সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের আমেরিকাকে প্রচ্ছন্ন হুমকি দিলেন কিম জং উন। পরমাণু নিরস্ত্রীকরণে রাজি হওয়া সত্ত্বেও আমেরিকা উত্তর কোরিয়ার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তোলেনি। এরকম চলতে থাকলে ‘অন্য পথ’ বেছে নিতে বাধ্য হবেন বলে জানালেন উত্তর কোরিয়ার সর্বাধিনায়ক কিম জং উন।
ইংরেজি নববর্ষ উদযাপনের অনুষ্ঠান উপলক্ষে মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে কিম জানান, আন্তর্জাতিক বোঝাপড়া মেনে উত্তর কোরিয়া পরমাণু নিরস্ত্রীকরণে রাজি হয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও উঠছে না মার্কিন নিষেধাজ্ঞা। এরকম চলতে থাকলে উত্তর কোরিয়ার আর্থিক সঙ্কট বাড়বে। নিজেদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করছে না মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এমন চললে ‘অন্য পথ’ বেছে নিতে বা ‘অন্যভাবে ভাবতে’ বাধ্য হবেন তিনি। এই ‘অন্য পথ’ বা ‘অন্যভাবে ভাবাটা’ কী সেটা খোলসা করে বলেননি তিনি।
উল্লেখ্য, বার বার সতর্ক করা সত্ত্বেও আন্তর্জাতিক হুঁশিয়ারি অগ্রাহ্য করে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে দেশটি। তার জেরে গত কয়েক বছরে একাধিক আর্থিক ও বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা চেপেছে উত্তর কোরিয়ার উপর। তবে গতবছর পরিস্থিতি কিছুটা শোধরায়। যখন নিজে থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাতের ইচ্ছে প্রকাশ করেন কিম জং উন। সেই মতো জুন মাসে সিঙ্গাপুরে দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে শীর্ষ বৈঠক হয়। তাতে উত্তর আমেরিকা যাবতীয় ক্ষেপণাস্ত্র ও পরমাণু কর্মসূচি বন্ধ করলে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার প্রতিশ্রুতি দেন ট্রাম্প। নিরস্ত্রীকরণে রাজি হয়ে যান কিমও।
তার পর কয়েক মাস কেটে গিয়েছে। গোপনে পিয়ংইয়ং পরমাণু অস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির কাজ জারি রেখেছে বলে একাধিক অভিযোগ উঠলেও, তাদের বেশ কিছু অস্ত্রভাণ্ডার ধ্বংসের খবরও সামনে এসেছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে। নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করতেও দেখা যায়নি তাদের। তবে নিষেধাজ্ঞা শিথিল হয়নি এখনও পর্যন্ত। তাতেই চটেছেন কিম। মঙ্গলবার দেশের সরকারি চ্যানেলে বক্তৃতা করার সময় বলেন, ‘‘গোটা দুনিয়ার সামনে দেওয়া প্রতিশ্রুতি যদি রক্ষা করতে না পারে আমেরিকা, একতরফাভাবে যদি দাবি-দাওয়া চাপিয়ে যেতে থাকে, নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখে এবং লাগাতার চাপসৃষ্টি করতে থাকে, তাহলে অন্য ভাবে দেশের স্বার্থ ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার পথ বেছে নেওয়া ছাড়া আর উপায় থাকবে না আমাদের।’’
রাজনৈতিক মহলের মতে, ২০১৯ সালের মধ্যে আমেরিকা নিষেধাজ্ঞা না তুললে ফের পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা শুরু করতে পারে কিম প্রশাসন। মার্কিন প্রশাসনের তরফে এখনও পর্যন্ত এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসে ট্রাম্প ও কিমের মধ্যে দ্বিতীয়বার বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা নিয়েও এখনও পর্যন্ত কিছু জানা যায়নি। তবে আমেরিকা নিষেধাজ্ঞা না তুললে কিমের সঙ্গে আমেরিকার চলতে থাকা মতবিরোধ থেকে ফের সংঘাতের সূত্রপাত হয়ে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.