সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গৃহযুদ্ধে জর্জরিত আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য আমেরিকাকেই ঘুরিয়ে দায়ী করলেন আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরফ ঘানি (Ashraf Ghani)। আমেরিকার ‘আচমকা’ সেনা প্রত্যাহারের জন্যই আজ দেশের এই অবস্থা বলে তোপ দাগেন তিনি।
সোমবার আফগানিস্তানের সংসদে দেওয়া ভাষণে দেশের বর্তমান অবস্থার জন্য পরোক্ষে আমেরিকাকেই দায়ী করেছেন প্রেসিডেন্ট ঘানি। তবে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন যে আগামী ছয় মাসের মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার মতো পরিকল্পনা সরকারের হাতে রয়েছে। এদিন ঘানি বলেন, “আফগানিস্তান থেকে আচমকা আন্তর্জাতিক সেনাদের চলে যাওয়ার সিদ্ধান্তে এহেন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বিগত তিন মাস ধরে আমরা একটা অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছি। তবে আগামী ছয় মাসে পরিস্থিটি নিয়ন্ত্রণে আনার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের হাতে। এবং আমেরিকাও এতে মদত দেবে। দেশে ক্রমে খারাপের দিকে যাওয়া নিরাপত্তা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে তালিবান শান্তির পথে হাঁটবে না।” তিনি আরও বলেন যে, অন্য জেহাদি সংগঠনগুলির সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখেছে তালিবান। একইসঙ্গে, মহিলা ও সমাজকর্মীদের উপর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে জঙ্গি সংগঠনটি। সহজ কথায় শান্তিচুক্তি বিফল হয়েছে বলেই মনে করছেন প্রেসিডেন্ট ঘানি।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাতারের রাজধানী দোহায় তালিবানের শান্তি চুক্তি সম্পন্ন হয়। চুক্তির শর্ত মেনেই আফগানিস্তানের হেলমন্দ ও হেরাত প্রদেশের সেনাঘাঁটি থেকে মার্কিন ফৌজ বিদায় নেয়। তবে আমেরিকার সঙ্গে তালিবানদের শান্তি চুক্তি হওয়ার পরেও তাই বিক্ষিপ্ত ভাবে কিছু হিংসার ঘটনা ঘটে। ক্রমাগত এই চাপের মুখে তালিবানদের প্রতি নরম মনোভাব দেখাতে বাধ্য হয় আফগান সরকার। কিন্তু চলতি বছর আফগানিস্তান থেকে ফৌজ প্রত্যাহার করছে আমেরিকা। নির্দিষ্ট সময়ের আগে অর্থাৎ সেপ্টেম্বর মাসের আগেই প্রায় ৯৮ শতাংশ মার্কিন সেনা সরিয়ে ফেলেছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। আর মার্কিন সেনা সরতেই দেশটির প্রায় ৮০ শতাংশ এলাকা দখল করার দাবি করেছে তালিবান (Taliban)। আফগান সেনাও পালটা হামলা চালিয়ে এলাকা পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানিয়েছে কাবুল প্রশাসন। ফলত যুদ্ধ পরিস্থিতি চলছে সেখানে। কয়েকদিন আগেই এক রিপোর্টে সাফ বলা হয় যে আফগান সেনাদের বিরুদ্ধে লড়তে তালিবানের হাত শক্ত করছে পাকিস্তান (Pakistan)। হাজার দশেক পাক সেনা আফগানিস্তানে গিয়ে তালিবানদের সঙ্গে যৌথ আক্রমণ শানিয়েছে। এদিকে পাক গোয়েন্দা সংস্থা ISI নির্দেশ দিয়েছে সেদেশে অবস্থিত ভারতীয় বসতি ও পরিকাঠামোগুলি আগে ধ্বংস করার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.