সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জীবিত অবস্থায় যত না সৌদি রাজপরিবারের মাথা ব্যথার কারণ ছিলেন খাশোগ্গি, মৃত্যুর পর ততটাই যেন বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে তাঁর জুজু। সৌদি রাজতন্ত্রের মোড় কার্যত ঘুরিয়ে দিয়েছে ওয়াশিংটন পোস্টের কলামিস্টের নৃশংস হত্যা। এই ঘটনার জেরেই নাকি ক্রমশ রাজা সলমন বিন আবদুল আজিজ আল সৌদের সঙ্গে দুরত্ব বাড়ছে যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমনের (এমবিএস)।
[সৌদি নির্দেশে তিনদিন ধরে পোড়ানো হয় খাশোগ্গির দেহাংশ]
এক আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, ইয়েমেনে চলা লড়াই-সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে রাজা সলমনের সঙ্গে স্পষ্ট বিরোধিতা দেখা দিয়েছে এমবিএসের। মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ আগেই জানিয়েছিল, সৌদি যুবরাজের নির্দেশেই তুরস্কের সৌদি দূতাবাসে হত্যা করা হয় সাংবাদিক খাশোগ্গিকে। এমবিএস-এর নির্দেশেই সৌদি ইন্টেলিজেন্স বাহিনীর কয়েকজন ঘাতক এই কাজ সম্পন্ন করে। তবে এহেন বিপজ্জনক পদক্ষেপে আদৌ সায় ছিল না, বা বিষয়টি জানতেনই না ৮৩ বছরের রাজা সলমন, বলে একাধিক সূত্র থেকে জানা গিয়েছে। ওই হঠকারি সিদ্ধান্তের ফলেই আন্তর্জাতিক মঞ্চে মুখ পুড়েছে সৌদি আরবের। এদিকে সৌদি সেনা ও গোয়েন্দা বিভাগের উপর ক্রমশ প্রভাব বিস্তার করছেন এমবিএস বলেও নাকি রাজা সলমনকে সতর্ক করেছেন উপদেষ্টারা। পরিস্থিতি কোন জায়গায় দাঁড়িয়েছে তা গত ফেব্রুয়ারি রাজা সলমনের মিশর সফরের সময়ই স্পষ্ট হয়ে পড়েছে। সফর চলাকালীন তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করা হতে পারে বলে খবর পৌঁছায় রাজা সলমনের কাছে। তারপরই তাঁর সুরক্ষায় মোতায়েন থাকা আধিকারিকদের সরিয়ে দেন বৃদ্ধ রাজা। সাবধানতা অবলম্বন করে সৌদি অভ্যন্তরীণ মন্ত্রক থেকে ৩০ জন বিশ্বস্ত আধিকারিককে নিজের সুরক্ষার দায়িত্ব দেন সলমন।মিশর থেকে ফেরার পর নাকি রাজাকে স্বাগত জানাতে যাননি যুবরাজ। পিতা-পুত্রের সংঘাত যে চরমে তা এই ঘটনা থেকেই স্পষ্ট বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের অক্টোবরে তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় সৌদি দূতাবাসের মধ্যেই ফাঁদ পেতে ডেকে এনে খাশোগ্গিকে হত্যা করা হয়। তারপরই তদন্তে উঠে আসে এমবিএসের নাম। আন্তর্জাতিক মহলে বয়ে যায় নিন্দার ঝড়। সৌদি রাজপরিবারের একজন কট্টর সমালোচক ছিলেন খাশোগ্গি। তাই তাঁকে চুপ করাতেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয় বলে দাবি করেছে তুরস্কের তদন্তকারীরা।
[ভারতকে দেওয়া অতিরিক্ত বাণিজ্যিক সুবিধা প্রত্যাহার করছেন ট্রাম্প]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.