সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিলেন মাহিন্দা রাজাপক্ষে। শনিবার তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে ইস্তফাতপত্র জমা দেন। রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, রাজাপক্ষের ইস্তফার পরে শ্রীলঙ্কায় সাধারণ নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা আরও বাড়ল। আদতে রাজাপক্ষে কট্টর ভারত বিরোধী এবং চিনপন্থী বলে পরিচিত। তাঁর ইস্তফার ফলে, গত দু’মাস ধরে শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক অচলাবস্থা ও উত্তেজক পরিস্থিত কিছুটা হলেও প্রশমিত হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
ইস্তফার পর রাজাপক্ষে এদিন সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনও কথা বলতে চাননি। গত অক্টোবর মাসে বৈধভাবে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী রানিল বিক্রমসিঙ্ঘেকে বরখাস্ত করেন প্রেসিডেন্ট মৈত্রীপালা সিরিসেনা। রাজাপক্ষেকে প্রধানমন্ত্রী পদে বসান সিরিসেনা। ভারতপন্থী রানিলকে অপদস্থ করা মেনে নিতে পারেনি নয়াদিল্লি। শ্রীলঙ্কার রাজনীতিতে শুরু হয় টানাপোড়েন ও অনিশ্চয়তা। ১৪ নভেম্বর আস্থা ভোটে হেরে যান রাজাপক্ষে। এদিকে, সুপ্রিম কোর্ট রাজাপক্ষের নিয়োগকে বৈধতা দেয়নি। রাজাপক্ষের পক্ষে রায়ও দেয়নি। ফলে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হলেন ৭৩ বছরের রাজাপক্ষে। রানিলের শিবির মনে করছে, অচলাবস্থা কাটাতে ফের রানিলকেই সরকার গড়ার জন্য ডাকতে পারেন প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা।
দীর্ঘদিন ধরেই রাজনৈতিক ডামাডোল পরিস্থিতি তৈরি হয় শ্রীলঙ্কায়৷ ২২৫ আসন বিশিষ্ট শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টে বিক্রমসিংহের দলের আসন সংখ্যা ১০৬, অন্যদিকে রাজাপক্ষে ও সিরিসেনার দলের সম্মিলিত আসন সংখ্যা মাত্র ৯৫। এতদিন ধরে প্রধানমন্ত্রী বিক্রমসিংহের দলের সঙ্গে জোট করে সরকারে ছিল সিরিসেনার দল৷। কিন্তু গত মাসে জোট ছেড়ে বেরিয়ে আসেন তিনি। তারপরই রাজাপক্ষেকে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন সিরিসেনা। একসময় শ্রীলঙ্কার এই রাজাপক্ষেরই মন্ত্রিসভার মন্ত্রী ছিলেন সিরিসেনা। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য রাজাপক্ষের সঙ্গত্যাগ করেন তিনি। অনেকের মতে, এবার রাজাপক্ষেকে প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত করে সেই ঋণই শোধ করার চেষ্টা করেছিলেন সিরিসেনা৷ অবশেষে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিলেন রাজাপক্ষে। রাজনৈতিক মহলের মতে, রাজাপক্ষের ইস্তফার ফলে এতদিনের টালমাটাল অবস্থা কিছুটা হলেও স্থিতু হবে এবার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.