সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘লিটল বয়’ ও ‘ফ্যাট ম্যান’-এর আঘাতে মুহূর্তে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল হিরোশিমা ও নাগাসাকি। পরমাণু বোমার আঘাতে কেঁপে উঠেছিল গোটা বিশ্ব। তবুও শিক্ষা নেয়নি মানুষ। থামেনি আরও মারাত্মক অস্ত্রের নির্মাণ। ক্রমে মানুষের হাতে এসেছে ‘হাইড্রোজেন বোমা’। এবার ওই বোমার পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পারমাণবিক যুদ্ধের পথ প্রশস্ত করছে কিম জং উনের নেতৃত্বাধীন উত্তর কোরিয়া। তবে কি আমেরিকা-উত্তর কোরিয়ার মধ্যে সংঘাতই কি ডেকে আনবে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ? আশঙ্কা, প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের।
[উত্তর কোরিয়াকে সবক শেখাতে অভিযানের ইঙ্গিত ট্রাম্পের]
তাঁরা জানাচ্ছেন, পিয়ংইয়ংয়ের শক্তিশালী হাইড্রোজেন বোমা পরীক্ষার জেরে পরমাণু যুদ্ধের আশঙ্কা আরও ঘনীভূত হচ্ছে। এর ফলে, কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা আরও বেড়েছে। এ ক্ষেত্রে উত্তর কোরিয়া যাই দাবি করুক না কেন, তারা যে পরমাণু অস্ত্রের গবেষণায় দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে, সেই বিষয়ে একমত আন্তর্জাতিক মহল। বিশেষজ্ঞদের দাবি, এবার আমেরিকা হামলা চালালে, কিমের সমর্থনে এগিয়ে আসতে পারে রাশিয়া ও চিন। ফলে শুরু হতে পারে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ। উল্লেখ্য, উত্তর কোরিয়া ষষ্ঠ পরমাণু পরীক্ষা চালায় রবিবার। এ বার অনেক গুণ বেশি শক্তিশালী ও বিধ্বংসী হাইড্রোজেন বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে পিয়ংইয়ং।
কিমের হাইড্রোজেন বোমার দাবি নিয়ে সন্দেহ থাকলেও পরীক্ষার জেরে জোরালো ভূমিকম্প অনুভূত হয় ওই অঞ্চলে। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬.৩। গত বছরের সেপ্টেম্বরে পঞ্চম পরমাণু বোমার পরীক্ষার পর রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫.৩। ফলে, এবার নিজেদের শক্তি আরও বাড়াতে উত্তর কোরিয়া সক্ষম হয়েছে বলেই মত আন্তর্জাতিক মহলের। উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদমাধ্যমের দাবি, এই বোমার শক্তি আগের থেকে অনেক বেশি।
[গোপন মার্কিন সেনাঘাঁটিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলে ভিনগ্রহের জীব নিয়ে!]
কিমের আস্ফালনের বিরুদ্ধে আরও আগ্রাসী হয়েছে আমেরিকাও। আর তাতেই চটেছে চিন। ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় বসার পর থেকেই উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে সুর চড়াতে শুরু করেন। কিমের দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার জল্পনায় ঘি ঢেলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সব থেকে আধুনিক শক্তিশালী হাইড্রোজেন বোমার পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণ রবিবারই ঘটিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উন। তারপরেই সুর চড়াতে শুরু করেন ট্রাম্প। টুইটারে তিনি লিখেছিলেন, “এদের কাজ এবং কথাবার্তা আমেরিকার জন্য ক্রমশ আক্রমণাত্মক এবং ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে।” এর পরেই সেনা কর্তাদের সঙ্গে একপ্রস্থ বৈঠকও সারেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ নিয়ে আমেরিকা যে চূড়ান্ত ভাবনাচিন্তা করছে, সেটাও হাবেভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন।
যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্টের মন্তব্যের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বিদেশসচিব টিলারসন বলেন, “উত্তর কোরিয়া যদি আমেরিকার নিরাপত্তার ক্ষেত্রে আশঙ্কা তৈরি করে তা হলে চরম পদক্ষেপ করা হতেই পারে।” কিমকে বাগে আনতে চেয়ে আলোচনা ব্যর্থ হলে যুদ্ধই যে শেষ বিকল্প, তাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন টিলারসন। তাঁর হুঁশিয়ারি, “উত্তর কোরিয়ার হামলার জবাব দিতে সেনা পিছপা হবে না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.