ইমরান খান
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর বিদেশি সংবাদমাধ্যমের সামনে প্রথমবার মুখ খুলে বিস্ফোরক ইমরান খান। তোপ দাগলেন বিজেপির বিরুদ্ধে। বললেন, ”ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এবং তার নেতারা ‘মুসলিম বিরোধী, পাকিস্তান বিরোধী’। সন্ত্রাসবাদের তকমা দিয়ে বিশ্ব মানচিত্রে পাকিস্তানকে পিছিয়ে দিতে চাইছে ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকার। চাপ দিয়ে পাকিস্তানকে ‘ভাড়া করা বন্দুক’-এর মতো ব্যবহারও করতে চাইছে আমেরিকা। কিন্তু তাঁদের পরিকল্পনা সার্থক হবে না।”
[হীরে দিয়ে মোড়া আস্ত একটি বিমান! ব্যাপারটা কী?]
সম্প্রতি ওয়াশিংটন পোস্ট-এর এক সাংবাদিককে সাক্ষাৎকার দেন ইমরান। সেখানেই ভারত ও আমেরিকাকে একযোগে আক্রমণ করেন তিনি। ভারত প্রসঙ্গে এদিন কী বললেন পাক প্রধানমন্ত্রী? ওয়াশিংটন পোস্টে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় পাক প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, “ক্ষমতায় আসার পর ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করার জন্য আপনি সব রকম চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু, ভারত প্রত্যাখ্যান করেছে, কী বলবেন?” এই প্রশ্নের উত্তরে ইমরান বলেন, “আমি জানি, সে দেশে নির্বাচন আসন্ন। সেখানকার শাসক দল মুসলিম বিরোধী এবং পাকিস্তান বিরোধী মনোভাব পোষণ করে। তাই তারা আমার সমস্ত প্রস্তাব স্রেফ উড়িয়ে দিয়েছে।” চার মাস হতে চলল পাকিস্তানে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় এসেছেন ইমরান খান। ক্ষমতায় আসার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখে দু’দেশের আলোচনা শুরুর প্রস্তাব দিয়েছিলেন তিনি। প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, নিউইয়র্কে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভার ফাঁকে পাকিস্তানের সঙ্গে বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে করার। কিন্তু, ‘সন্ত্রাস ও আলোচনা’ এক সঙ্গে চলতে পারে না-এই যুক্তিতে প্রস্তাব বাতিল করে নয়াদিল্লি। এমনকী, পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত হতে চলা সার্ক শীর্ষ শামিল না হওয়ার কথা জানিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ।
এখানেই শেষ নয়, ওই সাক্ষাৎকারে আমেরিকাকেও একহাত নেন ইমরান। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদের মুক্তাঞ্চল। একই সঙ্গে অনুদানও না দেওয়ার সিদ্ধান্তও নিয়েছে হোয়াইট হাউস। এই পরিস্থিতিতে আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ইমরান কী ভাবছেন? ইমরানের সাফ জবাব, “ট্রাম্প ইতিহাস না জেনে এ সব বলেছেন। আর তা ছাড়া কোনও দেশের সঙ্গেই আমরা এমন কোনও সম্পর্কে যাব না যেখানে আমাদের ‘ভাড়া করা বন্দুক’ ভাবা হবে। আমরা আমাদের দেশের মাটি ব্যবহার করে কোনও দিন অন্য কারও হয়ে যুদ্ধ লড়তে চাইব না।” বৃহস্পতিবারের এই সাক্ষাৎকারে ইমরান ১৯৮০-র সোভিয়েত উইনিয়নের সঙ্গে যুদ্ধের প্রসঙ্গও টানেন। কথা প্রসঙ্গে ইমরানকে সাংবাদিক জিজ্ঞাসা করেন, তিনি আমেরিকার সঙ্গে ঠিক কেমন সম্পর্ক চাইছেন? ইমরান জানিয়েছেন, এই সময় দাঁড়িয়ে বাণিজ্যিক স্বার্থে পাকিস্তানের সঙ্গে চিনের সম্পর্ক যেমন, তেমন সম্পর্কই পাকিস্তানের সঙ্গে আমেরিকার থাকা উচিত বলে মনে করেন তিনি।
[অগাস্টা কেলেঙ্কারির মধ্যস্থতাকারীর সঙ্গে সম্পর্ক নেই, দাবি মালিয়ার]
সাক্ষাৎকারে ইমরান এও জানান, সন্ত্রাসবাদকে খতম করতে প্রতিদিন সীমান্তে পাকিস্তানের সেনারা প্রাণ হারাচ্ছেন। অন্যদিকে, আমেরিকা বলছে, পাকিস্তানেই নাকি সন্ত্রাসের মূল লুকিয়ে। আমেরিকার আধিকারিকরা মনে করেন, পাকিস্তানে তালিবান জঙ্গিরা থাকে। ইমরান আরও বলেন, ‘তেহরিক-ই-লিবাইক’ এর নেতা খাদিম হুসেন রিজভিকে গ্রেপ্তার করেছে তাঁর সরকার। তারপরও আমেরিকা কুৎসার কালি ছিটিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তানের উপর। মার্কিন আরজি মেনে তাঁরা আফগানিস্তানের সঙ্গে শান্তি বৈঠকে বসতেও রাজি বলে জানান পাক প্রধানমন্ত্রী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.