্তানে স্বার্থরক্ষায় রাশিয়ার কাছেও দরবার করেছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। আর সেই প্রয়াস যে একেবারে বিফল হয়নি তা স্পষ্ট করে এবার আফগানিস্তান নিয়ে বৈঠকে আমন্ত্রণ পেল ভারত (India)।
এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, আফগানিস্তানে (Afghanistan) শান্তি ফেরাতে তথা তালিবানের আগ্রাসন নিয়ে আলোচনা করার জন্য আমেরিকা-রাশিয়া-চিন-কাবুলের বৈঠকে অংশ নেওয়ার জন্য এবার ভারতকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে মস্কো। ওই বৈঠকে ইরান ও পাকিস্তানের যোগ দেওয়ার কথাও রয়েছে বলে খবর। কয়েকদিন আগেই তাজিকিস্তানের রাজধানী দুশানবে ‘সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন’-এর বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। তিনি বুঝেছেন, আমেরিকা, ভারত, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার তৈরি ‘কোয়াড’-এর পালটা আরও এক ‘কোয়াড’ আফগানিস্তানকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠছে। চিন, পাকিস্তান, রাশিয়া ও ইরান। এর মধ্যে চিন ও পাকিস্তানের সঙ্গে সীমান্ত নিয়ে সংঘাত লেগেই আছে। আমেরিকার সঙ্গে নয়াদিল্লির অত্যাধিক দহরম মহরমে পুরোন বন্ধু রাশিয়া ও ইরান ভারতের সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়েছে। ফলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে এই মুহূর্তে আফগানিস্তান সবথেকে বড় উদ্বেগের কারণ। এহেন পরিস্থিতিতে আফগান বৈঠকে রাশিয়ার আমন্ত্রণ কিছুটা হলেও স্বস্তি দিয়েছে ভারতকে।
উল্লেখ্য, দ্রুত কাবুলের দিকে এগিয়ে আসছে তালিবান (Taliban)। পাহাড়ি দেশটির প্রায় ৩৫০ জেলার মধ্যে অন্তত ১৫০টি দখল করে ফেলেছে জঙ্গি গোষ্ঠীটি বলে দাবি। বেগতিক দেখে কান্দাহার ও হেরাত দূতাবাস থেকে কর্মীদের ফিরিয়ে এনেছে ভারত। এহেন সময়ে নয়াদিল্লিকে বাদ দিয়ে আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও উজবেকিস্তানকে নিয়ে নতুন এক আঞ্চলিক শক্তি (কোয়াড গ্রুপ) তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছে আমেরিকা (America)। আফগান বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে, আমেরিকা, পাকিস্তান, উজবেকিস্তান ও আফগানিস্তানের প্রতিনিধিরা মিলে একটি চতুর্দেশীয় (কোয়াড) কূটনৈতিক মঞ্চ তৈরি করার প্রস্তুতি চলছে। চতুর্ভুজ শক্তির মূল লক্ষ্যই হবে, আঞ্চলিকস্তরে নিবিড় সংযোগ স্থাপন এবং শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু এই প্রচেষ্টায় ভারতকে বাদ দেওয়া হল কেন, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। ওবামা জমানা থেকে আমেরিকার সঙ্গে ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক যথেষ্ট মজবুত হয়েছে। মার্কিন হাতিয়ার কেনা থেকে শুরু করে সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে ওয়াশিংটনের সঙ্গে রীতিমতো দহরম মহরম মোদি সরকারের। আর এতে পুরনো বন্ধু রাশিয়ার বিরাগভাজনও হতে হয়েছে নয়াদিল্লিকে। তার পরও বাইডেন প্রশাসন এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে ভারতকে শরিক করেনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.