সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক : ঘূর্ণিঝড় ইদাই ও তার ফলে সৃষ্ট হওয়া বন্যার ফলে শনিবার পর্যন্ত আফ্রিকার দক্ষিণ প্রান্তে থাকা মোজাম্বিক, জিম্বাবোয়ে ও মালাউইয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে কমপক্ষে ৭৩২। পাশাপাশি বহু মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়ে সর্বশান্ত হয়ে কোনও বাড়ির ছাদ বা গাছে আশ্রয় নিয়েছেন।
গত বৃহস্পতিবার প্রথমে মোজাম্বিকের বন্দর শহর বেইরাতে ১৭০ কিলোমিটার বেগে আছড়ে পড়ে ইদাই। তারপর তা জিম্বাবোয়ে ও মালাউইয়ের দিকে এগোতে থাকে। আর যাওয়ার সময় ধ্বংস করে দেয় রাস্তায় থাকা প্রায় সবকিছু। এই শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের জেরে ইতিমধ্যেই মোজাম্বিকে ৪১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানান দেশের ভূমি ও পরিবেশ মন্ত্রী সেলসো কোরিয়া। পাশাপাশি বলেন, “এখনও পর্যন্ত পরিস্থিতি জটিল হলেও আগের থেকে উন্নতি হয়েছে।”
[আরও পড়ুন- মাদক-পানীয় খাইয়ে বিমান সেবিকাকে লাগাতার ধর্ষণ, অভিযুক্ত দুই পাইলট]
অন্যদিকে, এই ঘূর্ণিঝড়ের ফলে শনিবার পর্যন্ত জিম্বাবোয়েতে মারা গেছেন ২৫৯ জন। ঘূর্ণিঝড়ের পরে হওয়া বৃষ্টির জেরে মালাউইয়ে মৃত্যু হয়েছে ৫৬ জনের। ইদাইয়ের জেরে বিপর্যস্ত এই তিনটি দেশের সরকারের উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা বর্তমানে ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে ক্ষতিগ্রস্থদের বাইরে বের করে আনার পাশাপাশি তাঁদের জন্য আশ্রয়, খাদ্য ও জলের ব্যবস্থা করেছেন। ইদাইয়ের কোপে গৃহহীন হয়ে মোজাম্বিকের বেইরা শহরের একটি প্রাইমারি স্কুলের অস্থায়ী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন চার সন্তানের মা ২৬ বছরের মিমি ম্যানুয়েল। এপ্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমাদের সমস্ত খাবার ভিজে গেছে। সন্তানদের নিয়ে কোথায় যাব তাও বুঝতে পারছি না। আমাদের কাছে আর কিছুই নেই।” ওই অস্থায়ী শিবিরে আশ্রয় নেওয়া সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকা পারিয়া নোভার বাসিন্দা ১৮ বছরের যুবতী দিনা ফিয়েগাদো বলেন,”বিপর্যয়ের শুরুতে অনেকেই ভয়ে পালাচ্ছিল। কেউ কেউ ঘরেই থাকার চেষ্টা করছিল।”
মোজাম্বিকের এক মন্ত্রী জানান, এখনও প্রায় ১৫০০ জন মানুষকে বাড়ির ছাদ ও গাছের উপর থেকে নামাতে হবে। এর জন্য হেলিকপ্টার ও বোট নামিয়ে উদ্ধার কাজ চালানো হচ্ছে। পরিস্থিতি খারাপ হলেও আগের থেকে উন্নতি হচ্ছে। তিনি একথা বললেও বিপদ আরও বাড়বে বলে সর্তক করা হয়েছে রাষ্ট্রসংঘের হিউম্যানেটরিয়ান অফিসের তরফে। এপ্রসঙ্গে ওই সংস্থার এক মুখপাত্র জানান, বৃষ্টির ফলে বেইরা সংলগ্ন দুটি নদীতে বিপদসীমার উপর দিয়ে জল বইছে। এর ফলে ফের বন্যার কবলে পড়তে পারে নিচু এলাকার বাসিন্দারা। রাষ্ট্রসংঘের তরফে পুরো পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে। মোজাম্বিক-সহ তিনটি দেশের সরকার চাইলে সবরকম সাহায্য করা হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.