সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়ইপ এরদোগান (Recep Tayyip Erdogan) -কে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেশে অভ্যুত্থান ঘটানোর চেষ্টা করেছিল। সেই ঘটনায় জড়িত থাকার জেরে একসঙ্গে ৩৩৭ জন দোষী সাব্যস্তকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দিল তুরস্কের একটি আদালত। সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে বেশিরভাগই প্রাক্তন পাইলট। এছাড়াও ৬০ জনকে জেল ও ৭৫ জনকে বেকসুর খালাস করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৬ সালের ১৫ জুলাই তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারা (Ankara) সংলগ্ন একটি বিমানঘাঁটি থেকে প্রথমে সেনা অভ্যুথানের চেষ্টা হয়। যুদ্ধবিমান, হেলিকপ্টার ও ট্যাংক নিয়ে তুরস্কের সেনার সদর দপ্তরে হামলা চালায়। সরকারি নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে প্রবল সংঘর্ষের জেরে ২৭০ জনের মানুষের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে ১০০-এর বেশি বিদ্রোহীও ছিল। পরে সরকারি নিরাপত্তারক্ষী ও তুরস্ক সেনার তৎপরতায় ব্যর্থ হয় বিদ্রোহীদের সব চেষ্টা।
পরে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আমেরিকার মদতপুষ্ট তুরস্কের ব্যবসায়ী ও মুসলিম ধর্মপ্রচারক ফেথুল্লাহ গুলেনের প্রায় তিন লক্ষ সমর্থককে গ্রেপ্তার করা হয়। যার মধ্যে প্রায় এক লক্ষ এখনও বিচারধীন অবস্থায় জেল খাটছে। অন্যদিকে প্রায় চার বছর ধরে অভ্যুত্থানের মূল মামলায় আসামি ছিল ৪৭৫ জন। যার মধ্যে ৩৬৫ জনকে ওই ঘটনার পর গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠানো হয়েছিল। বৃহস্পতিবার সেই মামলার রায় দিতে গিয়ে প্রাক্তন পাইলট-সহ ৩৩৭ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তুরস্কের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, অভ্যুত্থানের দিন মোট ২৫১ জনের মৃত্যু হয়েছিল। জখম হয়েছিল প্রায় ২ হাজার। এই ঘটনার পর দেড়লক্ষ সরকারি কর্মী ও ২০ হাজার সেনাকে চাকরি থেকে বহিষ্কৃত করা হয়। আর এখনও পর্যন্ত আড়াই হাজারের বেশি মানুষকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে বৃহস্পতিবারের ঘটনাটি ব্যতিক্রমী। কারণ বিশ্বের ইতিহাসে একসঙ্গে একটি কোর্ট রুমের মধ্যে এতজন যাবজ্জীবন দেওয়ার ঘটনা বিরল। এর জন্য তুরস্কের সবচেয় বড় আদালত কক্ষে রায় দানের ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.