সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বছর চার আগে এসেছিলেন ঘুরতে। সবুজঘেরা অরণ্যের মাঝে প্রাণীদের মুক্ত জীবন দেখে আপ্লুত হয়ে পড়েছিলেন ব্রিটিশ রাজকুমার, রাজবধূ। নিজেদের হাতে গন্ডার, হাতিদের খাইয়ে আনন্দে উদ্বেল হয়ে উঠেছিলেন। স্মৃতির পাতা উলটে সেই কাজিরাঙ্গা জাতীয় উদ্যানের (Kaziranga National Forest) ছবি দেখতে গিয়ে আজ তাঁদের চোখে পড়ল বন্যার জলে প্লাবিত জঙ্গলের হতশ্রী চেহারা। চোখে পড়ল প্রাণভয়ে বন্যপ্রাণীদের পালিয়ে যাওয়ার ছবি। আর তাতেই নিজেদের আবেগ আর সামলে রাখতে পারলেন না ব্রিটেনের প্রিন্স উইলিয়াম ও তাঁর স্ত্রী কেট মিডলটন। অশ্রুসজল হয়ে তাঁরা চিঠি লিখলেন কাজিরাঙ্গা কর্তৃপক্ষকে। জানালেন, এই পরিস্থিতি দেখে তাঁরা অত্যন্ত ব্যথিত।
গত কয়েক সপ্তাহের লাগাতার বর্ষণে বন্যাপ্লাবিত দেশের অন্যতম বৃহৎ এই অভয়ারণ্য। ৯২ শতাংশই জলের নিচে। গন্ডার, হরিণ, বাঘ, হাতিরা প্রাণভয়ে পালাচ্ছে। ঢুকে পড়ছে লোকালয়ে। মৃত্যুর মুখে পড়েছে শতাধিক বন্যপ্রাণী। ওদের বাঁচাতে দিনরাত এক করে কাজ করে যাচ্ছেন বনকর্মীরা। সম্প্রতি এসব ছবি নজরে এসেছে ব্রিটিশ রাজকুমার উইলিয়াম (Prince William) এবং তাঁর স্ত্রী কেটের। আর তা দেখেই চমকে উঠেছেন তাঁরা। বছর চারেক আগে তাঁদের দেখা কাজিরাঙ্গার সঙ্গে এ দৃশ্য যেন কিছুতেই মিলছে না। কাজিরাঙ্গার ডিরেক্টর পি শিবকুমারকে লেখা চিঠিতে সেকথাই প্রকাশ করেছেন ডিউক অ্যান্ড ডাচেস অফ কেমব্রিজ। জানিয়েছেন, এই ছবি দেখে তাঁদের হৃদয় বেদনায় ভরে গিয়েছে।
চিঠিতে কেট-উইলিয়াম লিখেছেন, “২০১৬’র এপ্রিলে কাজিরাঙ্গা বেড়াতে গিয়ে জীবনের অন্যতম সুন্দর মুহূর্তেগুলো কাটিয়েছিলাম। কিন্তু এখন যা দেখছি, তাতে চমকে উঠছি। সেসময় যে কর্মীদের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল, দেখেছিলাম, জঙ্গল রক্ষায় তাঁরা কত কাজ করছেন, নিজেদের ঝুঁকির কথাও ভাবেননি। আমরা এখনও নিজেদের মধ্যে কথা বলতে গিয়ে ওনাদের প্রশংসা করি। এখন তাঁদের কী দুঃসময়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে, তা বুঝতেই পারছি। তাঁদের প্রত্যেকের প্রতি আমাদের গভীর সমবেদনা।”
সুদূর ব্রিটেন থেকে উইলিয়াম-কেটের এই চিঠি যেন প্রাণে খানিকটা বল যুগিয়েছে কাজিরাঙ্গার কর্তৃপক্ষকে। ডিরেক্টর পি শিবকুমারের কথায়, ”নিঃসন্দেহে এই চিঠি আমাদের কর্মীদের উজ্জীবিত করবে। এই কঠিন সময়ে তাঁরা কাজে আরও উৎসাহ পাবেন।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.