Advertisement
Advertisement

Breaking News

সিস্টার মরিয়মকে সেন্টহুড

মাদার টেরিজার পর সিস্টার মরিয়ম, ভ্যাটিকানে ‘সন্ত’ উপাধি আরেক ভারতীয় সন্ন্যাসিনীকে

কেরলের সন্ন‌্যাসিনী-সহ ৪ জনকে সর্বোচ্চ সম্মান জ্ঞাপন পোপ ফ্রান্সিসের।

Pope Francis elevates Indian nun Mariam Thresia to sainthood
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:October 14, 2019 2:44 pm
  • Updated:October 14, 2019 2:44 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কেরলের সিরীয়-মালাবার চার্চের সন্ন্যাসিনী মরিয়ম থ্রেসিয়াকে খ্রিস্টধর্মের সর্বোচ্চ মর্যাদা ‘সন্ত’ হিসেবে ভূষিত করলেন পোপ ফ্রান্সিস। ত্রিশূরের ‘কংগ্রিগেশন অফ দ‌্য সিস্টারস অফ দ‌্য হোলি ফ‌্যামিলি’র প্রতিষ্ঠাতা সিস্টার থ্রেসিয়াকে ‘সেন্টহুড’ ঘোষণার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল ১৯৮২ সাল থেকেই। রবিবার তা চূড়ান্ত রূপ পেল রোমের ভ্যাটিকান সিটির সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকায় আয়োজিত একটি বিশেষ অনুষ্ঠানে।

[ আরও পড়ুন: জাপানে তাণ্ডব চালিয়ে শক্তি হারাচ্ছে টাইফুন হাগিবিস]

থ্রেসিয়া-সহ খ্রিস্ট ধর্মের আরও চার সন্ন‌্যাসী ও সন্ন‌্যাসিনীকে ‘সন্ত’ ঘোষণা করা হয় এদিন। ইংল্যান্ডের কার্ডিনাল জন হেনরি নিউম্যান, সুইজারল্যান্ডের লেউওম‌্যান মার্গারিটা বেইস, ব্রাজিলের সিস্টার ডুলসে লোপেজ এবং ইতালির সিস্টার জিউসেপিনা ভানিনি। ‘ক্যাননাইজেশন’ অনুষ্ঠানের মাধ‌্যমে সম্পন্ন হয় এই পাঁচ সন্তের মর্যাদা জ্ঞাপন প্রক্রিয়া। হাতে আঁকা পাঁচজন নতুন সন্তের বিশাল মাপের ছবি অনুষ্ঠান চলাকালীন ঝুলিয়ে দেওয়া হয় রোমের এই সুবিশাল আর প্রাচীন ব্যাসিলিকার দেওয়ালে। ল‌াতিন ভাষায় স্তব গেয়ে বন্দনা করা হয় সন্তদের। অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন হাজারেও পুণ্যার্থী। ভারতের তরফেও হাজির ছিল বিশেষ প্রতিনিধি দল। বিদেশ দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী ভি মুরলীধরণের নেতৃত্বে অনুষ্ঠানে যোগ দেন তাঁরা।
খ্রিস্ট ধর্মে সন্তরা হিন্দু মুনি-ঋষি, শিখদের গুরু, বৌদ্ধদের বোধিসত্ত্ব বা মুসলিমদের ওয়ালিদের সমতুল্য। তাই তাঁদের ওই মর্যাদা প্রদান করার একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া রয়েছে। ক্যাথলিক মত অনুযায়ী, ‘ঐশ্বরিক ক্ষমতা’র অধিকারীরাই সন্ত উপাধি লাভ করতে পারেন। কারণ, তাঁদের মতে পৃথিবীতে সন্তরা ঈশ্বরের প্রতিনিধি হয়েই আসেন। মৃত্যুর পরই মেলে এই স্বীকৃতি। পোপের কাছ থেকে অন্তত দু’টি অলৌকিক ক্ষমতার স্বীকৃতি মিললে, তবেই ‘সন্ত’ মর্যাদা পাওয়া যায়। স্বয়ং পোপ ভ্যাটিকানে ‘ক্যাননাইজেশন’ পদ্ধতির মাধ্যমে তাঁকে ‘সন্ত’ বলে ঘোষণা করেন।
মরিয়মের আগে ২০১৬ সালে মাদার টেরিজাকে ‘সন্ত’ উপাধি প্রদান করেন ভাটিকানের পোপ ফ্রান্সিস। তারপর থেকে তিনি ‘সেন্ট টেরিজা’ বলেই খ্যাত। তাঁর কার্যকালেও দুটি অলৌকিক ক্ষমতার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে বলে এই সর্বোচ্চ সম্মান দেওয়া হয়েছে। মরিয়ম থ্রেসিয়ার ক্ষেত্রে তাঁর দ্বিতীয় ঐশ্বরিক ক্ষমতাটির প্রমাণ মেলে ২০০৯ সালে। একটি অসুস্থ শিশুর বুকে তাঁর ছবি রাখার পর শিশুটি অবিশ্বাস‌্যভাবে বেঁচে যায়। ঘটনাটির বিচার করে তাঁকে ‘সন্ত’ ঘোষণার কথা নিশ্চিত করে। রবিবার ভ্যাটিকান শহরের মরিয়ম থ্রেসিয়াকে ‘সন্ত’ ঘোষণা করার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ওই শিশু ও তাঁর চিকিৎসকদের দলটিও।
১৮৭৬ সালের ২৬ এপ্রিল কেরলের ত্রিশূর জেলার পুথেনচিরায় জন্ম মরিয়ম থ্রেসিয়ার। সিরীয়-মালাবার ক্যাথলিক চার্চের সন্ন্যাসিনী হিসেবে আজীবন মানবসেবায় নিয়োজিত ছিলেন তিনি। ১৯২৬ সালের ৮ জুন কুঝিকাট্টুসসেরিতে প্রয়াত হন তিনি। তাঁর সম্পর্কে অনেক অলৌকিক ঘটনাই প্রচলিত। তাঁর শরীরে ‘পবিত্র আঘাত’ বা ‘হোলি উনড’ দেখা দিয়েছিল বলে জানা যায়। ক‌্যাথলিক বিশ্বাসে এই আঘাতকে যিশু খ্রিস্টের ক্রুশবিদ্ধ করার আঘাত হিসাবে মানা হয় এবং পবিত্র আত্মার শরীরে এই আঘাতের চিহ্ন ফুটে ওঠে বলে বিশ্বাস। ১৯৯৯ সালের জুন মাসে তাঁকে সন্ত ঘোষণার প্রাথমিক প্রক্রিয়া হিসেবে ‘আশীর্বাদধন্য’ বলে ঘোষণা করা হয়। ২০০০ সালের ৯ এপ্রিল তৎকালীন পোপ দ্বিতীয় সেন্ট জন পল তাঁকে বিটিফাই করেন। রবিবার চূড়ান্ত প্রক্রিয়ায় ক‌্যাননাইজেশনের মাধ‌্যমে সন্ত হিসাবে ঘোষণা করা হয় মারিয়ম থ্রেসিয়াকে।

Advertisement

[ আরও পড়ুন: ভাঁড়ে মা ভবানী, রাষ্ট্রসংঘে বন্ধ করা হল এসকেলেটর-কুলার]

সম্প্রতি ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সিস্টার মরিয়ম থ্রেসিয়ার ‘সন্ত’ হওয়ার কথা বলে জানান, ভারতবাসী হিসাবে তিনি গর্বিত। তিনি বলেন, সন্ন‌্যাসিনী মরিয়ম থ্রেসিয়া তাঁর ৫০ বছরের জীবনে মানবজাতির স্বার্থে অনেক কাজ করেছেন। তাই প্রত্যেকটি ভারতবাসীর এই সিদ্ধান্তে খুশি হওয়া উচিত।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement