সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর দৌড়ে দ্বিতীয় স্থানে শেষ করেছিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনাক (Rishi Sunak)। কিন্তু নির্বাচনের মাত্র একমাস পরেই ফের চর্চায় উঠে এলেন তিনি। জানা গিয়েছে, দেশকে পরিচালনার পরীক্ষায় ডাহা ফেল করেছেন প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস (Liz Truss)। সেই জন্যই তাঁকে সরিয়ে সুনাককেই প্রধানমন্ত্রী হিসাবে চাইছেন তাঁরা। ইঙ্গিতপূর্ণ ভাবে, ব্রিটেনের নতুন অর্থমন্ত্রীর পদে বসেছেন জেরেমি হান্ট। প্রধানমন্ত্রী পদে ঋষিকেই সমর্থন করেছিলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী (British PM) পদে নির্বাচনের সময় প্রচার করতে গিয়ে লিজ ট্রাস জানিয়েছিলেন, দেশবাসীর উপর থেকে করের বোঝা কমিয়ে নেওয়া তাঁর অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য। প্রধানমন্ত্রীর কুরসিতে বসেই তিনি কর্পোরেট করের উপরে ৪৫ শতাংশ ছাড়ের কথা ঘোষণা করেছিলেন। অন্যদিকে, প্রচারের সময় ঋষির মুখে একবারও কর কমানোর বিষয়ে কোনও কথা শোনা যায়নি। বরং এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে ঋষি স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, দেশের আর্থিক অবস্থার কথা মাথায় রেখে এই মুহূর্তে কর কমানো একেবারেই সম্ভব নয়। বরিস জনসনের ক্যাবিনেটের অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, করছাড়ের পরিকল্পনা এক অলীক স্বপ্ন। এইভাবে অবাস্তব প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটে জেতা সম্ভব নয়।
নির্বাচনী লড়াইয়ের প্রতিটি ধাপে এগিয়ে থাকা ঋষি শেষ পর্যন্ত হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে হেরে যান লিজ ট্রাসের কাছে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, প্রচারের সময়ে জনমোহিনী নীতির কথা ঘোষণা করতে পারেননি ঋষি। সেই জন্যই দলের তৃণমূল স্তরের কর্মীদের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠতে পারেননি তিনি। তাঁদের ভোটেই জয় পেয়ে ১০ ডাউনিং স্ট্রিটের বাসভবনে পৌঁছে যান লিজ ট্রাস। কিন্তু দেশের অর্থনীতির বেহাল দশা সামাল দিতে একেবারেই ব্যর্থ হন তিনি।
নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে সবার আগেই কর্পোরেট ট্যাক্স কমান ট্রাস। প্রসঙ্গত, ক্ষমতায় থাকাকালীন এই কর বাড়ানোর পক্ষেই সওয়াল করেছিলেন ঋষি। কিন্তু ট্রাসের করছাড়ের ঘোষণা করার পরেই বিশ্ববাজারে ঐতিহাসিক ভাবে কমে যায় পাউন্ডের দাম। তাছাড়াও, সাধারণ মানুষের কর কমানোর কোনও ঘোষণা করেনি ট্রাসের সরকার। ফলে প্রশ্ন উঠে যায় তাঁর নীতি নিয়ে। সবমিলিয়ে দলের মধ্যে প্রবল চাপের মধ্যে রয়েছেন ট্রাস। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, ট্রাসকে মাত্র ১৭ দিন সময় দিয়েছেন তাঁর দলের এমপিরা। সেই সময়ের মধ্যে নাটকীয়ভাবে ব্রিটেনের আর্থিক অবস্থার উন্নতি করা কার্যত অসম্ভব ট্রাসের পক্ষে।
সেই কারণেই প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ঋষিকেই দেখতে চাইছেন দলীয় এমপিরা। প্রথমত, প্রধানমন্ত্রী পদের নির্বাচনী প্রক্রিয়া যতদিন পার্লামেন্টের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল, ততদিন প্রত্যেক পর্বেই এগিয়ে ছিলেন ঋষি। সেইসঙ্গে, দেশের অর্থমন্ত্রী হিসাবে দীর্ঘদিন কাজ করার সুবাদে অর্থনীতির উত্থানপতন সামলানোর দক্ষতা রয়েছে তাঁর। সেই সঙ্গে বিলেতের জুয়ার আসরে ইতিমধ্যেই পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসাবে এগিয়ে রেখেছে ঋষি সুনাককে। সব মিলিয়ে আগামী কয়েকদিনে কী হয় ইংল্যান্ডের রাজনীতিতে, সেদিকে তাকিয়ে রয়েছে গোটা বিশ্ব।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.