সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রায় দুই দশক পর ফের আফগানিস্তান (Afghanistan) দখল করল তালিবান। সেই সঙ্গে আবারও সাইগনের পতনের স্মৃতি ভেসে উঠল মার্কিন জনগণের মনে। আশরফ ঘানি সরকারের এই দ্রুত পতন ও জঙ্গিদের জয়ের জন্য এক বৃহৎ সংখ্যক মার্কিনী দায়ী করছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে। আফগানিস্তান থেকে তড়িঘড়ি ফৌজ না সরালে এত সহজে কাবুল দখল করতে পারত না জেহাদিরা বলে মনে করছেন মার্কিন কংগ্রেসের একাংশ। তবে এই সমালোচনা গায়ে মাখতে নারাজ বাইডেন, তাঁর সাফ কথা, আফগানিস্তানে রাষ্ট্র গড়তে নয়, আল কায়দার বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়েছিল আমেরিকা।
সোমবার জাতির উদ্দেশে ভাষণে বাইডেন বলেন, “আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত সঠিক। আমার আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প তালিবানের সঙ্গে চুক্তি করেছেন। সেই সময় আফগানিস্তানে ১৫ হাজার মার্কিন সৈনিক ছিল। প্রায় ২০ বছরের লড়াই থেকে আমি শিখেছি যে সেদেশ থেকে সেনা সরানোর এটাই সঠিক সময়। আফগানিস্তানে রাষ্ট্র গড়তে নয়, আল কায়দার বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়েছিল আমেরিকা। কেন্দ্রীয় গণতন্ত্র গড়া আমাদের অভিযানের উদ্দেশ্য কখনওই ছিল না। প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমি মনে করি অতীতের কথা বাদ দিয়ে ২০২১ সালে উপস্থিত হওয়া হুমকির দিকে নজর দিতে হবে।” এদিকে, সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের পক্ষে জোরাল সওয়াল করলেও আমেরিকায় অনেকের কাছেই বাইডেন এখন ভিলেন। বিগত ২০ বছরে আফগানিস্তানে সন্ত্রাসবিরোধ লড়াই ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নামে প্রাণ দিয়েছেন অন্তত আড়াই হাজার মার্কিন সৈনিক। বোমার আঘাতে পঙ্গু হয়ে দেশে ফিরেছেন আরও কয়েক হাজার। আর সেই সমস্ত ত্যাগ কার্যত ধুলোয় মিশে গেল বাইডেনের সিদ্ধান্তে।
উল্লেখ্য, নিজের বয়ানে বাইডেন স্বীকার করে নিয়েছেন যে ঘটনা এত দ্রুত এ ভাবে মোড় নেবে, তা ভাবা যায়নি। সদ্য ক্ষমতাচ্যুত আফগান প্রেসিডেন্ট আশরফ ঘানি তালিবানের বিরুদ্ধে লড়বেন বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু বাস্তবে তা ঘটেনি। তবু আফগান জনসাধারণের প্রতি পূর্ণ সহমর্মিতা এবং সাহায্যের আশ্বাস শুনিয়েও বাইডেন নিজের যুক্তিতে অনড় থেকে বললেন, “সেনা সরানোর সিদ্ধান্ত কার্যকর করতেই হত।” তাঁর কথায়, “আমেরিকা অতীতে অনেক ভুল করেছে। সেই ভুল টেনে চলারও সীমা আছে।” সবমিলিয়ে, বিবর্তনের পথে ফের পিছিয়ে গেল আফগানিস্তান (Afghanistan)। দু’দশকের গণতন্ত্রে ‘মুক্ত হাওয়া’র আস্বাদ পাওয়া আফগানরা আবার সেই তিমিরে। সোভিয়েত পুতুল নাজিবুল্লার নিয়তি এড়িয়ে ওমানে আশ্রয় নিয়েছেন আশরফ ঘানি। কাবুলের পথে এখন খবরদারি করছে কালশনিকভ হাতে তালিবান জঙ্গিরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.