সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কয়েক দশকের শৈত্য গলিয়ে সদ্য নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প টেলিফোনে সরাসরি কথা বললেন তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে৷ ১৯৭৯-এ দুই দেশের মধ্যে সমস্ত কূটনৈতিক ও দ্বিপাক্ষিক চুক্তি ভেঙে যাওয়ার পর সম্ভবত এই প্রথম কোনও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওই স্বশাসিত দ্বীপের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বললেন৷ অন্যদিকে, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপে বেজায় চটেছে চিন৷ চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং য়ি শনিবার এই ঘটনাকে ‘তাইওয়ানের চালাকি’ বলে উল্লেখ করেছেন৷ তিনি জানিয়েছেন, এর ফলে মার্কিন-চিন সম্পর্কে কোনও প্রভাব পড়বে না বলেই মনে করছে বেজিং৷
চিন মনে করে, তাইওয়ান স্রেফ চিন থেকে বেরিয়ে যাওয়া একটি প্রদেশ মাত্র। যেটি ভবিষ্যতে কোনও একদিন ফের চিনের সঙ্গেই যুক্ত হবে। তাইওয়ান নিজেকে কীভাবে দেখে সেটার উত্তর অবশ্য এতটা সরল নয়। প্রায় ২৩ মিলিয়ন জনসংখ্যা বিশিষ্ট দ্বীপটির কোনও কোনও দল এবং জনগণের একটি অংশ তাইওয়ানকে একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে দেখতে চান। বর্তমানে তাইওয়ানকে একটি বিচ্ছিন্ন প্রদেশ হিসাবে উল্লেখ করে চিন৷ তাইওয়ানের সঙ্গে চিনের শত্রুতা সুবিদিত৷ এমনকী, তাইওয়ানের দিকে চিন কয়েকশো মিসাইল তৈরি রেখেছে বলেও বারবার দাবি করা হয়েছে বেজিংয়ের তরফে৷ সেই দ্বীপের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলায় তাই বেজায় চটেছে চিনা শীর্ষ নেতৃত্ব৷ আমেরিকার প্রতি চিন কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছে, ‘চিনের এক রাষ্ট্র নীতির প্রতি অবিচল থাকলে তবেই চিন-মার্কিন সম্পর্ক ভবিষ্যতে মজবুত থাকবে৷ আশা করা হচ্ছে, সেই সম্পর্ক কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সেই সম্পর্কের উপর আঘাত হানবে না৷’
The President of Taiwan CALLED ME today to wish me congratulations on winning the Presidency. Thank you!
— Donald J. Trump (@realDonaldTrump) December 3, 2016
১৯৭৯-থেকে চিনের ‘এক রাষ্ট্রনীতি’র প্রতি সমর্থন জানিয়ে এসেছে আমেরিকা৷ তাইওয়ানের কমিউনিস্ট সরকারের প্রতি অনাস্থা দেখিয়ে বেজিংয়ের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক শুরু করে ওয়াশিংটন৷ তবে বেজিংকে মান্যতা দিলেও তাইওয়ানের সঙ্গে তলে তলে যোগাযোগ রেখেই চলেছিল আমেরিকা৷
Interesting how the U.S. sells Taiwan billions of dollars of military equipment but I should not accept a congratulatory call.
— Donald J. Trump (@realDonaldTrump) December 3, 2016
ট্রাম্পের দফতর থেকে শুক্রবার এক বিবৃতিতে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং ওয়েনের সঙ্গে ট্রাম্পের টেলিফোনে কথোপকথনের খানিকটা অংশ প্রকাশ করা হয়েছে৷ সেখানে বলা হয়েছে, তাইওয়ান ও আমেরিকার মধ্যে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত একাধিক প্রসঙ্গে আলোচনা হয়েছে৷ ট্রাম্প নিজেও সে কথা টুইট করে জানান৷ ট্রাম্প টুইট করেছেন, “তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট আমাকে নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ায় অভিনন্দন জানিয়েছেন৷” পরে ট্রাম্প জানান, তাইওয়ানের সঙ্গে তাঁর টেলিফোনে কথা নিয়ে এত আলোচনা কেন হচ্ছে তিনি বুঝতে পারছেন না৷ যে দেশকে আমেরিকা কয়েক বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রি করে, তাদের কাছ থেকে শুভেচ্ছাবার্তা গ্রহণ করতে আপত্তি কোথায়?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.