সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সময় পালটেছে। বদলেছে বিশ্বমানচিত্র। ভলগা থেকে ব্রহ্মপুত্রে বয়ে গিয়েছে কত জল। কিন্তু আজও সেই প্রাচীন ধারণা আঁকড়ে রয়েছে রাষ্টসংঘ। আজও নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কার হয়নি। দুশো বছরের পরাধীনতার শিকল ছিঁড়ে মহাশক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলেও ঠাঁই হয়নি ভারতের। এই প্রেক্ষাপটেই রাষ্ট্রসংঘের মঞ্চে ‘নতুন’ নিরাপত্তা পরিষদের ছবি আঁকলেন ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি রুচিরা কম্বোজ।
মঙ্গলবার রাষ্ট্রসংঘে কম্বোজ বলেন, “আজ আমরা এমন একটা নিরাপত্তা পরিষদ চাই যেখানে ভৌগলিক ও উন্নয়ন বৈচিত্র থাকবে। নিরাপত্তা পরিষদ এমন হোক যেখানে আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকা ও এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলির আওয়াজও শোনা যাবে। এই টেবিলে জায়গা (নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী সদস্য পদ) ভারতের প্রাপ্য।” এদিন, নিরাপত্তা পরিষদে মুক্ত আলোচনা সভায় চিনকে একহাত নিয়ে তিনি আরও বলেন, “বিনাযুক্তিতে যখন আন্তর্জাতিক মঞ্চে ঘোষিত সন্ত্রাসবাদীদের তালিকাভুক্ত করার প্রক্রিয়ায় বাধা দেওয়া হয় তখন পরিষদের সন্ত্রাসবিরোধী লড়াই নিয়ে দ্বিচারিতা প্রকাশ হয়ে পড়ে।”
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, গত মে মাসে জইশ-ই-মহম্মদের জঙ্গি আবদুল রাউফ আজহারকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী হিসাবে ঘোষণা করতে চেয়ে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব দিয়েছিল ভারত। তাতে বাধা দেয় চিন। গত বছরের জুনে লস্কর প্রধান হাফিজ সইদের শ্যালক মক্কিকে নিষিদ্ধ করতে চেয়েছিল ভারত। কিন্তু চিনের বিরোধিতায় ভারতের সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায়। পরে লস্কর জঙ্গি শাহিদ মাহমুদের ক্ষেত্রেও একই ভাবে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল বেজিং। লাগাতার এই ধরনের ঘটনা থেকে পরিষ্কার, পাকিস্তানি জঙ্গিদের আড়াল করতে সবসময় সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছে চিন।
উল্লেখ্য, আধুনিক দুনিয়ায় সময়ের দাবি মেনে পরিষদে সংস্কারের পক্ষে বারবার সওয়াল করে এসেছে নয়াদিল্লি। ভারতের এই দাবিকে সমর্থন জানিয়েছিলেন রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভার সভাপতি সাবা করোসি। সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সাবা করোসি বলেছিলেন, “নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা মনে করে, পরিষদে আরও ভাল প্রতিনিধির প্রয়োজন রয়েছে। এমন দেশের প্রয়োজন রয়েছে যারা শান্তিস্থাপন ও মানুষের উন্নতির বৃহত্তর দায়িত্ব বহনে সক্ষম। ভারতও এমন একটি দেশ। সার্বিকভাবে বিশ্বের উন্নয়নের জন্য অবদান রাখতে পারে বলেই বিশ্বাস ভারতের।”
প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরেই পাঁচ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী সদস্য পদ পেতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ভারত। ইতিমধ্যে আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও রাশিয়া নয়াদিল্লির দাবিকে সমর্থন জানিয়েছে। কিন্তু বাদ সেধেছে চিন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.