সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আদালতের নির্দেশে ইস্তানবুলের ষষ্ঠ শতাব্দীর বিখ্যাত স্থাপত্য হেগিয়া সোফিয়া (Hagia Sophia) মিউজিয়ামকে মসজিদে পরিবর্তিত করছে তুরস্ক সরকার। এরদোগান প্রশাসনের এহেন পদক্ষেপে বিশ্বজুড়ে বয়ে গিয়েছে নিন্দার ঝড়। এবার এই সিদ্ধান্তে দুঃখপ্রকাশ করলেন পোপ ফ্রান্সিস।
রবিবার প্রার্থনার পর খ্রিস্টান বিশ্বের সবথেকে বড় ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস বলেন, “সাগরের ঢেউগুলির সঙ্গে আমার চিন্তা পাড়ি দিচ্ছে সুদূর ইস্তানবুলে। যতবার হেগিয়া সোফিয়ার কথা মনে পড়ছে ততবার প্রচণ্ড মন খারাপ হচ্ছে আমার।” এদিকে, তুরস্কের এই সিদ্ধান্তে প্রবল জানিয়েছে ফ্রান্স ও গ্রিস। মিউজিয়ামটিকে মসজিদে পরিবর্তিত করে রাজনৈতি উদ্দেশ্যপূরণে দেশের ইসলামিকরণ করছেন প্রেসিডেন্ট রেসেপ তায়েপ এরদোগান বলেও অভিযোগ করছেন অনেকে। বিবিসি’র রিপোর্ট অনুযায়ী, সরকারের সিদ্ধান্তের পর হেগিয়া সোফিয়ায় প্রথম নমাজ পাঠের জন্য বিভিন্ন নিউজ চ্যানেলে সম্প্রচার করা হয়েছে। এমনকী স্থাপত্যের বাইরে বহু মানুষ জড়ো হয়ে আল্লা-হু-আকবর ধ্বনি তোলেন বলে জানা গিয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে।
ষষ্ট শতাব্দীতে (৫৩২-৫৩৭) তৎকালীন বাইজেন্টাইন সম্রাট জাস্টিনিয়ান প্রথমের নির্দেশে কনস্ট্যান্টিনোপল বা আজকের ইস্তানবুলে নির্মিত হয় হেগিয়া সোফিয়া গির্জা। প্রায় ৯০০ বছর খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের প্রার্থনার এই ঐতিহাসিক কেন্দ্রটিকে ১৪৫৩ সালে ইস্তানবুল দখলের পর মসজিদে পরিণত করে অটোমান সাম্রাজ্য।
১৯৩৪ সালে বিপ্লবের পর আধুনিক তুরস্কের রূপকার সেক্যুলার নেতা মুস্তাফা কামাল আতাতুর্কের জমানায় এই হেগিয়া সোফিয়াকে মিউজিয়াম হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। দ্য ইনডিপেন্ডেন্ট-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, তারপর থেকে এটি তুরস্কের গর্বের সঙ্গে যুক্ত একটি স্থাপত্য। ইস্তানবুলের অন্যতম পর্যটনস্থল হিসাবে হেগিয়া সোফিয়া পরিচয় পায়। প্রতি বছর ৩৭ লক্ষ মানুষ, মুসলিম ও খ্রিস্টান উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ এই মিউজিয়াম পরিদর্শনে আসেন। কিন্তু সরকারের নির্দেশে, বর্তমানে হেগিয়া সোফিয়া মুসলিমদের প্রার্থনাস্থলে পরিণত হতে চলেছে। প্রায় ৯০ বছর পর এখানে ফের নমাজ পড়বেন ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.