সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যাবজ্জীবন জেলের সাজা দেওয়া হল ক্রাইস্টচার্চ গণহত্যায় দোষী ব্রেন্টন টারান্টকে। শুধু তাই নয়, ওই শ্বেতাঙ্গ বন্দুকবাজকে প্যারোল না দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছে আদালত। অর্থাৎ জীবনের বাকি দিনগুলি তাকে কারাগারেই কাটাতে হবে। শান্তিপ্রিয় দেশটির ইতিহাসে এই প্রথম কাউকে এমন সাজা দেওয়া হল।
বৃহস্পতিবার, সাজা ঘোষণার পর হাই কোর্টের বিচারপতি ক্যামেরন মান্ডের মত প্রকাশ করেন যে এহেন অপরাধের জন্য নির্দিষ্ট সময়ের জেলের সাজা যথেষ্ট নয়। কারণ অপরাধের জন্য কোনও অনুশোচনা নেই দোষীর মনে। তিনি বলেন, “তোমার অপরাধ এতটাই ঘৃণ্য যে মৃত্যু পর্যন্ত তোমাকে জেলে আটকে রাখলেও সেই সাজা কম বলেই মনে হব। আমার যতটুকু মনে হচ্ছে, তাতে নিহতদের প্রতি এখনও তোমার কোনও সহানুভূতি তৈরি হয়নি। একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের প্রতি তোমার মনে যে ঘৃণা রয়েছে এবং তার বশবর্তী হয়ে তুমি এখানে যে হত্যালীলা চালিয়েছ, এহেন কাজের জন্য দুনিয়ায় কোথাও জায়গা নেই।”
হামলার এক ভুক্তভোগী ক্রাইস্টচার্চের আল নূর মসজিদের ইমাম গামাল ফউদা বলেন, “দোষীকে শাস্তি দিলেও আমাদের প্রিয়জনেরা ফিরে আসবে না। কিন্তু সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যেভাবে এদেশের আইন ব্যবস্থা রুখে দাঁড়িয়েছে তাতে আমি গর্বিত। মুসলিম বা অমুসলিম এ দেশে সকলেই ওই জঘন্য ঘটনার একসঙ্গে প্রতিবাদ জানিয়েছে। আমরা বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছি যে ধর্মের নামেই হোক বা জাতীয়তাবাদের নামেই হোক, যে কোনও সন্ত্রাসী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে আমরা একসঙ্গে লড়াই করব।”
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ১৫ মার্চ, এক নারকীয় হত্যাকাণ্ডের সাক্ষী হয় নিউজিল্যান্ড। ওই দিনই শান্তিপ্রিয় দেশটির দু’টি মসজিদে হামলা চালায় এক শ্বেতাঙ্গ বন্দুকবাজ। বেশ কিছুদিন ধরে চলা মামলার শেষে দোষী সাব্যস্ত করা হয় ২৯ বছরের অস্ট্রেলিয়ান যুবক ব্রেন্টন টারান্টকে। ৫১ জনকে হত্যা ও ৪০ জনকে হত্যার চেষ্টা এবং সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয় সে। সোমবার, সেই কুখ্যাত ক্রাইস্টচার্চ গণহত্যায় অপরাধীর সাজা নির্ণয়ের জন্য শুনানি শুরু হয়। শুনানি চলাকালীন সরকারি আইনজীবী জানান, আল নূর মসজিদ এবং লিনউড ইসলামিক সেন্টারের ছাড়াও অ্যাশবার্টন মসজিদে হামলার পরিকল্পনা ছিল বন্দুকবাজের। তবে তৃতীয় মসজিদে যাবার পথে তাকে আটক করা হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.