ইমরান খান
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কয়েকদিন আগে লাহোর হাইওয়ের উপরে ফ্রান্সের এক যুবতীকে তাঁর দুই সন্তানের সামনেই গণধর্ষণ করে একদল দুষ্কৃতী। পুলিশের কাছে এই বিষয়ে অভিযোগ জানাতে গেলে তারা নির্যাতিতাকেই এর জন্য দায়ী করে। এই ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসার পরেই লাহোরের রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের সদস্যরা। পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে বুঝতে পেরে ইতিমধ্যে দুই ধর্ষককে গ্রেপ্তারও করেছে পাকিস্তানের পুলিশ। এই নিয়ে টানাপোড়েনের মধ্যেই ধর্ষকদের প্রকাশ্যে ফাঁসি দেওয়ার বা কেমিক্যাল ব্যবহার করে তাদের নপুংসক বানানোর প্রস্তাব দিলেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান (Imran Khan)।
পাকিস্তানের একটি সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে সোমবার ইমরান বলেন, ‘এই ধরনের জঘন্য যৌন অপরাধগুলির ক্ষেত্রে দোষী সাব্যস্তদের প্রকাশ্যে ফাঁসি দেওয়া উচিত। কিন্তু, এই ধরনের পদক্ষেপ নিলে তা অন্য দেশগুলির সঙ্গে থাকা বাণিজ্যিক সম্পর্কে প্রভাব ফেলতে পারে। পড়তে হতে আন্তর্জাতিক মহলের ক্ষোভের মুখেও। কারণ, ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলি অনেকেই মৃত্যুদণ্ডের বিরোধী।’
এরপরই এই ধরনের অপরাধে যুক্ত ধর্ষকদের যৌন ক্ষমতা নষ্ট করার পক্ষে সওয়াল করেন তিনি। বলেন, ‘ আমি মনে করি এই ধরনের অপরাধীদের উপর কেমিক্যাল (chemical) প্রয়োগ করে তাদের যৌন ক্ষমতা নষ্ট করে দেওয়া উচিত। বিশ্বের অনেক দেশেই এই শাস্তি দেওয়া হয় বলে আমি পড়েছি।’
তাঁর শাসনকালে পাকিস্তানে যেভাবে নারী নির্যাতনের ঘটনা বেড়েছে তাতে ইমরানের এই বক্তব্যকে গুরুত্ব দিতে নারাজ ওয়াকিবহাল মহল। তাদের মতে, এই সবই লোক ভোলানো কথা। দেশের কী অবস্থা তা ইমরান খান ভালভাবেই জানেন। তাঁর কথা মতো ব্যবস্থা নিলে পাকিস্তানের বেশিরভাগ মানুষই নপুংসক হয়ে যাবে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত ১১ সেপ্টেম্বর রাতে দুই সন্তানকে নিয়ে গাড়ি চালিয়ে লাহোর (Lahore) -এর উপর দিয়ে গুজরানওয়ালা প্রদেশে যাচ্ছিলেন ফ্রান্সের ওই যুবতী। লাহোর হাইওয়ে দিয়ে যাওয়ার সময় আচমকা তাঁর গাড়ির তেল ফুরিয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে স্বামীকে ফোন করে নিজের বিপদের কথা জানান ওই যুবতী। তারপর স্বামীর পরামর্শ মতো পুলিশকে ফোন করে সাহায্য করার আবেদন জানান।
কিন্তু, পুলিশ আসার আগেই সেখানে ১০ থেকে ১৫ জন যুবক এসে হাজির হয়। তারপর গাড়ির জানলার কাঁচ ভেঙে ওই যুবতীকে বাইরে বের করে তাঁর দুই সন্তানের সামনেই একে একে ধর্ষণ করে। বেশ কিছুক্ষণ ধরে এই পাশবিক ঘটনা ঘটলে পুলিশের কোনও টহলদারি ভ্যানকে দেখা যায়নি। এদিকে নিজেদের বিকৃত লালসা চরিতার্থ করার পর দুষ্কৃতীরা ওই যুবতীর তিনটি এটিএম কার্ড ও সঙ্গে থাকা টাকা ও গয়না নিয়ে পালিয়ে যায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.