Advertisement
Advertisement

Breaking News

কড়া নিরাপত্তায় শুরু পাকিস্তানের ভোটগ্রহণ, মসনদ কি পাবেন ইমরান?

৮৫ হাজার বুথের নিরাপত্তায় মোতায়েন ৩,৭১,৩৮৮ জন সেনা।

Pakistani general election 2018 starts
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:July 25, 2018 9:02 am
  • Updated:July 25, 2018 9:48 am  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শুরু হল পাকিস্তানে ভোটগ্রহণ। নজিরবিহীন কড়া নিরাপত্তায়, আশা-আশঙ্কার দোলাচলে এবার ভোট হচ্ছে সেখানে। ভোটপর্ব সুষ্ঠুভাবে মেটাতে দেশজুড়ে মোতায়েন করা হয়েছে বিপুল সেনা। ভোট হচ্ছে তদারকি সরকারের তত্ত্বাবধানে। তদারকি সরকারের প্রধানমন্ত্রী নাসিরুল মুল্ক। কিন্তু সবাই জানেন নাসিরুল মুল্ক আনুষ্ঠানিক প্রধান মাত্র। গোটা নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ ও দেখভাল করছে পাকিস্তানের আদি অনন্তকালের অভিভাবক সেনাবাহিনী। কয়েকটি রাজনৈতিক দলের দাবি, সংসদীয় গণতন্ত্রের ভাগ্য নিয়ন্তা রাওয়ালপিন্ডির কর্তারাই। তাঁরাই শেষ পর্যন্ত ঠিক করবেন কে হবেন ওয়াজির-এ-আজম (পাক প্রধানমন্ত্রী)।

এই অবস্থায় নবম সাধারণ নির্বাচনে দেশজুড়ে ৮৫ হাজার বুথের নিরাপত্তায় মোতায়েন করা হয়েছে ৩,৭১,৩৮৮ জন সেনা। সেনা ও পুলিশ, হোমগার্ড মিলিয়ে মোট নিরাপত্তারক্ষী সাড়ে সাত লক্ষ। অতীতে কোনও সাধারণ নির্বাচনে এত সেনা মোতায়েন করা হয়নি। ১৩ জুলাই বালুচিস্তানে আওয়ামি ন্যাশনাল পার্টির জনসভায় তালিবানের জোড়া আত্মঘাতী হামলায় নিহত হন ১৫১ জন। এছাড়া ভোটের মুখে দেশজুড়ে কয়েকটি ছোট-বড় হামলা চালায় তেহরিক-ই-তালিবান ও ইসলামিক স্টেট। তাই কোনও ঝুঁকি নিতে নারাজ নির্বাচন কমিশন।

Advertisement

কমিশন জানিয়েছে, পাক পার্লামেন্ট ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে মোট আসন ৩৪২। তার মধ্যে ৭০টি সংরক্ষিত। ২৪২টি সাধারণ আসনের জন্য লড়ছেন মোট ৩৪৫৯ জন প্রার্থী। মহিলা প্রার্থী ১৭১ জন। রয়েছেন কয়েক জন রূপান্তরকামী এবং বৃহন্নলা প্রার্থীও। মোট ভোটার প্রায় ১০ কোটি ৬০ লক্ষ। এর মধ্যে ৫ কোটি ৯২ লক্ষ পুরুষ ভোটার। ৪ কোটি ৬৭ লক্ষ মহিলা ভোটার। ভারতের মোস্ট ওয়ান্টেড সন্ত্রাসবাদী নেতা হাফিজ সইদের দল-সহ বহু মৌলবাদী ও জঙ্গি সংগঠন নানা দলের ছত্রছায়ায় ভোটে লড়ছে। তারা পাকিস্তান জুড়ে সাড়ে চারশোর বেশি প্রার্থী দিয়েছে। তারাই এবারের ভোটে ‘ডিসাইডিং ফ্যাক্টর’। জনমত সমীক্ষা বলছে, ইমরানের দলের সঙ্গে মৌলবাদীরা জোট গড়ে ক্ষমতায় আসতে পারে। সাধারণ নির্বাচনের সঙ্গে পাকিস্তানের চারটি প্রদেশের আইনসভারও ভোটগ্রহণ হবে বুধবার। ৫৭৭টি অসংরক্ষিত বিধানসভা আসনে সাড়ে আট হাজার প্রার্থী লড়ছেন।

[২৬/১১ হামলার রাজসাক্ষী ডেভিড হেডলি কি মৃত? জল্পনা তুঙ্গে]

৩৪২টি আসনের মধ্যে শুধু পাঞ্জাব প্রদেশেই রয়েছে ১৮৩টি আসন। পা়ঞ্জাব প্রদেশে বাস করেন পাকিস্তানের মোট জনসংখ্যার ৫০ শতাংশের বেশি মানুষ। এই রাজ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী দল নওয়াজ শরিফ-শাহবাজ শরিফের পাকিস্তান মুসলিম লিগ(নওয়াজ) বা পিএমলএন। সিন্ধু প্রদেশে সবচেয়ে প্রভাবশালী বেনজির ভুট্টোর স্মৃতিবিজড়িত পাকিস্তান পিপলস পার্টি(পিপিপি)। এই দলের প্রধান মুখ হলেন বেনজির পুত্র বিলাবল ভুট্টো।

অন্যদিকে, সন্ত্রাসে দীর্ণ ও উপজাতি অধ্যুষিত খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশ এবং ‘ফাটা’ এলাকায় প্রাধান্য রয়েছে ইমরান খানের পাকিস্তান—তেহরিক—ই—ইনসাফ (পিটিআই) দলের। এবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী পদের বড় দাবিদার ইমরান। তাঁর পিছনে পুরো সমর্থন রয়েছে পাক সেনা এবং আইএসআইয়ের। বলা ভাল, রাওয়ালপিন্ডির বাজি তিনিই। খাকি উর্দিধারীদের একমাত্র পছন্দের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী তিনিই। তাঁর পথ  নিষ্কণ্টক করতে সপরিবার নওয়াজকে ভোট না মিটে যাওয়া পর্যন্ত জেলেই রেখে দিয়েছে ‘সেনা মদতপুষ্ট আদালত’। দু’ দিন আগেই ইসলামাবাদ  হাইকোর্টের বিচারপতি অভিযোগ করেছেন, সেনাবাহিনীর নির্দেশেই নওয়াজ শরিফের বিরুদ্ধে রায় দিতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা। সেনার চাপেই জামিন পাননি সকন্যা নওয়াজ।

এই অবস্থায় ফের কাশ্মীর তাস খেললেন ইমরান। ভোটের আগের দিন ইমরানের এই কাশ্মীর ইসু্যকে সামনে আনার পিছনে সেনাবাহিনীর সরাসরি প্রভাব ও নির্দেশ দেখছে ওয়াকিবহাল মহল। কারণ জাতীয়তাবাদী বুলি আউড়ে ইমরান যেমন দেশের মানুষের কাছে হিরো সাজলেন তেমনি ভারত বিরোধী গরম কথা বলে সেনাবাহিনীর কাছেও নিজের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ালেন। ইমরান বলেছেন, “উপমহাদেশের ভাগ্য কাশ্মীর সমস্যার মধ্যেই বন্দি হয়ে গিয়েছে। কাশ্মীর সমস্যার সমাধান না হলে উপমহাদেশের কোনও উন্নতি হবে না।  পাকিস্তানের আগের সরকারগুলিকে আমরা ফুল মার্কস দেব কারণ তাঁরা ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক শান্তিপূর্ণ ও স্বাভাবিক করার সবরকমের চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু ভারতের দিক থেকে ইতিবাচক সাড়া মেলেনি। ভারতের অনড় জেদের কারণেই আলোচনা প্রক্রিয়া এগোয়নি। কাশ্মীর সমস্যার সমাধান হলেই দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, সাংস্কৃতিক বিনিময়, বাজার অর্থনীতির দিক থেকে দুই দেশই ভীষণ উপকৃত হবে।”

ইমরান এদিন বলেন, তাঁর দলকে জেতানোর জন্য ভোটে কোনও রিগিং করছে না ‘এস্টাবলিশমেন্ট’ এবং ‘এজেন্সি’ (সেনা এবং আইএসআই)।  এ ব্যাপারে মিথ্যে খবর রটাচ্ছেন নওয়াজ শরিফরা।  অন্যদিকে, আদিয়ালা জেলে বন্দি নওয়াজ শরিফের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানা গিয়েছে। তবে তাঁর দুটি কিডনিই প্রায় বিকল হওয়ার মুখে এবং হৃৎস্পন্দন অস্বাভাবিক রয়েছে।

[দাবানলের গ্রাসে গ্রিস, ছ’মাসের শিশু-সহ মৃত্যু অন্তত ২০ জনের]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement