সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের বালাকোটে মঙ্গলবার যখন সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালাচ্ছিল ভারত। তখন সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দারা ভেবেছিল ভূমিকম্প হচ্ছে। ভয়ে কেউ কেউ বাড়ির বাইরেও বেরিয়ে আসে। আসলে ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা হিসেবেই পরিচিত পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিম প্রান্তের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের কুনহার নদীর তীরবর্তী বালাকোট শহর। ২০০৫ সালে ভয়াবহ ভূমিকম্পের ফলে এখানে ৮০ হাজারের উপর মানুষ মারাও যায়। পরে সৌদি আরবের সহযোগিতায় ফের শহরটিকে সাজিয়ে তোলে পাক প্রশাসন। তাই মঙ্গলবার বিকট শব্দ পেয়ে ও পায়ের তলার মাটি কাঁপতে দেখে সিঁদুরে মেঘ দেখছিল সেখানকার বাসিন্দারা। ভেবেছিল ফের বুঝি ভূমিকম্প হচ্ছে।
ওই পার্বত্য এলাকার অনেক বাসিন্দাই বলছে, মঙ্গলবার ভোরে বিকট শব্দ শুনে বালাকোট ও তার সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা প্রথমে ভূমিকম্প হচ্ছে বলে আশঙ্কা করেছিল। পরে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে ভূমিকম্প নয় বলে বুঝতে পারে। বালাকোটের জাবা গ্রামের এক কৃষক মহম্মদ আদিল বলেন, ‘রাত তিনটের সময় বিকট আওয়াজ পেয়ে বাড়ির সবাই বাইরে বেরিয়ে আসে। আসলে ফের ওই এলাকায় ভূমিকম্প হচ্ছে বলেই প্রথমে সবাই মনে করেছিল। পরে মাথার উপরে দিয়ে জেট বিমান চলে যাওয়ার আওয়াজ পাই। সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি সেখানে বিরাট বড় গর্ত হয়ে গিয়েছে।’
[২০০৮ সালে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করতে দেয়নি ইউপিএ সরকার, মন্তব্য প্রাক্তন বায়ুসেনা প্রধানের]
মঙ্গলবার বালাকোটে দুমিনিটের জন্য অভিযান চালিয়ে পাকিস্তানে থাকা জইশ-ই-মহম্মদের সবথেকে বড় ট্রেনিং ক্যাম্প বোমা মেরে ধ্বংস করে ভারতীয় বায়ুসেনা। এর ফলে খতম হয় প্রচুর জইশ জঙ্গি ও প্রশিক্ষক। নিকেশ হয় জইশ প্রধান মাসুদ আজহারের বড়ভাই ও শ্যালক-সহ ওই জঙ্গি গোষ্ঠীর পাঁচজন শীর্ষ নেতা। এরপরই সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের এই ঘটনাকে অসামরিক ও প্রতিরোধমূলক অভিযান বলে জানানো হয় ভারতের তরফে।গত ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামার অবন্তীপোরায় সিআরপিএফ কনভয়ের উপর আত্মঘাতী হামলা চালায় জইশ জঙ্গিরা। এর ফলে শহিদ হন ৪৯ জন জওয়ান। তার বদলা নিতেই মঙ্গলবার ভোররাতে পাকিস্তানের মাটিতে থাকা জইশ-ই-মহম্মদের তিনটি ক্যাম্পের উপর সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালায় ভারত। ফের জইশ জঙ্গিরা যাতে ভারতে হামলা না চালাতে পারে তা নিশ্চিত করতেই এই অসামরিক ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল বলে জানানো হয় ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের তরফে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.