সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উত্তর কোরিয়ার (North Korea) কমিউনিস্ট শাসক তথা বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ রাষ্ট্রপ্রধান কিম জং উন (Kim Jong Un)প্রয়াত হয়েছেন। এই খবর সম্প্রচারিত হওয়ামাত্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে প্রশান্ত মহাসাগরের দুই পাড়েই। ভারতীয় সময় শনিবার দুপুরে এই খবর সম্প্রচার করে হংকং টিভি। কিমের মরদেহ একটি কাচের বাক্সে শায়িত রয়েছে এমন ছবিও সম্প্রচার করে তারা। সঙ্গে সঙ্গে তৎপরতা শুরু হয়ে যায় দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, চিনে। প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিম পাড়ে পূর্ব এশিয়ায় যখন সব দেশ নিজেদের মতো করে ঘুঁটি সাজাতে ব্যস্ত, তখন প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্ব পাড়ে মার্কিন মুলুকেও শুরু হয়ে যায় রাজনৈতিক তৎপরতা।
এপ্রিলে হৃদযন্ত্রে জটিল অস্ত্রোপচারের পর দীর্ঘদিন ধরেই গুরুতর অসুস্থ ছিলেন একনায়ক কিম জং। কৃত্রিম শ্বাসযন্ত্র, কড়া ডোজের ওষুধের সাহায্যে তাঁকে সুস্থ করে তোলার মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছিলেন এক দল চিকিৎসক। ৪৮ ঘণ্টা আগেই চিন জানিয়েছিল, তাঁরা কিমের চিকিৎসার জন্য দ্রুত মেডিক্যাল টিম পাঠাচ্ছে। সেই টিম উত্তর কোরিয়ায় পৌঁছে কাজ শুরুও করে দিয়েছিল। হংকং টিভির দাবি, শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হতে থাকে কিমের। তাঁর ফুসফুসে জল জমছিল। রক্তচাপে হেরফের হচ্ছিল। জ্বরও নামছিল না। কোনও ওষুধ কাজ করছিল না। শেষ পর্যন্ত ৩৭ বছর বয়সেই জীবনাবসান হল এই স্বৈরাচারী রাষ্ট্রপ্রধানের।
কিন্তু কিম কি সত্যিই মারা গিয়েছেন? কোটি টাকার এই প্রশ্নটা উসকে দিয়েছে কয়েকটি ঘটনা। কারণ কোনও দেশের সরকার, মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ, রুশ গুপ্তচর সংস্থা জিআরইউ এ ব্যাপারে নিশ্চিতভাবে কিছুই জানায়নি। কিম ও উত্তর কোরিয়া নিয়ে সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য খবর পরিবেশন করে থাকে দক্ষিণ কেরিয়ার ইওনহাপ নিউজ এজেন্সি এবং উত্তর কোরিয়ার কেসিএনএ। কিমকে নিয়ে একইরকম খবর পরিবেশন করে পিয়ইয়ং টাইমস এবং এনকে নিউজ। শনিবার রাত পর্যন্ত এই সংবাদ সংস্থাগুলির ওয়েবসাইট কিমের মৃত্যু বা শারীরিক অবস্থা নিয়ে একটুও উচ্চবাচ্য করেনি। কিন্তু দু’টি তথ্য এরা প্রকাশ করেছে। তা হল, বেজিং, মস্কোয় উত্তর কোরিয়ার দূতাবাসে কর্মীদের মধ্যে অদ্ভুত নীরবতা লক্ষ্য করা গিয়েছে গত দু’দিন ধরে। উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে চাপা উত্তেজনা ও আতঙ্ক রয়েছে সাধারণ জনমানসে।
উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলতা ও ডায়াবেটিসের পুরনো সমস্যায় দীর্ঘদিন ধরেই ভুগছিলেন কিম। ওজন বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছিলেন না। ঘন ঘন ধূমপান করতেন। সব মিলিয়েই বিগড়ে গিয়েছিল তাঁর হার্ট। ১২ এপ্রিল জরুরি ভিত্তিতে অস্ত্রোপচার হয়েছিল। কিন্তু তারপর থেকেই আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের একাংশের দাবি, কিমের পর উত্তর কোরিয়ার সর্বাধিনায়িকা হিসাবে তাঁর আসনে বসবেন সহোদর বোন কিম ইও জং। তিনি বরাবরই দাদা কিমের প্রতি অনুগত ও বিশ্বস্ত। সেনাবাহিনীতে ও কমিউনিস্ট পার্টিতে তাঁর প্রভাব বেশি। বোনকে নিজের বিকল্প হিসাবে পলিটব্যুরোয় ক্ষমতা দিয়ে ফিরিয়ে এনেছিলেন কিম।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.