সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের ভূমধ্যসাগরে (Mediterranean Sea) নৌকাডুবি। মৃত কমপক্ষে ৯০ জন শরণার্থী। একাধিক আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সূত্রে খবর, লিবিয়া উপকূল থেকে ইউরোপের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছিল নৌকাটি।
আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘ডক্টরস উইদাউট বর্ডার’ (MSF) জানিয়েছে, শনিবার ভূমধ্যসাগরে একটি লাইফবোট থেকে চারজনকে উদ্ধার করে ‘আলজেরিয়া ১’ নামের একটি পণ্যবাহী জাহাজ। নিজেদের টুইটার হ্যান্ডেলে এমএসএফ লিখেছে, “আলজেরিয়া ১ জাহাজের সঙ্গে যোগাযোগ করে আমরা জানতে পেরেছি যে প্রায় ১০০ জন মানুষকে নিয়ে একটি নৌকা চারদিন থেকে ভূমধ্যসাগরে ভাসছিল।” সংবাদ এএফপি সূত্রে খবর, ডুবে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৯৬ জনের। রবিবার রাষ্ট্রসংঘের শরণার্থী সংস্থার প্রধান ফিলিপ্পো গ্রান্ডি টুইট করে অন্তত নব্বই জন মানুষের মৃত্যুর কথা জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, “ইউক্রেনের ৪০ লক্ষ মানুষকে জায়গা দিয়েছে ইউরোপ। এবার বিপাকে পড়া বিশ্বের অন্য শরণার্থীদের কথাও ভাবা উচিট তাদের। লিবিয়া সুরক্ষিত নয়। প্রাণে বেঁচে যাওয়া শরণার্থীদের সেখানে ফেরত পাঠানো উচিত নয়।”
বলে রাখা ভাল, প্রায় এক দশক আগে একনায়ক মুয়াম্মার গাদ্দাফির মৃতুর পর থেকে গৃহযুদ্ধে জর্জর লিবিয়া (Libya)। বিভিন্ন জেহাদি সংগঠন ও মিলিশিয়াগুলির মধ্যে লড়াইয়ে কার্যত নরকে পরিণত হয়েছে দেশটি। তারপর থেকেই প্রাণ বাঁচাতে সমুদ্রপথে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় ইউরোপের উদ্দেশে প্রায় প্রতিদিন রওনা হচ্ছেন শয়ে শয়ে মানুষ। দারিদ্রতার কারণে এবং যুদ্ধ থেকে পালিয়ে উন্নত জীবনের আশায় লিবিয়া হয়ে প্রচুর শরণার্থী প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে ছোট ছোট নৌকায় ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে গ্রিস হয়ে ইউরোপে পৌঁছানোর চেষ্টা করে। বিপদসঙ্কুল ওই পথ পাড়ি দিতে গিয়ে বহু শরণার্থীর সমুদ্রে ডুবে মৃত্যু হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে তুরস্কের উপকূলে আয়লান কুর্দি নামের একটি শিশুর মরদেহ পড়ে থাকার ছবি বিশ্বজুড়ে তীব্র আলোড়ন তুলেছিল। সিরিয়ার কোবানে শহরে থাকত আয়লানের পরিবার। সেখানে ইসলামিক স্টেট জঙ্গিদের সঙ্গে সরকারি বাহিনীর লড়াই শুরু হওয়ার পর তারা পালিয়ে তুরস্কে আসে। সেখান থেকে ইউরোপের উদ্দেশে পারি দেওয়ার সময়ই নৌকাডুবিতে মৃত্যু হয় আয়লানের। ওই সিরীয় শিশুটির মর্মান্তিক পরিণতি ইউরোপের শরণার্থী সংকট কতটা গভীর এই ছবি তুলে ধরে। সিরিয়ে প্রশ্ন হচ্ছে, আয়লানরা যাবে কোথায়?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.