সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সন্ত্রাসবাদ দমন নিয়ে এক সুরে পাকিস্তানকে বিঁধেছে ভারত ও আমেরিকা। যৌথ বিবৃতিতে কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে পাকিস্তানকে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সঙ্গে নিয়েই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সাফ জানিয়েছেন, পাকিস্তানকে নিশ্চিত করতে হবে তাদের মাটি যেন সন্ত্রাসী কার্যকলাপের জন্য ব্যবহার না করা হয়। এই বিষয়টিকে অনেকেই ভারতের বিরাট কূটনৈতিক জয় হিসাবেই দেখছেন। কিন্তু মোদির সঙ্গে একই সুরে ট্রাম্পের এহেন মন্তব্যে চূড়ান্ত হতাশ ও স্তম্ভিত ইসলামাবাদ। অসন্তোষ প্রকাশ করে তারা জানিয়েছে, এই বয়ান ‘একতরফা’ ও ‘বিভ্রান্তিকর’।
দুদিনের সফরে ১৩ ফেব্রুয়ারি আমেরিকায় পা রাখেন মোদি। ভারতীয় সময় অনুযায়ী শুক্রবার ভোরে তিনি বৈঠকে বসেন ট্রাম্পের সঙ্গে। আঞ্চলিক, আন্তর্জাতিক নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে তাঁরা আলোচনা করেন। উঠে আসে সন্ত্রাসবাদের প্রসঙ্গও। ইসলামিক সন্ত্রাস রুখতে যৌথভাবে কাজ করতে সহমত পোষণ করেন দুই রাষ্ট্রনেতা। বৈঠক শেষে মোদির সঙ্গে সাংবাদিক সম্মেলনে যোগ দিয়েই সন্ত্রাসবাদ দমন নিয়ে পাকিস্তানকে ‘টার্গেট’ করেন তাঁরা। যৌথ বিবৃতিতে পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়, সন্ত্রাসবাদ দমনের জন্য সবরকম চেষ্টা করতে হবে পাকিস্তানকে। তাদের মাটি ব্যবহার করে যাতে সীমান্তে সন্ত্রাসবাদী হামলা না হয় তা ইসলামাবাদকেই নিশ্চিত করতে হবে।
আর এই বিবৃতি দেখেই ক্ষেপে লাল পাকিস্তান। বিবৃতিতে সরাসরি তাদের দেশের নাম উল্লেখ করায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র শাফকাত আলি খান। শুক্রবার তিনি বলেন, “এই ধরনের বক্তব্যে পাকিস্তান বিস্মিত। পাকিস্তান যে আত্মত্যাগ করেছে সে বিষয়ে কোনও গুরুত্বই দেওয়া হচ্ছে না। শাফকাতের দাবি, “মোদি ও ট্রাম্পের এই বিবৃতি একতরফা ও বিভ্রান্তিকর।”
প্রসঙ্গত, বিগত কয়েক দশক ধরে ভারতে সন্ত্রাস ছড়ানোর অভিযোগ রয়েছে ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে। লাগাতার জঙ্গিদের অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে উপত্যকা অশান্ত করার চেষ্টা করছে পাকিস্তান। যার কড়া জবাব দিচ্ছে দিল্লিও। কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে একাধিকবার রাষ্ট্রসংঘে ভারতকে খোঁচা দেওয়ার চেষ্টা করলেও হালে পানি পায়নি পাকিস্তান। এছাড়া বহুদিন ধরেই ইসলামাবাদের সঙ্গে সমস্ত কূটনৈতিক আলোচনা বন্ধ রেখেছে দিল্লি। দুদেশের বৈঠক নিয়ে জিজ্ঞাসা করে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর বারবার কড়া ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, সন্ত্রাসবাদ আর আলোচনা কখনও একসঙ্গে চলতে পারে না। এবার এই ইস্যুতে ভারতেরই পাশে দাঁড়ালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
এদিকে, ভারতের সঙ্গে মিলে ট্রাম্পের এহেন বার্তায় ক্ষুব্ধ পাকিস্তান। কারণ এক সময় আফগানিস্তানে তালিবানদের দমনে আমেরিকাকে সাহায্য করেছিল তারা। কিন্তু সেটা ছিল নিজেদের স্বার্থেই। কারণ তালিবানদের মদত দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে। কিন্তু ট্রাম্প ক্ষমতায় ফিরে তাদের সেই দ্বিচারিতা ধরে ফেলেন। পাকিস্তানকে আর্থিক সাহায্য বন্ধের ঘোষণা করেন তিনি। সেই নিয়ে এমনটিতেই আমেরিকার উপর চোটে ছিল পাকিস্তান। এবার ট্রাম্পের এই বক্তব্যে অসন্তুষ্ট ইসলামাবাদ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.