সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ধর্ষণের অন্যতম উদ্দীপক হিসাবে এতদিন মহিলাদের পোশাককেই দোষারোপ করেছেন বহু রাজনীতিবিদ। সেই সঙ্গে আঙুল উঠেছে ধর্ষিতার চরিত্রের দিকে৷ বলা হয়েছে ‘ধর্ষিতা মহিলার চরিত্র খারাপ’৷ এবার তাঁদের সকলকে ছাপিয়ে গেলেন ফিলিপিন্সের প্রেসিডেন্ট রডরিগো দুতেত্রে। তিনি এবার ধর্ষণের জন্য দায়ী করলেন মহিলাদের সৌন্দর্যকে। ফিলিপিন্সের দাভাও শহরে ধর্ষণের ঘটনা অনেক বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এমন মন্তব্যই করেন রডরিগো। তাঁর মন্তব্য ঘিরে সমলোচনার ঝড় উঠেছে আন্তর্জাতিক মহলে।
[চরমে সংঘাত! বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা থেকে নাম প্রত্যাহারের হুমকি ট্রাম্পের]
তবে এই প্রথম নয়। এরআগেও কু-কথার জন্য সমালোচিত হয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট রডরিগো। সেনাদের ধর্ষণ করায় অবাধ অনুমোদন দেন তিনি। গত বছর তিনি বলেন, একজন সেনা সর্বাধিক তিনজন মহিলাকে ধর্ষণ করলে কোনও রকম শাস্তি পেতে পারে না। প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে দাভাও শহরের মেয়র ছিলেন রডরিগো। সেই সময় অর্থাৎ ১৯৮৯ সালে দাঙ্গা হয়। দাঙ্গার সময় দাভাও জেলে জ্যাকলিন হ্যামিল নামে এক অস্ট্রেলিয় মিশনারিকে গণধর্ষণ করে হত্যা করা হয়। সেই পরিপ্রেক্ষিতে বিবৃতি দিতে গিয়ে রডরিগো নিজে ওই মহিলাকে ধর্ষণ করতে না পারায় আক্ষেপ প্রকাশ করেন। বার বার বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে থেকেও তিনি কীভাবে প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হলেন সেই প্রশ্নই উঠেছে ওয়াকিবহাল মহলে।
[বেজিংয়ে বাড়ছে মুসলিমদের উপর অত্যাচার, চুপ ইসলামাবাদ]
ধর্ষণের জন্য মহিলাদের সৌন্দর্যকে দায়ী করেই থেমে থাকেননি এই বিতর্কিত রাজনীতিক। এই বিষয়ে তিনি প্রশ্ন ছুড়ে বলেন, ‘‘এক কথায় কি কোনও মহিলা যৌন সম্পর্কে রাজি হন? না, তাই বাধ্য হয়েই পুরুষকে ধর্ষণ করতে হয়।’’ ধর্ষণের পক্ষে এমন যুক্তিই পেশ করেন রডরিগো। প্রেসিডেন্টের এই মন্তব্যে সবচেয়ে বেশি সমালোচনা শুরু হয়েছে খোদ ফিলিপিন্সেই। মহিলা সংগঠনগুলি আন্দোলনে নামবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে। আন্তর্জাতিক মহলেও তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে।
অবশেষে সমালোচকদের নিন্দার মুখে ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেমেছেন তাঁর মুখপাত্র। কোনওরকম ক্ষমা চাওয়ার বদলে রডরিগোর তরফে তাঁর মুখপাত্র দাবি করেন, এই মন্তব্য নিছকই মশকরা ছিল। মহিলাদের অপমান করার উদ্দেশ্যে কিছু বলা হয়নি। যদিও তা মানতে নারাজ মহিলা সংগঠনগুলি। প্রকাশ্যে প্রেসিডেন্টের ক্ষমা প্রার্থনা দাবি করেছেন বিরোধী দলের নেতারাও। ফিলিপিন্সের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক স্তরের মহিলা সংগঠনগুলিও তাঁর নিন্দায় মুখর হয়েছে। ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, কোনও বিচ্ছিন্ন ধারণা থেকে এই মন্তব্য করা সম্ভব নয়। এটা প্রেসিডেন্টের বিকৃত মানসিকতা ও মহিলাদের প্রতি চরম অসম্মানের বহিঃপ্রকাশ। যার প্রমাণ এর আগেও বহুবার তিনি দিয়েছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.