সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নির্জন কারাবাস, দিনের পর দিন সূর্যের মুখ না দেখা, খাবার দাবারেও নেই পুষ্টির ছোঁয়া- এভাবেই দিন কেটেছে হামাসের পণবন্দিদের। মুক্তির পরে তাঁদের সকলেরই ওজন কমে গিয়েছে উল্লেখযোগ্য ভাবে। যদিও ঠিক কী ধরনের অভিজ্ঞতা হয়েছে তাঁদের, তা নিয়ে এখনও পর্যন্ত মুক্তিপ্রাপ্তদের কেউই মুখ খোলেননি। কিন্তু তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে গিয়েই শিউরে উঠছেন চিকিৎসকরা। সংবাদ সংস্থা এএফপি সূত্রে এমনটাই জানা যাচ্ছে।
এখনও পর্যন্ত মুক্তি পেয়েছেন ৫০-এরও বেশি ইজরায়েলি (Israel) পণবন্দি। তাঁদের মধ্যে মহিলাদের পাশাপাশি রয়েছে বহু শিশুও। পাশাপাশি মুক্তি দেওয়া হয়েছে বহু বিদেশিকেও। এর মধ্যে অন্তত ১৭ জন থাইল্যান্ডের নাগরিক। সকলকেই হাসপাতালে চেকআপ করা হয়েছে। কিন্তু মুক্তিপ্রাপ্তরা কিংবা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, কেউই সেভাবে মুখ খোলেননি তাঁদের অভিজ্ঞতার বিষয়ে। কিন্তু সরাসরি কিছু বলা না হলেও ধীরে ধীরে ছড়াতে শুরু করেছে পণবন্দি থাকা মানুষদের দুঃসহ অভিজ্ঞতার কথা। বিশেষ করে তাঁদের আত্মীয়স্বজনদের মুখ থেকে। অথবা দু-এক চিকিৎসকের কথায় ধরা পড়েছে ছবিটা।
শামির মেডিক্যাল সেন্টারে চিকিৎসা হয়েছিল ১৭ থাই নাগরিকের। সেখানকার মেডিক্যাল টিমের প্রধান রনিত জাইদেনস্টাইন জানিয়েছেন, তিনি যাঁদের দেখেছেন, সকলকেই অত্যন্ত অপুষ্টিকর খাবার দেওয়া হয়েছিল বন্দিদশায়। তাঁর কথায়, ”সকলেই উল্লেখযোগ্য ভাবে ওজন হারিয়েছেন। তাও এত অল্প সময়ের মধ্যে! ১০ শতাংশ কিংবা তারও বেশি ওজন কমেছে তাঁদের।” আর এক চিকিৎসক মার্গারিটা মাশাভি, যিনি উলফসন মেডিক্যাল সেন্টারে কর্মরত, তিনি জানিয়েছেন, ”ওঁদের আলোর সামনে যেতেই দেওয়া হয়নি। সারা দিনে বড়জোর ঘণ্টা দুয়েক…”
পণবন্দিরা জানিয়েছেন, ভাত, নোনতা চিজ, ক্যানবন্দি হামুস ফাভা বিনস (এক ধরনের শুকনো বীজ) খেতে দেওয়া হয়েছে তাঁদের। কিন্তু ফলমূল, সবজি কিংবা ডিম নয়। এও জানা যাচ্ছে, সময় কাটাতে কাগজ-কলম কিংবা পেনসিল চাইলেও সেকথা শোনেনি হামাস (Hamas) জঙ্গিরা। আসলে তাদের ভয় ছিল, এভাবে কোনও তথ্য পাচার করা হতে পারে। সুতরাং টিভি ও পড়াশোনা ছাড়াই থাকতে হয়েছে পণবন্দিদের। সময় কাটানোর একমাত্র উপায় ছিল একে অপরের সঙ্গে কথা বলা।
কিন্তু সকলের সেই সুযোগও ছিল না। যেমন ১২ বছরের ফরাসি-ইজরায়েলি বালক এইটান ইয়াহালোমি। সোমবার মুক্তি পাওয়ার পরে সেই ছোট্ট ছেলেটি জানিয়েছে, তাকে একটা ঘরে একলা রেখে দেওয়া হয়েছিল ১৬ দিন। ছেলেটির ঠাকুমা জানিয়েছেন, তাঁর নাতির কানেরও খুব ক্ষতি হয়েছে লাগাতার বোমার আওয়াজে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.