Advertisement
Advertisement

দেশেই রয়েছে মাসুদ আজহার, চাপের মুখে স্বীকার পাক বিদেশমন্ত্রীর

ভারতের দেওয়া ডসিয়ের পাক আদালতে গৃহীত হলে মাসুদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ, জানালেন বিদেশমন্ত্রী।

Pakistan admits Masood Azhar's presence
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:March 1, 2019 1:25 pm
  • Updated:March 1, 2019 1:25 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শত চেষ্টাতেও শাক দিয়ে মাছ ঢাকা গেল না। সন্ত্রাসে মদত দেওয়া নিয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বরাবর যে অভিযোগ তুলে আসছে, তার সত্যতা স্বীকার করে নিলেন সেদেশের বিদেশমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি স্পষ্টই মানলেন, মাসুদ আজহার পাকিস্তানেই রয়েছে। কিন্তু তার শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। বাড়ি থেকে বেরোনোর মতো অবস্থায় নেই। তাঁর এই স্বীকারোক্তির পর ফের তুমুল সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

পুলওয়ামায় সিআরপিএফ কনভয়ে ঢুকে জঙ্গি হামলার পর থেকেই আঙুল উঠেছিল পাকিস্তানের দিকে। কুখ্যাত জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদ দায় স্বীকার করায় ভারতের তরফে লাগাতার অভিযোগ উঠছিল, হামলার মাস্টারমাইন্ড পাকিস্তানের নিরাপদ আশ্রয়ে রয়েছে। রাষ্ট্রসংঘ পর্যন্ত এই অভিযোগ পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল।বন্ধু রাষ্ট্রগুলির কাছেও নয়াদিল্লি বারবার নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে জানিয়েছিল, প্রতিবেশী দেশ সন্ত্রাসবাদকে প্রশ্রয় দেওয়ায় সবসময় বিপর্যয় নেমে এসেছে ভারতের উপর। হামলার দিন কয়েক পরেই সাংবাদিক সম্মেলন করে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান পালটা অভিযোগ তুলেছিলেন, ভারত তথ্য, প্রমাণ ছাড়া অভিযোগ আনছে। প্রমাণ দাখিল করলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভোট রাজনীতির জন্য ভারত তাঁদের কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছে বলেও অভিযোগ ছিল ইমরানের। ভারতের জবাব ছিল সংক্ষিপ্ত – মাসুদ আজহারই যথেষ্ট বড় প্রমাণ।

Advertisement

[জইশ নিয়ে আরও বিপাকে পাকিস্তান, কড়া বার্তা দিল আমেরিকা]

ভারতের সেই কথাকেই কার্যত মান্যতা দিলেন পাক বিদেশমন্ত্রী। মানলেন, ‘মাসুদ আজহার পাকিস্তানেই আছে। তবে খুব অসুস্থ।’ সর্বভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমকে তিনি আরও জানিয়েছেন, ‘পাকিস্তান মাসুদকে গ্রেপ্তার করতে তৈরি যদি তার বিরুদ্ধে ভারতের দেওয়া তথ্য,প্রমাণ পাক আদালতে গৃহীত হয়।’ অর্থাৎ মাসুদের উপস্থিতি স্বীকার করলেও, তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে যে পাক প্রশাসন ততটা তৎপর নয়, তাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন সেদেশের বিদেশমন্ত্রী। ইতিমধ্যেই পুলওয়ামা হামলায় জইশের ভূমিকা নিয়ে ডসিয়ের পাকিস্তানের হাতে তুলে দিয়েছে ভারত। সেই ডসিয়ের খতিয়ে দেখে মাসুদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়টি খুব সুকৌশলে বিদেশমন্ত্রী ছেড়ে দিলেন আদালতের হাতে। সেইসঙ্গে এ-ও বললেন, ‘যদি ভারতের হাতে এত শক্তপোক্ত প্রমাণ থেকেই থাকে, তাহলে আসুন, আমাদের সঙ্গে আলোচনার টেবিলে বসুন। আমরা কথা বলি।’ ফের সেই আলোচনার বার্তা। আসলে, পুলওয়ামা হামলার পর বন্ধুরাষ্ট্র চিনও পাকিস্তানের পাশে দাঁড়ায়নি। ঘরে, বাইরে প্রবল চাপের মুখে পড়ে বৃহস্পতিবার থেকেই সুর নরম করেছে পাকিস্তান। কিন্তু আন্তর্জাতিক মহলের একাংশের কটাক্ষ, নিজেদের মাটিতে মাসুদ আজহারের মতো জঙ্গির উপস্থিতি স্বীকার করে নেওয়ার পরও পাকিস্তান আলোচনার প্রস্তাব দিচ্ছে কোন আশায়।

[ধরা পড়েও মাথা ঠান্ডা রাখেন অভিনন্দন, দেশের সুরক্ষায় করেছিলেন এই কাজটি]

ইতিমধ্যেই জইশ প্রধানকে নিষিদ্ধ করার দাবি রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে পেশ করেছে ফ্রান্স, ব্রিটেন, আমেরিকা। নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলে মাসুদের যাবতীয় সম্পত্তি, অস্ত্রশস্ত্র সব বাজেয়াপ্ত করা হবে। পাসপোর্ট বাতিল হয়ে যাবে। এপ্রসঙ্গে কুরেশিকে প্রশ্ন করা হলে তিনি সুর নরম করেই জানান, ‘পাকিস্তান এই সংক্রান্ত যে কোনও পদক্ষেপকেই স্বাগত জানাবে।’ একইসঙ্গে অবশ্য প্রায় শর্ত দেওয়ার সুরেই জানিয়েছেন, ভারত-পাক সীমান্তে উত্তেজনা প্রশমন করতে হবে ভারতকে। তবে পাক বিদেশমন্ত্রীর এই স্বীকারোক্তিতে আর কোনও সংশয়ের অবকাশ নেই যে, এই উপমহাদেশে সন্ত্রাসের অবাধ লালনপালন চলছে সিন্ধুর ওপাড়ের মাটিতেই।  

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement