সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পুতিন জমানায় ফের রাশিয়া ও আমেরিকার মধ্যে তুঙ্গে ঠান্ডা লড়াই। এবার ‘RS-18 Sarmart’ নামের এই নয়া ব্যালিস্টিক মিসাইল তৈরি করল রাশিয়া। ৬ হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত আঘাত হানতে সক্ষম এই ক্ষেপণাস্ত্রটি মার্কিন জমিতে হামলা চালানোর উদ্দেশে তৈরি বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, নয়া রুশ মিসাইলটি আপাতত পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে। দ্রুত এটিকে সেনায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। পরমাণু অস্ত্রবহনে সক্ষম প্রায় ১০০ টন ওজনের এই ক্ষেপণাস্ত্রটি আছড়ে পড়লে যে বিস্ফোরণ ঘটবে তার ফলে ফ্রান্স বা টেক্সাসের সমান এলাকা কার্যত পুড়ে যেতে পারে বলে বলে মনে করছেন অস্ত্র বিশেষজ্ঞরা। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে রাশিয়া ও অমেরিকার মধ্যে হওয়া ‘Intermediate-Range Nuclear Forces Treaty’ বা আনবিক মিসাইল সংক্রান্ত চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসে ট্রাম্প প্রশাসন। ফলে আমেরিকাকে তুলোধনা করেন পুতিন। তাঁর অভিযোগ, জেনে বুঝেই ঠান্ডা লড়াইয়ের সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তিটি থেকে বেরিয়ে এসেছে ওয়াশিংটন। আর মস্কোর কাঁধেই পালটা দায় চাপাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন।
উল্লেখ্য, সোভিয়েত জমানার শেষ নেতা মিখাইল গর্বাচেভ এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রেগানের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছিল আইএনএফ চুক্তি। এই চুক্তির আওতায় পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম ভূমি থেকে নিক্ষেপযোগ্য ৫০০ কিলোমিটার থেকে ৫,০০০ কিলোমিটার পাল্লার সব ধরনের ক্রুজ মিসাইল নিষিদ্ধ করা হয়। যার জেরে অস্ত্রভাণ্ডার গড়ার প্রতিযোগিতায় রাশ টানা গিয়েছিল। আতঙ্ক কাটিয়ে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছিল দু’টি মহাযুদ্ধের দুঃস্বপ্ন ভুলতে না পারা ইউরোপের মানুষ। ওই সময় বিভিন্ন পশ্চিমি দেশের রাজধানী লক্ষ্য করে মোতায়েন ছিল রুশ আনবিক অস্ত্রবাহী ক্ষেপণাস্ত্র। চুক্তির ফলে সেই সংকট থেকে মুক্তি মেলে। কিন্তু ওই চুক্তিতে চিন-সহ অন্য কোনও দেশের ক্ষেত্রে এমন কোনও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি। সম্প্রতি রাশিয়ার বিরুদ্ধে নয়া মিসাইল নির্মাণের অভিযোগ এনে এই চুক্তি থেকে সরে দাঁড়িয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। পালটা দিয়েছে মস্কোও। পাশাপাশি, ২০২১-এ এসটিএআরটি (Strategic Arms Reduction Treaty) চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এই টানাপোড়েনের জেরে ওই চুক্তির মেয়াদ বাড়া নিয়েও আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। রাশিয়া-আমেরিকার কাছে সর্বোচ্চ কতগুলি পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র থাকবে, তা নিয়েই ওই চুক্তি হয়েছিল। সব মিলিয়ে দুই আনবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে ফের যুদ্ধের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.