সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মার্কিন পৌরহিত্যে মিটছে আরব-ইহুদি সংঘাত। এবার ইজরায়েলকে স্বীকৃতি দিল আরব দুনিয়ার অন্যতম ধনী রাষ্ট্র বাহরাইন। মাত্র মাসখানেকের মধ্যেই ইজরায়েলের সঙ্গে দু’টি আরব দেশের সমঝোতা করিয়ে রীতিমতো বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই কূটনৈতিক সাফল্যে আমেরিকায় আসন্ন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ট্রাম্প কিছুটা সুবিধা পাবেন বলেই মনে করা হচ্ছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ইজরায়েলের জন্মলগ্ন থেকেই ইহুদি দেশটিকে পৃথিবীর মানচিত্র থেকে মুছে ফেলতে বদ্ধপরিকর আরব দুনিয়া। বিগত কয়েক দশকে ইজরায়েলের সঙ্গে তিনটি যুদ্ধও হয়েছে আরব দেশগুলির সংযুক্ত বাহিনীর। তবে প্রতিবারই ইহুদি দেশটির কাছে কাছে পরাজয় স্বীকার করে গাজা, ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক, সিনাই অঞ্চল হাতছাড়া হয় আরব দেশগুলির। যদিও সে সব লড়াইয়ে সংযুক্ত অমিরশাহীর মতোই সরাসরি অংশগ্রহণ করেনি বাহরাইন। কিন্তু পৃথক প্যালেস্টাইন গড়ার সমর্থনে এতদিন ইজরায়েলকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি দ্বীপরাষ্ট্রটি। এবার পরিস্থিতি পালটেছে। আমেরিকার হস্তক্ষেপে ইজরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে রাজি হয়েছে বাহরাইন। শুক্রবার একটি টুইট করে এই চুক্তির কথা ঘোষণা করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এর ফলে দু’দেশের মধ্যে যাতায়াত, বাণিজ্য তথা কূটনৈতিক ক্ষেত্রে সম্পর্ক স্থাপনে আর কোনও বাধা রইল না।
প্রসঙ্গত, মিশর, জর্ডন ও সংযুক্ত আরব অমিরশাহীর পর চতুর্থ দেশ হিসেবে ইজরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করল বাহরাইন। বিশ্লেষকদের মতে, এই শান্তি প্রক্রিয়ায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ভূমিকা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, তবে এর নেপথ্যে অনেকটাই কাজ করছে বাহরাইনের ইরান ভীতি। মূলত শিয়া অধ্যুষিত ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্র বাহরাইনের শাসনভার রয়েছে সুন্নি সম্প্রদায়ভুক্ত আল খলিফা রাজপরিবারের হাতে। ১৭৮৩ সাল থেকেই বাহরাইন শাসন করে আসছে এই পরিবার। রাজপরিবারের বিরুদ্ধে শিয়া সম্প্রদায়ের অভিযোগ, তাদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে গণ্য করা হয়। এর ফলে সে দেশে জন্ম নিয়ে শিয়া সন্ত্রাসবাদী সংগঠনও। ওই বিচ্ছিন্নতবাদীদের হাতিয়ার যোগাচ্ছে ইরান বলে বহুবার অভিযোগ করেছেন বাহরাইনের রাজা হামাদ বিন ঈসা আল খলিফা। তাই অনেকটাই ইরানের প্রতি রাগ থেকেও ইজরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করতে চলেছে বাহরাইন।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি আরব দুনিয়ায় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়ে মার্কিন পৌরহিত্যে ঐতিহাসিক শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর করল ইজরায়েল ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহী। আর একযোগে ইরানকে ঠেকাতেই এই পদক্ষেপ।এটি ইজরায়েলের সঙ্গে তৃতীয় কোনও আরব রাষ্ট্রের শান্তি চুক্তি। এর আগে মিশর ১৯৭৯ সালে এবং জর্ডন ১৯৯৪ সালে ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তি চুক্তি করে। নয়া চুক্তি মোতাবেক, ইজরায়েলকে (Israel) একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে সংযুক্ত আরব আমিরশাহী। প্রতিদানে প্যালেস্তাইনের ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক এলাকা অধিগ্রহণ করার পরিকল্পনা বাতিল করবে ইহুদি দেশটি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.