সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নাম আশা৷ কিন্তু মানুষের ক্রূঢ়তা তাকে ভেঙে দিয়েছে৷ লাগাতার ৭৪টি গুলিতে ইন্দোনেশিয়ার ওরাংওটাং আশার চোখ অন্ধ হয়ে গিয়েছে৷ জঙ্গলে চোরাকারবারিদের দাপটে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে তার এক মাসের বাচ্চা৷ এমনই চমকে দেওয়া ঘটনা ইন্দোনেশিয়ার আচে প্রদেশের৷ সপ্তাহখানেক আগেকার ঘটনা৷ নিজেদের মধ্যে গুলির লড়াই করতে করতে জঙ্গলে ঢুকে পড়ে একদল দুষ্কৃতী৷ যেটা ওরাংওটাংদের অঞ্চল৷ সেখানেই থাকত ‘হোপ’ নামে একটি ওরাংওটাং, এবং তার শিশু সন্তান৷ দুষ্কৃতীদের গুলির মধ্যেই আহত হয় হোপ৷ একটা, দুটো নয়৷ একে একে তার গায়ে লাগে ৭৪টি ছররা গুলি৷ সঙ্গেই ছিল কোলের বাচ্চা৷ আঘাত লাগে তারও৷ এরপর ধীরে ধীরে নেতিয়ে পড়তে থাকে হোপ এবং তার সন্তান৷
পরেরদিন জঙ্গলে রুটিন তল্লাশি চালাতে গিয়ে বনকর্মীরা দুই ওরাংওটাংকে ওই অবস্থায় দেখতে পান৷ সঙ্গে সঙ্গে উত্তর সুমাত্রার পশু পুনর্বাসন কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়৷ তবে শেষরক্ষা হয়নি৷ শরীরে অত আঘাত, তীব্র গরম, জল নেই, খাবার নেই – সবমিলিয়ে চরম দুর্দশার মধ্যেই তাদের এহেন পরিস্থিতি বলে অনুমান বনকর্মীদের৷ মাত্র এক মাসের বাচ্চাটি কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যায়৷ আর মা হোপের চিকিৎসা শুরু হয়৷ এক সপ্তাহ পর হোপের এক্স রে রিপোর্ট দেখে চিকিৎসকদের চক্ষুচড়কগাছ৷ বা চোখে ৪টি এবং ডান চোখের ভিতরে ২টি ছররা গুলি ঢুকে রয়েছে৷ যার ফলে মা ওরাংওটাংয়ের ডান চোখটি একেবারে অন্ধ হয়ে গিয়েছে৷ দৃষ্টি ফেরাতে অস্ত্রপচারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তবে তা সফল হবে কি না, তা নিয়ে সন্দিহান চিকিৎসকরা৷ তবু ওরাংওটাংয়ের একটি চোখের দৃষ্টি ফিরিয়ে দিতে তাঁদের চেষ্টার অন্ত নেই৷
এমনিতে ইন্দোনেশিয়ার বিস্তীর্ণ বনাঞ্চলে মূলত ওরাংওটাংদের দখলে৷ তা সত্বেও তাদের জন্য খুব একটা নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে আর থাকছে না এই দেশ৷ জঙ্গল কেটে ফেলা ছাড়াও চোরাশিকারিদের এমন দাপটে ক্রমেই কমছে ওরাংওটাংদের সংখ্যা৷ তার উপর হোপ এবং তার সন্তানের এই পরিণতি উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলছে পশুপ্রেমীদের৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.