সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদীদের আশ্রয় ও প্রশ্রয় দেয়। পরে তারা জঙ্গি শিবির থেকে বেরিয়ে মার্কিন সেনাদের উপর ঝঁপিয়ে পড়ে, তাঁদের খুন করার সর্বাত্মক চেষ্টা করে। রাষ্ট্রসংঘে নিযুক্ত প্রাক্তন মার্কিন রাষ্ট্রদূত, ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রাক্তন গভর্নর নিকি হ্যালি এই অভিযোগ করেছেন।
তাঁর সাম্প্রতিক বই ‘উইথ অল ডিউ রেসপেক্ট : ডিফেন্ডিং আমেরিকা উইথ গ্রিট অ্যান্ড গ্রেস’-এ এমনই সমস্ত চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন হ্যালি। বইটি মঙ্গলবার থেকে বিভিন্ন স্টোরে পাওয়া যাচ্ছে। তাঁর দাবি, পাকিস্তান সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্যপ্রমাণ দেখে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। আমেরিকার থেকে সবচেয়ে বেশি সাহায্য পাওয়া দেশগুলির অন্যতম হয়েও পাকিস্তান রাষ্ট্রসংঘে আমেরিকার বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে। শুধু তাই নয়, জঙ্গিদের আশ্রয় ও প্রশিক্ষণ দেওয়া চালিয়ে গিয়েছে। হ্যালি লিখেছেন, ‘অল্প কয়েকটি দেশ ছাড়া সবচেয়ে বেশি সাহায্য পেয়েছে পাকিস্তান। ২০১৭-য় পাক সেনা প্রায় একশো কোটি মার্কিন ডলার সাহায্য পেয়েছে। কিন্তু রাষ্ট্রসংঘ তৈরি হওয়ার পর পুরো ৭৬ শতাংশ সময় পাকিস্তান আমাদের বিরোধিতা করেছে, আমাদের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে। তারপরেও ওরা জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। শিবির থেকে বেরিয়ে ওরা ঝাঁপিয়ে পড়ছে মার্কিন সেনাদের উপর। তাঁদের খুন করার চেষ্টা করছে।’
হ্যালি জানান, এই সমস্ত ঘটনা ও প্রমাণ দেখে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এতই ক্রুদ্ধ হন যে, মার্কিন কংগ্রেসকে নতুন আইন করতে অনুরোধ করেন। এমন আইন আসে যাতে আমেরিকার বন্ধু এবং তাদের স্বার্থে কাজ করা দেশ ছাড়া অন্য কেউ মার্কিন বৈদেশিক সাহায্য পাবে না।’ একই সঙ্গে অবশ্য হ্যালি জানিয়েছেন, মানবিক কারণে, জীবনহানি রুখতে এবং মানুষের দুঃখ-দুর্দশা লাঘব করতে সব সময় অগ্রাধিকার দিয়েছে আমেরিকা। তাই ওই সমস্ত কারণে সাহায্য দিতে তারা কোনও বাছবিচার করে না। হ্যালি লিখেছেন, ‘আমরা মানুষ। তবে আমাদের বিবেকহীন, নির্বোধ দেশ হওয়া উচিত নয়। মানবিক সহায়তা থেকে স্বনির্ভরতার দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য যে দেশগুলি নিজের পায়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করতে আমাদের সাহায্য চায় তাদের সহায়তা করাতে আমাদের দৃষ্টি নিবদ্ধ করা উচিত। সমস্ত সম্ভাব্য ফলের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ ফল হল দেশগুলিকে আমাদের স্বার্থকে সমর্থন করার প্রশ্নে আমাদের উদারতার উপর স্থায়ী নির্ভরতা তৈরি করা।’ এতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হতে পারে বলে হ্যালি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
হ্যালি আরও জানান, রাষ্ট্রসংঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূত হয়ে তাঁর দু’বছরের কার্যকালে এমন এমন জায়গায় গিয়েছিলেন যেখানে মানবাধিকার এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা, ধর্ম ও সংবাদমাধ্যমের কোনও অস্তিত্ব নেই। এমনকী, লোকদেখানো হলেও নয়। তাঁর দাবি, ‘ভেনেজুয়েলা, কিউবার মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নেই। শাস্তির বিরুদ্ধে আবেদনের সুযোগ নেই। খ্রিস্টান হওয়ার অপরাধে আসিয়া বিবিকে পাকিস্তানে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়েছিল। সেখানে ধর্মীয় স্বাধীনতা নেই। চিনের আইনে বা সংবিধানে উইঘুর মুসলিমরা সমান অধিকার পায় না। সামাজিক সাম্য নেই তাদের জন্য। একই অবস্থা মায়ানমারে রোহিঙ্গা, সিরিয়ায় ইয়াজিদিদের ক্ষেত্রে। আমাদের আলাদা আমেরিকা দরকার নেই। আমাদের সবাইকে সর্বজনীন নীতিগুলির প্রতি আরও কৃতজ্ঞতা দেখানো দরকার, যা আমাদের দেশ এবং জাতিকে মহান করে তুলেছে ও ভবিষ্যতে আরও বৃহত্তর করে তুলবে।’
[আরও পড়ুন: সমুদ্রতটে ছড়ানো বরফের অসংখ্য নিটোল ‘ডিম’! বিরল দৃশ্য ফিনল্যান্ডে]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.