সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা বিলোপের সিদ্ধান্ত বৈধ। সোমবার জানিয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের এই রায় ঘোষণার পর স্বভাবতই বিরোধিতা করতে আসরে নামল পাকিস্তান। সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের কোনও আইনি মূল্য নেই এবং ২০২৯ সালে দিল্লির সিদ্ধান্তকে একতরফা ও বেআইনি বলে তোপ দাগল ইসামাবাদ।
সুপ্রিম কোর্টের রায়দানের পর এদিন এক্স হ্যান্ডেলে পাকিস্তানের (Pakistan) কেয়ারটেকার সরকারের বিদেশমন্ত্রী আব্বাস জিলানি লেখেন, ‘২০১৯ সালে ৫ আগস্ট ভারত যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তা একতরফা ও বেআইনি ছিল। আন্তর্জাতিক আইন এই পদক্ষেপ স্বীকার করে না। ভারতের শীর্ষ আদালত যে রায় দিয়েছে তার কোনও আইনি মূল্য নেই। রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব অনুযায়ী কাশ্মীরিদের সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে নিজেদের ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ করার।’
শীর্ষ আদালতের এই রায় নিয়ে মুখ খুলেছেন পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ (Shehbaz Sharif)। তাঁর বক্তব্য, “ভারতের সুপ্রিম কোর্ট আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে। রাষ্ট্রসংঘের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে। লক্ষ লক্ষ কাশ্মীরিদের আত্মত্যাগের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে সেদেশের শীর্ষ আদালত।” তিনি আরও বলেন, পক্ষপাতদুষ্ট এই রায় কাশ্মীরের ‘স্বাধীনতা আন্দোলন’কে আরও দৃঢ় করবে।
বলে রাখা ভালো, ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট জম্মু-কাশ্মীরের (Jammu and Kashmir) বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করে নেয় কেন্দ্রীয় সরকার। পাশাপাশি রাজ্যের মর্যাদা ছিনিয়ে নিয়ে এটিকে পৃথক দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করে দেওয়া হয়েছিল। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের পর থেকে অনেক বিক্ষোভ-প্রতিবাদ হয়েছে ভূস্বর্গে। অশান্তি থামাতে বিপুল সংখ্যক সেনা সেখানে মোতায়েন করা হয়। বন্ধ রাখা হয় ইন্টারনেট পরিষেবাও। কাশ্মীর ইস্যুতে বিরোধীদের বাণে বারবার বিদ্ধ হয়েছে কেন্দ্রের শাসকদল। অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক স্তরে ভারতের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানায় পাকিস্তান। কিন্তু তাতে কর্ণপাত করেনি নয়াদিল্লি। সাফ জানানো হয়, এটা সম্পূর্ণ দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এক্ষেত্রে কোনও তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করা হবে না।
উল্লেখ্য, জম্মু ও কাশ্মীরের ৩৭০ ধারা বাতিলের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে (Supreme Court) বহু মামলা দায়ের হয়। সেগুলোকে একত্রিত করে সম্প্রতি শুনানি শুরু করে সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার এই মামলার রায় ঘোষণা হয়। প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ সহমত হয়ে জানিয়ে দেয়, “সংবিধানের ৩৭০ ধারা একটি অস্থায়ী ব্যবস্থা ছিল। যুদ্ধ পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই সংবিধানের অন্তর্ভুক্ত করা হয় ৩৭০ ধারা। এই ধারা বিলোপ করে দেওয়ার অধিকার রয়েছে রাষ্ট্রপতির। সাংবিধানিক পদ্ধতিতেই ৩৭০ ধারা বিলোপ করা হয়েছে।” এই রায়ের পরই বিরোধিতায় সরব হয়েছে পাকিস্তান।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.