সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রোহিঙ্গারা যেন বিশ্ব মানচিত্রে ব্রাত্য। মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশ বা বিশ্বের অন্য কোনও দেশ। কেউই তাদের আশ্রয় দিতে চায় না। তার উপর চলছে রোহিঙ্গা নিধন যজ্ঞ। এতকিছুর পরও কেন নীরব মায়ানমারের নেত্রী সু কি? শান্তির জন্য নোবেলজয়ী সু কি এবার রোহিঙ্গা নিধনের সময় একটু মানবিক হতে পারলেন না? প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্ববাসী। তার জবাবও দিল নোবেল কমিটি।
[ বাংলাদেশে প্রবেশ ৩ লক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থীর, জানাল রাষ্ট্রসংঘ ]
জঙ্গি নিধন ছিল প্রধান লক্ষ্য। তার জেরেই রাখাইন প্রদেশে সেনাবাহিনী ব্যাপক অভিযানে নামে। যার কোপে পড়েন রোহিঙ্গা মুসলিমরা। এমনিতে রোহিঙ্গা সমস্যা সাম্প্রতিক নয়। গত কয়েক দশক ধরেই চলে আসছে। মুসলিমদের মধ্যে অন্তর্বিরোধ তো ছিলই। তাছাড়া বিশ্বের কোনও প্রদেশেই রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে নারাজ। কারণ অনেক দেশের গোয়েন্দারাই মনে করেন, রোহিঙ্গাদের সঙ্গে জঙ্গিদের ঘনিষ্ঠ যোগ আছে। এমনকী আইএস-এর মতো আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনও তাদের প্রভাবিত করে বলেও অভিযোগ। জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে তাই রোহিঙ্গাদের বড়সড় চ্যালেঞ্জই ভাবেন রাষ্ট্রনেতারা। কিন্তু এই নীতির জেরে কার্যত ঘরহারা সাধারণ নীরিহ রোহিঙ্গারা। ঘর হারিয়ে রোহিঙ্গারা লুকিয়ে চুরিয়ে এদেশ ওদেশে পালিয়ে আসেন। এই উদ্বাস্তু সমস্যার প্রধান শিকার ভারত ও বাংলাদেশ। ইতিমধ্যেই কয়েক লক্ষ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন, যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে সে দেশের অর্থনীতিতে। ভারতও ভুক্তভোগী। এদিকে রোহিঙ্গাদের উপর হওয়া সাম্প্রতিক নির্যাতন নিয়ে সারা বিশ্ব নিন্দায় সরব। কিন্তু শান্তির জন্য নোবেলজয়ী সু কি-র মুখে রা নেই। স্বাভাবিকভাবেই এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এমনকী তাঁর নোবেল ফিরিয়ে নেওয়ারও দাবি উঠেছে। অনলাইনে এই মর্মে একটি পিটিশনও দাখিল হয়। প্রায় চার লক্ষ মানুষ স্বাক্ষর করে নোবেল ফিরিয়ে নেওয়ায় সমর্থন জুগিয়েছেন।
[ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে নারাজ বাংলাদেশ, রাষ্ট্রসংঘে আবেদন হাসিনার ]
নোবেল শান্তি পুরস্কারের দেখভাল করে যে কমিটি তাদের কাছেও পৌঁছেছে এই আবেদন। যদিও নরওয়েন নোবেল ইনস্টিটিউট-এর প্রধান ওলাভ ওস্টাড জানিয়েছেন, একবার নোবেল প্রাইজ দেওয়া হলে তা আর ফিরিয়ে নেওয়া যায় না। ১৯৯১ সালে শান্তির জন্য নোবেল সম্মানে ভূষিত হয়েছিলেন সু কি। তা যে আর ফিরিয়ে নেওয়া যায় না, তাইই নিশ্চিত করেছে এই কমিটি। এদিকে সু কি-র বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন অন্যান্য নোবেলজয়ীরাও। মালাল ইউসুফজাই সরব হয়েছিলেন। অপর নোবেলজয়ী ডেসমন্ড টুটুও সু কি-র কড়া সমালোচনা করেছেন। ক্ষমতায় টিকে থাকতেই সু কি-র এই নীরবতা বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.