সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সেনা বনাম গণতান্ত্রিক সরকার। পাকিস্তানে এই সংঘাত নতুন কিছু নয়। সাম্প্রতিক অতীতে ইমরান খান প্রশাসনের সঙ্গে ফৌজের দড়ি টানাটানি নিয়ে কম জলঘোলা হয়নি। এহেন পরিস্থিতিতে কার্যত বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জানারেল কামার জাভেদ বাজওয়া। তাঁর তোপ, রাজনৈতিক ব্যর্থতার জন্যই বাংলাদেশ যুদ্ধে পরাজিত হয়েছিল পাক সেনা।
বুধবার রাওয়ালপিন্ডিতে সেনাবাহিনীর একটি অনুষ্ঠানে জেনারেল বাজওয়া বলেন, “আমি কিছু তথ্য শুধরে দিতে চাই। পূর্ব-পাকিস্তানে আমাদের রাজনৈতিক হার হয়েছিল। সেটা কোনওভাবেই সামরিক পরাজয় ছিল না।” ইসলামাবাদ-রাওয়ালপিন্ডি সংঘাত আরও উসকে পাক সেনাপ্রধান বলেন, “সেনাবাহিনীর শীর্ষ নেতৃত্বকে কালিমালিপ্ত করা হয়েছিল। আমি আবারও বলছি, দেশের স্বার্থের সঙ্গে কখনওই আপোস করবে না সেনাবাহিনী। আপনারা কি বিশ্বাস করেন যে বিদেশি ষড়য়ন্ত্রের বিরুদ্ধে সেনা চুপ করে থাকবে। যারা ফৌজ ও দেশের মানুষের মধ্যে ফাটল ধরাতে চাইছে তারা সফল হবে না।”
১৯৭১ সালে ভারত-পাক যুদ্ধে লজ্জাজনক হার হয় পাকিস্তানি (Pakistan) ফৌজের। ১৬ ডিসেম্বর ভারতীয় সেনার কমান্ডার জগজিৎ সিং আরোরার কাছে অস্ত্র নামিয়ে রাখেন পূর্ব-পাকিস্তানে পাক সেনানায়ক এ এ কে নিয়াজি। ঢাকায় আত্মসর্মপণ করে ৯২ হাজার পাক সেনা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আত্মসর্মণের এমন বিপুল নজির আর নেই। ওই যুদ্ধে নতুন যুগের সূচনা করে জন্ম নেয় বাংলাদেশ।
আজও সেই ক্ষত লেহন করে চলেছে পাক সেনা। তবে লজ্জা ঢাকতে বাজওয়ার দাবি, “৯২ হাজার নয়, তখন পূর্ব পাকিস্তানে মাত্র ৩৪ হাজার পাক সেনা ছিল। আড়াই লক্ষ ভারতীয় সেনা ও দু’ লক্ষ মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করেছে তারা। দেশ আজও সেই বলিদানের স্বীকৃতী দেয়নি।”
উল্লেখ্য, আর কয়েকদিন পরেই অবসর নিচ্ছেন জেনারেল বাজওয়া। দেশের নতুন সেনাপ্রধান হিসাবে জেনারেল আসিম মুনিরের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। পাক সেনা তথা বকলমে গোটা দেশ চালানোর ভার এখন তাঁর কাঁধেই। প্রসঙ্গত, সম্পর্কে তিক্ততার জেরে আসিম মুনিরকে(Asim Munir) আইএসআই প্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দেন তৎকালীন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। বিদায়ী সেনাপ্রধান বাজওয়ার কাছের লোক বলেও পরিচিত তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.