সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতের সঙ্গে ক্রমেই সংঘাতের পথে হাঁটার ইঙ্গিত দিচ্ছে নেপাল (Nepal)। এমনকি দীর্ঘদিনের ‘বন্ধু’ ভারতের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে বিতর্কিত নতুন মানচিত্রও সংসদে পাশ করিয়েছে। তবে নিজেদের অজান্তেই তাদের একটু একটু করে গ্রাস করছে চিন। সেদিকে অবশ্য কোনও খেয়ালই নেই কাঠমান্ডুর (Kathmandu)। যত সমস্যা এখন ভারতের সঙ্গেই।
সংবাদসংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, মধ্য-পশ্চিম নেপালের গোর্খা জেলার একটি গ্রাম দীর্ঘ ছয় দশক ধরে চিনের দখলে রয়েছে৷ রুই গাঁও নামে ওই গ্রামটির প্রশাসনিক ভার আপাতত চিনের হাতেই৷ ওই গ্রামটিকে স্বশাসিত তিব্বত বা TAR (Tibet Autonomous Region)-এর অংশ হিসেবে অনেকেই দাবি করেন৷ জানা যায়, রুই গাঁও (Rui) নামে ওই গ্রামটিতে প্রায় পচাত্তরটি পরিবারের বাস৷ তবে কোনও যুদ্ধ নয়, দীর্ঘদিন ধরেই একটু একটু করে এই গ্রামটিকে নিজেদের করায়ত্তে নিয়েছে চিন। নেপালের মানচিত্রে ওই গ্রামটি খাতায় কলমে থাকলে আদপে গ্রামটির উপরে শাসন চলে চিনের। তবে সেই বিষয়ে কোনও মাথাব্যথাই নেই নেপাল প্রশাসনের। সবথেকে অবাক করা বিষয় হল নিজেদের দখল বজায় রাখতে গ্রামটিতে নিজেদের পিলারও দিয়ে রেখেছে। আর তাতেও মুখে কুলুপ এঁটেছে নেপাল সরকার।
স্থানীয় ভূমি রাজস্ব দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ওই গ্রামটি নেপালের মধ্যেই পড়ে৷ সেখানকার বাসিন্দারা যে নেপাল সরকারকেই কর জমা দিতেন, তার প্রমাণও মিলেছে দপ্তরের নথিতে৷ জানা যায়, ১৯৬০ সালে দুই দেশের সীমানা নির্ধারণ করার সময়ই এই কাণ্ড ঘটে৷ তখন নেপালের তরফে কোনও আপত্তিই জানানো হয়নি৷ যার ফলে ওই গ্রামটির দখল নিয়ে নেয় চিন৷ স্থানীয় চুমানবাড়ি গ্রামীণ পুরসভার ওয়ার্ড চেয়ারপার্সন বীর বাহাদুর লামা জানান, “সেই সময় ওই এলাকাটি তিব্বতের মধ্যে চলে যাওয়ায় রুই গাঁওয়ের অনেক বাসিন্দাই অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন৷ এক রাতের মধ্যেই বহু স্থানীয়রাই ওই গ্রাম ছেড়ে নেপাল সীমানার মধ্যে সামদো গ্রামে চলে আসেন৷ বর্তমানে রুই গাওয়ে একাধিক পিলার বসিয়ে নিজেদের দখলদারি চেকামপার পর্যন্ত বাড়িয়ে নিয়েছে চিন৷”
তবে গোটা বিষয়টি দেখেও চোখ বুজে রয়েছে নেপাল সরকার৷ গত বছর নেপালের পরিকাঠামো উন্নয়ন মন্ত্রী রামশরণ বাসনেট ওই এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন৷ চিনা আধিকারিক এবং সেনাদের সঙ্গে নিয়েই বিতর্কিত ৩৫ নম্বর পিলার সংলগ্ন এলাকা ঘুরে দেখেন তিনি৷ অন্যদিকে ভারতের তিনটি এলাকা নিজেদের বলে দাবি করলেও চিনের সীমান্তে নিজেদের গ্রামের দখল নিয়ে কার্যত চুপ নেপাল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.