সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি থেকে শুরু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, এরকম একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাঁদের ফোনালাপে উঠে আসে বাংলাদেশে থাকা হিন্দুদের প্রসঙ্গও। তাঁদের নিরাপত্তার বিষয়টি তুলে ধরেছিলেন নমো নিজে। নয়াদিল্লির বিবৃতিতেও এমনটাই জানানো হয়েছে। কিন্তু দুই রাষ্ট্রপ্রধানের আলোচনার পর আমেরিকার তরফে বাংলাদেশ নিয়ে কোনও কিছুর উল্লেখই করা হয়নি। বাংলাদেশকে সম্পূর্ণ এড়িয়ে গিয়েছে হোয়াট হাউস। যা নিয়ে শুরু হয়েছে জোর জল্পনা।
সদ্য পোল্যান্ড সফর সেরে দেশে ফিরেছেন মোদি। সোমবার আন্তর্জাতিক নানা ইস্যুতে বাইডেনের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। চলতি মাসেই বড় রাজনৈতিক পালাবদল ঘটেছে বাংলাদেশে। ব্যাপক গণ আন্দোলন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ। পদ্মা দিয়ে অনেক জল গড়িয়ে গিয়েছে। তার পর থেকে সেদেশে হিংসা, অত্যাচারের শিকার হয়েছেন হিন্দুরা। যা নিয়ে উদ্বিগ্ন ভারত। এদিন সেই হিন্দুদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে বাইডেনের সঙ্গে কথা বলার পর মোদি এক্স হ্যান্ডেলে জানান, ‘আমাদের মধ্যে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কথা হয়েছে। কীভাবে বাংলাদেশের পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হয় সেনিয়ে আলোচনা করেছি। সেখানে থাকা সংখ্য়ালঘু হিন্দুদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করা নিয়েও কথা হয়েছে।’ এর পরই বিবৃতি দেওয়া হয় বিদেশমন্ত্রকের তরফে। যেখানে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে বাংলাদেশের প্রসঙ্গের।
কিন্তু চর্চা শুরু হয়েছে হোয়াট হাউসের দেওয়া বিবৃতি নিয়ে। যেখানে বাংলাদেশের কোনও উল্লেখই করা হয়নি। পুরো বিবৃতিতে জোর দেওয়া হয়েছে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে। চলমান এই যুদ্ধ নিয়ে মোদি-বাইডেনের মধ্যে কী কথা হয়েছে বিস্তারিত জানানো হয়েছে সেনিয়েই। এর পরই বাংলাদেশের সম্পর্কে আমেরিকার এই অবহেলা বা উদাসীনতা নিয়েই আলোচনা শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক মহলে। যেখানে প্রধানমন্ত্রী মোদি নিজে জানিয়েছেন, দিল্লির বিবৃতিতে উল্লেখ রয়েছে সেখানে হোয়াট হাউস কীভাবে বাংলাদেশের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এড়িয়ে গেল? উঠছে প্রশ্ন।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, হাসিনার সঙ্গে আমেরিকার আদায়-কাঁচকলায় সম্পর্কের কথা বিশ্বের অজানা নয়। বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বহুবার অভিযোগ জানিয়েছিলেন যে, তাঁকে গদিচ্যুত করতে চায় আমেরিকা। চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচনের সময় গণতন্ত্র ও মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে ঢাকাকে তোপ দেগেছিল ওয়াশিংটন। এছাড়া সেন্ট মার্টিন দ্বীপে সেনাঘাঁটি তৈরির আবেদন জানিয়েছিল মার্কিন প্রশাসন। যা ফিরিয়ে দেন হাসিনা। তার পর থেকেই দুদেশের সম্পর্কের ফাটল চওড়া হয়। এই মুহূর্তে ভারতে রয়েছেন হাসিনা। তাঁর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সব কিছুই এখন আলোচনা তুঙ্গে দিল্লিতে। এই পরিস্থিতি সেদেশ নিয়ে মোদি-বাইডেন ফোনালাপ যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ ছিল। কিন্তু আমেরিকা যেভাবে এই প্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়েছে তাতে স্পষ্ট বাংলাদেশ নিয়ে এখন তাদের কোনও মাথাব্যথা নেই। তাদের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ইউক্রেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.