সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ককপিটে বসে বিমান চালক দিব্যি সুখটান দিচ্ছিলেন। সামান্য কয়েক মুহূর্তের অসাবধানতার জন্য বিমান অবতরণের সময় ভুল হয়ে গিয়েছিল বিমান চালকের। শুধু তাই নয়, ককপিটে থাকা অন্য বিমানকর্মীদের দায়িত্বে অবহেলা। এই সকল কারণেই গত বছর মার্চে নেপালের ত্রিভুবন বিমানবন্দরে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের বম্বাইডার ইউবিজি-২১১ বিমানটি অবতরণের সঙ্গে সঙ্গে ভেঙে যায়। বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল ৫১জনের। সোমবার তদন্তকারী দলের রিপোর্টে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে।
মৃতদের তালিকায় ২৮ জন বাংলাদেশি, ২২ জন নেপালের বাসিন্দা। বিমানের চালক ও সহকারী চালকেরও মৃত্যু হয় ঘটনাস্থলেই। দুর্ঘটনায় ২০ জন জখম হয়েছিলেন। তদন্তকারী দল রবিবার ওই রিপোর্ট নেপালের সংস্কৃতি ও পর্যটন দপ্তরের কাছে জমা দিয়েছে। যদিও বিমানের অপারেশন দপ্তর ককপিটের নিরাপত্তাভঙ্গের ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারেনি বলে তদন্ত রিপোর্টে উঠে এসেছে। তদন্তকারী দল জানিয়েছে, অন্তর্দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সব ধরনের বিমানেই ধূমপান একেবারে নিষিদ্ধ। কিন্তু তদন্ত রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, মাত্র এক ঘণ্টার বিমানযাত্রার পুরোটাই চালক ও সহকারী চালক পৃথুলা রশিদ ধুমপান করেছিলেন। শুধু তাই নয়, বেশিরভাগ সময় মহিলা সহকর্মীদের নিয়ে আলোচনায় ব্যস্ত ছিলেন। তদন্ত রিপোর্টে সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে বিমান চালক আবিদ সুলতানের শারীরিক অবস্থার উপর। কেননা, নেপালের পর্যটনমন্ত্রী রবীন্দ্র অধিকারী জানিয়েছেন, তদন্তকারী দলের ৪৩ পাতার রিপোর্ট এসে পৌঁছেছে। তিনি উল্লেখ করেছেন, মানসিক হতাশার কারণে ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশের বায়ুসেনার চালকের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় তাঁকে। ২০০২ সাল থেকে আবিদকে কেবলমাত্র যাত্রীবাহী বিমান চালানোর জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। সেক্ষেত্রেও শর্ত রাখা হয়েছিল, তা হল আবিদের শারীরিক ও মানসিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করার পরই যেন বিমান চালানোর ছাড়পত্র দেওয়া হয়। কিন্তু দুঃখের বিষয়, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ আবিদের অতীত শারীরিক রিপোর্ট একবারও দেখেনি বলেই দাবি করেছেন নেপালের পর্যটনমন্ত্রী।
শুধুমাত্র পাইলটের ধুমপানের কারণেই দুর্ঘটনা ঘটেছিল এমনটা মানতে রাজি নন তদন্তকারীরা। তাঁদের দাবি, সঠিক অক্ষাংশ মেনে রানওয়েতে নামতে পারেনি বিমানটি। ঝোড়ো হাওয়ায় পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠেছিল। কিন্তু বিমান চালক সতর্ক থাকলে এটা হত না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.