সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশে ফের গেরুয়া ঝড়। তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় ফিরছে মোদি সরকার। বিভিন্ন এক্সিট পোলে মিলেছে সেই ইঙ্গিতই। এই লোকসভা ভোটের বিভিন্ন নির্বাচনী জনসভায় গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ হুঙ্কার দিয়েছিলেন, পাক অধিকৃত কাশ্মীর উদ্ধার করা হবে। পাশাপাশি ভারতে সন্ত্রাসের বিষ ছড়ালে যোগ্য জবাব দেওয়া হবে পাকিস্তানকে। ফলে এদেশে ভোটের ফলাফলের উপর কড়া নজর রয়েছে পাকিস্তানের। এই প্রেক্ষাপটে ৪ জুন চিন সফরে যাচ্ছেন পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, এদিনই অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা হবে।
সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, ৪ জুন বেজিংয়ে পা রাখবেন শাহবাজ। ৮ জুন পর্যন্ত তিনি থাকবেন চিনে। এই ৪ দিনের সফরে জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন পাক প্রধানমন্ত্রী। দেখা করবেন চিনের প্রিমিয়ার লি কিয়াংয়ের সঙ্গে। এমনটাই জানিয়েছেন পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র মুমতাজ জাহরা বালোচ। জানা গিয়েছে, দুই রাষ্ট্রনেতা আগামিদিনে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও মজবুত করতে ও দুদেশের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আলোচনা করবেন। এছাড়াও তাঁদের বৈঠকে উঠে আসবে ‘চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর’-এর বিষয়টিও। যা পাকিস্তানের গদর বন্দর থেকে চিনের শিনজিয়াং প্রদেশের কাশগর পর্যন্ত গিয়েছে। এনিয়ে বিবৃতি দিয়ে বালোচ জানিয়েছেন, “চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডরকে আরও উন্নত হবে। দুদেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা, প্রতিরক্ষা, মহাকাশ, বিজ্ঞান-সহ নানা ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও দৃঢ় করার লক্ষ্যে আলোচনা হবে।” আর এই সিপিইসি নিয়ে চরম ক্ষুব্ধ ভারত।
বলে রাখা ভালো, ২০১৩ সালে পাকিস্তানে পরিকাঠামো নির্মাণে উদ্যোগী হয়ে ‘চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর’ (CPEC) প্রকল্প শুরু করে চিন। ওই প্রকল্পের অন্তর্গত তৈরি একটি সড়ক গিয়েছে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের (PoK) মধ্যে দিয়ে। আর তাতেই ঘোর আপত্তি রয়েছে ভারতের। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং থেকে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। বারবার চিনের এই ‘বিতর্কিত’ প্রকল্প নিয়ে হুঁশিয়ারির সুর শোনা গিয়েছে তাঁদের গলায়। ‘শত্রু’ দেশের কাছ থেকে পাক অধিকৃত কাশ্মীর ছিনিয়ে নিতে বদ্ধপরিকর দিল্লি। এছাড়া ভোট শুরু হওয়ার আগেই প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং হুঙ্কার দিয়েছিলেন, “দেশকে অশান্ত করতে এলে ঘরে ঢুকে মারব। সন্ত্রাসীরা পাকিস্তানে গিয়েও পার পাবে না।”
কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের মোকাবিলা করতে ‘বন্ধু’ চিনের শরণাপন্ন হচ্ছেন পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। তাই ভারতের নির্বাচনের ফলাফলের দিনই চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিংপিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন শাহবাজ। এই আবহে ভারতকে বিপাকে ফেলতে নতুন কৌশল নিয়ে আলোচনা করতে পারে দুদেশ।
উল্লেখ্য, ভোট প্রক্রিয়া চলাকালীন জঙ্গি অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে বারবার জম্মু ও কাশ্মীর উত্তপ্ত করার চেষ্টা করেছে পাকিস্তান। কিন্তু গোয়েন্দা সূত্রে খবর পেয়ে সেই ছক বানচাল করেছে ভারতীয় সেনা। পাশাপাশি লাদাখ থেকে অরুনাচলপ্রদেশ পর্যন্ত লালফৌজকে শান্তি বজায় রাখার বার্তা দিয়েছে নয়াদিল্লি। ফলে নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে ঢেলে সাজানো হচ্ছে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। পাক-চিন দুই সীমান্তেই সেনা পরিকাঠামো উন্নত করা হচ্ছে। শত্রুদের গা জোয়ারির মক্ষম জবাব দিতে দিল্লির হাতে আসছে অত্যাধুনিক হাতিয়ার। ফলে ক্ষমতায় ফিরলে আমেরিকা, ফ্রান্স, রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক আরও মজবুত করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। যাতে চাপ বাড়বে চিন ও পাকিস্তানের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.