সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উরিতে ভারতীয় সেনা ছাউনিতে হামলার জেরে আন্তর্জাতিক মঞ্চে রীতিমতো কোণঠাসা পাকিস্তান হতাশ হয়ে এবার ব্ল্যাকমেলিংয়ের রাস্তা নিল৷ সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বালুচিস্তানে পাকিস্তানের নিরাপত্তাবাহিনীর অত্যাচারের কথা তুলে সরব হয়েছিলেন৷ তারই বদলা নিতে পাকিস্তান এবার খালিস্তানের কথা আন্তর্জাতিক মহলে তুলে ধরতে চাইছে৷ উরির ঘটনার পর কাশ্মীরে ভারতের মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে পাকিস্তানের ‘ফাটা রেকর্ডে’ কান দেয়নি কোনও দেশ৷ কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তান সমর্থন ও বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে মধ্যপ্রাচ্য-সহ মুসলিম দেশগুলির কাছেই৷ ভারতকে কোণঠাসা করতে গিয়ে নিজেদের যুক্তিজালে নিজেরাই আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে গিয়েছেন পাক কূটনীতিকরা৷ সেরিব্রাল ও সাইবার যুদ্ধে পর্যুদস্ত পাকিস্তান এখন তাই ঘুর দাঁড়ানোর ‘শেষ অস্ত্র’ হিসাবে খালিস্তানের কথা তুলে আমেরিকাকে ইমোশনাল ব্ল্যাকমেল করতে শুরু করছে বলে মনে করছেন ভারতীয় কূটনীতিকরা৷
ভারতের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান সামরিক ঘনিষ্ঠতা ও সামরিক জোট গঠনের ফল হিসাবে আমেরিকাকে বড় ক্ষতির মুখোমুখি হতে হবে বলে আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইসলামাবাদ৷ পাক কূটনীতিকদের দাবি ছিল, আমেরিকার সঙ্গে ভারতের ‘মাখামাখি’ এমন পর্যায়ে গিয়েছে যে রাশিয়া ও চিন ক্ষুব্ধ হয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে সামরিক জোট বেঁধেছে৷ ফলে উপমহাদেশে নয়া সমীকরণ তৈরি হচ্ছে যেখানে আমেরিকার লাভ নয়, ক্ষতিই হবে৷ ভারতকেও চরম মূল্য চোকাতে হবে৷ এর পিছনে যুক্তি হিসাবে রাশিয়ার সঙ্গে সদ্যসমাপ্ত বন্ধুত্বপূর্ণ সামরিক মহড়ার উদাহরণ নিয়ে আমেরিকাকে চাপে রাখার চেষ্টা শুরু করেছিল পাক সেনার অনুগত কূটনীতিকরা৷ কিন্তু রাশিয়া ও চিনের সাম্প্রতিক স্পষ্ট বার্তায় পাকিস্তানের সেই ব্ল্যাকমেলিং ধোপে টিকল না৷ কারণ, দুই দেশই দ্ব্যর্থহীন ভাষায় উরির হামলার নিন্দা করে পাকিস্তানকে বলেছে, কাশ্মীর সমস্যায় তারা হস্তক্ষেপ করবে না৷ কিন্তু পাকিস্তানকে জঙ্গি ও সন্ত্রাসের পরিকাঠামো ধ্বংস করে ফেলতে হবে৷ ‘নন স্টেট অ্যাক্টর’ জঙ্গিদের পাকিস্তানের জমি ব্যবহার করতে দেওয়া যাবে না৷ জঙ্গি হামলায় পাক সেনার মদত বন্ধ করতে হবে৷ ফলে সবসময়ের বন্ধু চিন যখন মুখ ফিরিয়েছে তখনই প্রমাদ গুনেছে পাক সেনা৷
এবার রাওয়ালপিন্ডির সেনা কর্তাদের নির্দেশে নয়া ফন্দি এঁটেছেন পাক কূটনীতিকরা৷ তাঁরা মরিয়া হয়ে এবার ‘বৃহৎ শক্তি’কে (আমেরিকাকে) নয়া কায়দায় ব্ল্যাকমেল শুরু করেছেন বলে মনে করছে সাউথ ব্লক৷ সেটি হল, “আমেরিকা যদি আফগানিস্তানে শান্তি চায় তাহলে আগে কাশ্মীর সমস্যার সমাধান করতে হবে৷” অর্থাৎ আফগানিস্তানে নাশকতার পিছনে দায়ী তালিবান ও হক্কানি নেটওয়ার্ককে পাকিস্তান তখনই নিয়ন্ত্রণ করবে যদি কাশ্মীরে ‘তৃতীয় পক্ষ’ হিসাবে আমেরিকা হস্তক্ষেপ করে এবং পাকিস্তানের দাবি মতো ‘পদক্ষেপ’ নেয়৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.