সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গভীর শোক এবং আতঙ্কের মধ্যে দিয়ে বৃহস্পতিবার করাচিতে সাঙ্গ হল সদ্য নিহত সুফি গায়ক আমজাদ সবরি-র শেষকৃত্য। লিয়াকতাবাদের যে জায়গায় তাঁকে গাড়ির ভিতরে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল, সেই জায়গা তো বটেই, এমনকী শেষকৃত্যে বিপুল জনসমাগমের জন্য পুরো এলাকার রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে পাক পুলিশ।
প্রিয় গায়ককে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এ দিন লিয়াকতাবাদে হাজির ছিলেন সহস্রেরও বেশি মানুষ। প্রখ্যাত সুফি সাধক বাবা ফরিদের আধ্যাত্মিক বংশধরদের পরিচালনায় সাঙ্গ হয় আমজাদ সবরি-র শেষকৃত্য।
বুধবার আমজাদ সবরি যখন তাঁর ভাইয়ের সঙ্গে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিলেন লিয়াকতাবাদের রাস্তা ধরে, তখনই তিনি আততায়ীদের হাতে পড়েন। ”একটি মোটরবাইকে করে দু’জন আততায়ী এসে থামে ঠিক গাড়ির পাশে। দেরি না করে তারা ৩০ বোল্ট রিভলবার থেকে পর পর পাঁচটি গুলি চালায় আমজাদ সবরিকে লক্ষ্য করে। তার মধ্যেই একটি গুলি এসে লাগে গায়কের মাথায়। সেই গুলিতেই অকুস্থলে তাঁর মৃত্যু হয়। এর পর আততায়ীরা হাসান স্কোয়ারের রাস্তা ধরে পালিয়ে যায়”, জানিয়েছেন ইনস্পেক্টর জেনারেল মুস্তাক মেহের।
”এটা একটা সুচিন্তিত পরিকল্পনা মাফিক হত্যা! সন্ত্রাসমূলক ঘটনা তো বটেই”, মন্তব্য করেছেন পাকিস্তানের এক সিনিয়র পুলিশ অফিসার মুকদ্দস হায়দার।
এই গাড়িতেই গুলিবিদ্ধ হন আমজাদ সবরি
আমজাদ সবরির হত্যার ঘটনা জানাজানি হতেই একই সঙ্গে গভীর শোক এবং আতঙ্কের ছায়া নেমে আসে করাচি-সহ সারা পাকিস্তানে। দলে দলে মানুষ ভিড় করতে থাকেন সবরি-র বাড়ির সামনে। তাঁদের সবার উপস্থিতিতেই সাঙ্গ হয়েছে শেষকৃত্য।
জানা গিয়েছে, শেষকৃত্যের পরে গায়কের দেহ সমাধিস্থ করা হবে পীর হেরাট শাহ ওয়ারসি-র সমাধি সংলগ্ন পাপোশ নগর কবরখানায়, তাঁর বাবা প্রয়াত সুফি গায়ক গুলাম ফরিদ সবরি-র পাশে।
সূত্রে খবর, পাকিস্তানের এক তালিবানি গোষ্ঠী এই হত্যার দায় স্বীকার করেছে। তার পর থেকেই বিতর্ক তৈরি হয়েছে এই হত্যাকাণ্ড ঘিরে।
ফকিরে আলম, সিন্ধ বোর্ড অফ ফিল্ম সেন্সর-এর চেয়ারম্যান টুইট করে জানিয়েছেন, এর আগে নিরাপত্তার জন্য আমজাদ সবরি প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কিন্তু, তাঁর আবেদনে প্রশাসন কর্ণপাত করেনি। তারই পরিণতি এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড!
পাশাপাশি প্রয়াত গায়কের মা আসগরি বেগম জানিয়েছেন আরও একটি ঘটনার কথা। মাস ছয়েক আগে হঠাৎই সবরি-র বাড়িতে হানা দেয় তিন জন অজ্ঞাতপরিচয় আততায়ী। ”তারা প্রায় বাড়ির দরজা ভেঙেই ফেলছিল। খোঁজ করছিল, আমজাদ কোথায়! আমজাদ সে দিন বাড়িতে ছিল না। তাকে না পেয়ে ফি্রে যায় ওই আততায়ীরা”, জানিয়েছেন আসগরি বেগম।
ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। তিনি ঘটনাটির তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.