সুকুমার সরকার, ঢাকা: রাখাইন প্রদেশে সংঘাতের জেরে অন্তত ৩ লক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থী প্রবেশ করেছে বাংলাদেশে। রাষ্ট্রসংঘের এক রিপোর্টে উঠে এসেছে এমনই উদ্বেগজনক তথ্য। ইতিমধ্যে শরণার্থীদের চাপে চরম বিপাকে পড়েছে ঢাকা। সীমান্ত পেরিয়ে রোজই হাজার হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী প্রবেশ করছে বাংলাদেশে। ভিটেমাটি খুইয়ে আসা ওই জনস্রোতকে সামাল দিতে কার্যত হিমশিম খাচ্ছে বাংলাদেশ।
[রোহিঙ্গা সমস্যায় রক্তাক্ত মায়ানমারের পাশেই ভারত, আশ্বাস মোদির]
গত কয়েকদিন ধরেই সরকারি বাহিনীর সঙ্গে তুমুল সংঘর্ষ চলছে রোহিঙ্গা বিচ্ছিন্নতাবাদীদের। ওই সংঘাতে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৪০০ জন বিদ্রোহীর ও ১২ জন নিরাপত্তারক্ষীর। আগস্ট মাসের ২৪ তারিখ রাখাইন প্রদেশে পুলিশ ও সেনার ক্যাম্পে হামলা চালায় রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা। ওই হামলায় মৃত্যু হয় ৭ জন নিরাপত্তারক্ষীর। তারপরই ‘রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি'(এআরএসএ) নামের জঙ্গি সংগঠনটির বিরুদ্ধে অভিযানে নামে সরকারি বাহিনী। শুরু হয় প্রবল সংঘর্ষ। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের দাবি, সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের গণহত্যায় লিপ্ত হয়েছে মায়ানমার সেনা। নির্বিচার হত্যা ও ধর্ষণের শিকার হচ্ছে রোহিঙ্গারা। তবে শুধু সেনাবাহিনীই নয়, মানবাধিকার লঙ্ঘনে অভিযুক্ত বিদ্রোহীরাও। দেশটির সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের উপর হামলা চালানোর অভিযোগ রয়েছে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে।
উল্লেখ্য, শরণার্থীদের চাপে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও। তাই এবার মায়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে উদ্যোগী হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইতিমধ্যে রাষ্ট্রসংঘের হস্তক্ষেপের দাবি তুলেছেন তিনি। পরিসংখ্যান মতে গত কয়েক দশকে মায়ানমার থেকে প্রায় ৫ লক্ষ রোহিঙ্গারা অবৈধভাবে বাংলাদেশে এসে বসবাস করছে। জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও বড়সড় চ্যালেঞ্জ রোহিঙ্গারা। জঙ্গি সংগঠনগুলির সঙ্গে যোগসাজশ রয়েছে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের একাংশের, এমনটাই জানিয়েছেন গোয়েন্দারা।
শুধু বাংলাদেশই নয়, রোহিঙ্গা শরণার্থীরা আশ্রয় নিয়েছে ভারতেও। প্রায় ৪০ হাজার রোহিঙ্গারা অবৈধভাবে বাস করছে জম্মু-সহ ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে। বুধবার, রোহিঙ্গা ইস্যুতে মায়ানমারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ করা রোহিঙ্গাদের বিতারিত করা হবে বলে জানিয়েছে দিল্লি।
[রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে নারাজ বাংলাদেশ, রাষ্ট্রসংঘে আবেদন হাসিনার]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.