সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আগেই হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল। শেষপর্যন্ত, মুম্বই হামলার মূলচক্রী হাফিজ সইদকে গৃহবন্দি দশা থেকে মুক্তিই দিল লাহোর হাই কোর্ট। কারণ, এই জঙ্গিনেতাকে গৃহবন্দি করে রাখার সপক্ষে আদালতে কোনও প্রমাণই পেশ করতে পারেনি পাক-সরকার। আদালতের এই রায়ে ফের একবার বিশ্বের কাছে সন্ত্রাসবাদের প্রশ্নে পাকিস্তানের দ্বিচারিতা বেআব্রু হয়ে গেল। এমনকী, আদালতের রায়ে হাফিজ সইদ যদি মুক্তি পেয়ে যায়, তাহলে পশ্চিমী দেশগুলি পাকিস্তানের উপর নিষেধাজ্ঞাও জারি করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকেই।
[মার্কিন জঙ্গি তালিকায় নেই হাফিজ সইদের নাম, দাবি পাকিস্তানের]
কাশ্মীরে একাধিক সন্ত্রাসবাদী হামলার সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষে ভাবে জড়িত জঙ্গি সংগঠন জামাত-উদ-দাওয়ার প্রধান হাফিজ সইদ। ২০০৮ সালে মুম্বই হামলারও মুলচক্রী এই জঙ্গিনেতা। কিন্তু, ভারত একাধিক প্রমাণ দেওয়া সত্ত্বেও, তার বিরুদ্ধে প্রথমে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি পাকিস্তান। শেষপর্যন্ত, মার্কিন চাপে একপ্রকার বাধ্য হয়ে গত জানুয়ারিতে পাকিস্থানে হাফিজ সইদকে গৃহবন্দি করা হয়। গত ৩১ জানুয়ারি থেকে গৃহবন্দি এই জঙ্গিনেতা ও তার চার সঙ্গী। এমনকী, কাশ্মীরের জেহাদের নামে সন্ত্রাস ছড়ানোর অভিযোগেই যে হাফিজ সইদ ও তার চার সঙ্গীকে গৃহবন্দি করা হয়েছে, তাও স্বীকার করেছে পাক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। কিন্তু, ঘটনা হল, লাহোর হাই কোর্টে এই জঙ্গিনেতা ও তার সঙ্গীদের বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণই পেশ করতে পারল না ইসলামাবাদ। তাই গৃহবন্দি দশা থেকে হাফিজ সইদ ও তার চার অনুগামীকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল আদালত। তাদের গৃহবন্দির রাখার প্রতিবাদে মামলা হয়েছিল লাহোর হাই কোর্টে। এই সংক্রান্ত যাবতীয় নথি পাক-সরকারকে আদালতে পেশ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি। অক্টোবরে হাফিজ সইদের বিরুদ্ধে নথি পেশ তো দুরের কথা, শুনানিতে হাজিরই হননি পাক অভ্যন্তরীণ মন্ত্রকের সচিব। বিরক্ত বিচারপতি জানিয়ে দিয়েছিলেন, পাক-সরকার যদি উপযুক্ত তথ্য-প্রমাণ পেশ করতে না পারে, তাহলে আবেদনকারীকে গৃহবন্দি রাখার আবেদন খারিজ করা দেওয়া হবে।
[উত্তর কোরিয়াকে সন্ত্রাসবাদী রাষ্ট্রের তকমা আমেরিকার, সিদ্ধান্তকে স্বাগত জাপানের]
বস্তুত, পাকিস্তানে হাফিজ সইদ গৃহবন্দি আছে ঠিকই। কিন্তু, তার কাজকর্মে যে রাশ টানা হয়েছে, এমনটা কিন্তু নয়। বরং এই জঙ্গিনেতা গৃহবন্দি থাকাকালীনই পাক-রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ করেছে তার সংগঠন জামাত-উদ-দাওয়া। সংগঠনের নতুন নাম হয়েছে মিল্লি মুসলিম লিগ। এমনকী, খোদ পাক বিদেশমন্ত্রীর এক মন্তব্যের বিরুদ্ধে, ইতিমধ্যেই তাঁর বিরুদ্ধে ১ কোটি টাকার মানহানির মামলাও করেছে হাফিজ সইদ। এই প্রেক্ষাপটে এই জঙ্গিনেতার মুক্তির সম্ভাবনায় আন্তর্জাতিক মঞ্চে ফের সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে পাকিস্তান ব্যাকফুটে চলে গেল বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের। অনেকেই বলছেন, আদালতের রায়ে যদি সত্যি হাফিজ সইদ মুক্তি পেয়ে যায়, তাহলে পাকিস্তানের উপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা চাপতে পারে। বস্তুত, সেই আশঙ্কা গ্রাস করেছে পাক-প্রশাসনের একাংশকেও।
[গ্রহাণুর সঙ্গে সংঘর্ষেই ধ্বংস হবে মানব সভ্যতা! এবার দাবি নাসারই]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.