সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাত্র ৯ বছর বয়সে মরে যেতে চেয়েছিল খুদে। তার কান্নায় ভাইরাল হওয়া ভিডিও দেখে চোখে জল এসেছিল নেটদুনিয়ার। বামনত্বের শিকার হওয়া অজি খুদে কাদেনই এখন নেটদুনিয়ার তারকা। মানসিক অবসাদ ভোলার জন্য ডিজনিল্যান্ডে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তবে তা সত্ত্বেও তাতে রাজি হলেন না কাদেনের মা। পরিবর্তে তাঁর ছেলের জন্য ক্রাউড ফান্ডিংয়ে ওঠা অর্থ দান করার ভাবনা খুদের মায়ের।
অস্ট্রেলিয়ার বছর নয়েকের শিশু কাদেনের জন্ম থেকেই শারীরিক সমস্যা রয়েছে। বয়সের তুলনায় তার উচ্চতায় অনেকটাই কম। বামন বলেই সে স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় অভ্যস্ত হতে পারে না। শিশুটি অস্ট্রেলিয়ার এক স্কুলেই পড়ে। তার মায়ের অভিযোগ, স্কুলে তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে সহপাঠীরা। কখনও তাকে মারধর করা হয়। আবার কখনও বিদ্রুপ মিশ্রিত নানা নামে ডাকা হয়। দিনের পর দিন তা সহ্য করতে পারে না বছর নয়েকের ওই স্কুলপড়ুয়া। একদিন ছুটির সময় স্কুল থেকে সন্তানকে নিতে গিয়ে অমানবিক ঘটনার সাক্ষী হতে হয় ওই শিশুর মাকে। তিনি দেখেন, এক সহপাঠী প্রথমে তাঁর সন্তানকে মাথায় চাঁটি মারে। তারপর মশকরা করে তার দেওয়া নানা নামে ডাকতে শুরু করে। তা শুনে অঝোরে কাঁদতে শুরু করে তাঁর সন্তান। তবে সহপাঠীকে কাঁদতে দেখেও কোনও ভ্রূক্ষেপ নেই মশকরা করতে থাকা স্কুলপড়ুয়ার। সে দিব্যি হাসতে হাসতে চলে যায়।
যন্ত্রণা চেপে নিজের ছেলেকে গাড়িতে তুলে নেন ওই মহিলা। ছেলে তখনও কেঁদেই চলেছে। গাড়িতে বসেও মুখে তার একটাই কথা, “আমাকে একটা দড়ি দাও। আমি নিজেকে মেরে ফেলতে চাই।” মানসিকভাবে বিধ্বস্ত ছেলেকে দেখে নিজেকে সামলাতে পারেননি ওই মহিলা। তিনিও অঝোরে কাঁদতে শুরু করেন। ছেলের কান্নার ভিডিও করেন তিনি। প্রতিদিন একটু একটু করে ছেলের ভেঙে পড়ার কাহিনি ভিডিওর মাধ্যমে সকলের সামনে তুলে ধরেন তিনি। কারও চেহারাগত ত্রুটি নিয়ে মশকরা করা যে কতটা ভয়ংকর, তা বোঝানোর চেষ্টা করেন ওই মহিলা। উপযুক্ত শিক্ষার মাধ্যমে স্কুলপড়ুয়াদের মশকরা করার প্রবণতায় রাশ টানা প্রয়োজন বলেও জানান তিনি।
ওই ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। হিউ জ্যাকম্যান সহ হলিউড তারকারা খুদের পাশে দাঁড়ান। কাদেনকে ডিজনিল্যান্ডে পাঠানোর জন্য হলিউডের কৌতুক অভিনেতা ব্র্যাড উইলিয়ামস ক্রাউড ফান্ডিংয়ের ব্যবস্থা করেন। ৪ লক্ষ ৭৫ হাজার মার্কিন ডলার জোগাড় হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। তবে ‘অপমানের’ পর আর ডিজনিল্যান্ডে কাদেনকে নিয়ে যেতে চান না তাঁর মা। পরিবর্তে ওই টাকা দিয়ে কাদেনের মতোই অসুস্থ শিশুদের পাশে দাঁড়াতে চান তাঁরা। যাতে যথোপযুক্ত চিকিৎসা পেয়ে অসুস্থরা সেরে উঠতে পারে, তাই লক্ষ্য কাদেনের মায়ের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.